মণিপুর উপত্যকায় বসবাসকারী মেইতেই জনগণের তফসিলি উপজাতি মর্যাদার দাবিতে আবেদন ২০১৩ সাল থেকে বারবার রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে জমা পড়েছে। কিন্তু, কোনও সরকার সেই দাবিতে কান দেয়নি। উপায় না-পেয়ে মেইতেই সম্প্রদায় মণিপুর হাইকোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকার যে বারেবারে মেইতেইদের দাবি উপেক্ষা করেছে, সেটা মণিপুর হাইকোর্টের নজর এড়ায়নি। সেই অনুযায়ী নির্দেশ দিয়েছিল হাইকোর্ট। আর, সেই নির্দেশই পাহাড়ের উপজাতি গোষ্ঠীগুলির মধ্যে বিক্ষোভের জন্ম দেয়।
সংখ্যাগরিষ্ঠ মেইতেই সম্প্রদায়
যা গত ৩ মে মণিপুরে জাতিগত হিংসা ডেকে আনে। গোটা পার্বত্য রাজ্যকে গভীর সংকটে ডুবিয়ে দেয়। মণিপুরে মেইতেই সম্প্রদায় সংখ্যাগরিষ্ঠ। তাঁর বৈষ্ণব ধর্মাবলম্বী। তাঁরা রাজ্যে বহিরাগতদের প্রবেশ সীমাবদ্ধ করা এবং তফসিলি উপজাতি মর্যাদা, দুটো দাবিই একইসঙ্গে তুলছিলেন। এর মধ্যে রাজ্যে বহিরাগতদের প্রবেশ নিষিদ্ধ করার দাবিটি ১৯৮০ সালে সংসদে তোলা হয়েছিল। সেই তুলনায়, তফসিলি উপজাতি মর্যাদার দাবিটি নতুন।
মেইতেইদের দাবি
মণিপুরের তফসিলি ট্রাইব ডিমান্ড কমিটি (STDCM) ২০১২ সালের নভেম্বরে প্রতিষ্ঠিত হয়েছিল। STDCM-এর সাধারণ সম্পাদক কিথেল্লাকপাম ভোগেন্দ্রজিৎ ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, 'আমরা কখনও আদালতে যাইনি। কারণ, আমরা বুঝতে পেরেছিলাম যে এটি সরকারের বিষয়। কিন্তু, আমাদের কিছু সহকর্মী অধৈর্য হয়ে আদালতে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নেন।' মেইতেই ট্রাইব ইউনিয়ন (এমটিইউ) গত বছর গঠিত হয়েছিল। এই ইউনিয়নই ২০২৩ সালের মার্চে হাইকোর্টে একটি রিট পিটিশন দাখিল করেছিল। সেই সময় মেইতেইদের জন্য এসটি মর্যাদার দাবিতে অসংখ্য স্মারকলিপি রাজ্য এবং কেন্দ্র, উভয় সরকারের কাছেই জমা পড়েছিল।
আরও পড়ুন- ওয়াগনারের বিদ্রোহে রাতারাতি ইতি, কী এমন ঘটল সেই রাতে?
কেন্দ্রীয় সরকারের প্রতিক্রিয়া
উপজাতি বিষয়ক মন্ত্রক ২০১৩ সালের ২৯ মে, মণিপুর সরকারকে চিঠি লিখে, এসটি তালিকায় মেইতেইসদের অন্তর্ভুক্তির ব্যাপারে একটি সুনির্দিষ্ট সুপারিশের অনুরোধ করে। সঙ্গে, সাম্প্রতিক আর্থ-সামাজিক সমীক্ষার তথ্য এবং সম্প্রদায়ের ওপর একটি নৃতাত্ত্বিক প্রতিবেদন প্রকাশ করে। এই নথিগুলো বা এসটি তালিকায় মেইতেইসদের অন্তর্ভুক্ত করার কোনও অনুরোধ ইম্ফলের কোনও সরকার কখনও কেন্দ্রের কাছে জমা দেয়নি। ২০১৩ সালের চিঠির পর থেকে, মণিপুর সরকারের কাছে প্রায় ৩০টি ভিন্ন প্রতিনিধিদল প্রতিনিধিত্ব করেছে। পাশাপাশি, দাবির সমর্থনে আরও ১০টি প্রতিনিধিদল ভারত সরকারের কাছে প্রতিনিধিত্ব করেছে। এমনটাই জানিয়েছেন STDCM-এর সাধারণ সম্পাদক কিথেল্লাকপাম ভোগেন্দ্রজিৎ।