The Bill passed by the house of the Parliament: হিজাব নিয়ে নানা আপত্তি তুলছিল বিভিন্ন মহল। এবার রীতিমতো আইন করে নিষিদ্ধ করে দেওয়া হল হিজাব। মুসলিম দুনিয়ায় হিজাব অন্যতম ধর্মীয় পোশাক। তাকেই আনুষ্ঠানিকভাবে নিষিদ্ধ করা হল।
সরকারের মনোভাব
তবে ভারতে নয়। এই নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে তাজিকিস্তানে। সেখানে প্রায় ৯০% জনসংখ্যা মুসলিম। যে বিল অনুযায়ী হিজাবে নিষেধাজ্ঞা জারি হয়েছে, তা গত ৮ মে তাজিকিস্তান সংসদের নিম্নকক্ষ (মজলিসি নমোয়ন্দগন)-এ পাস হয়েছিল। ইদ উদযাপনের পরে ১৯ জুন, পার্লামেন্টের উচ্চকক্ষ (মজলিসি মিলি) দ্বারাও সিদ্ধান্তটি অনুমোদিত হয়। এই পদক্ষেপের পর তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট ইমোমালি রহমান জানিয়েছেন, হিজাব 'বিদেশি পোশাক'। তাঁর এই মন্তব্যই প্রমাণ যে হিজাব সম্পর্কে তাজিকিস্তান সরকারের মনোভাব ঠিক কী ছিল!
নতুন আইনে কী বলা আছে?
নতুন আইন বর্তমান 'অন রেগুলেশন অব হলিডেস অ্যান্ড সেরিমোনি' আইন সংশোধন করেছে। সঙ্গে, 'জাতীয় সংস্কৃতির জন্য বিদেশি বলে মনে করা পোশাক আমদানি, বিক্রি, প্রচার এবং পরিধান' নিষিদ্ধ করেছে। তাজিকিস্তান সরকারের এই মনোভাব পরিবর্তনের প্রতীকই হল হিজাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি। যা মুসলিম মহিলারা ইসলামের সঙ্গে সম্পর্কিত পোশাক হিসেবে এতদিন ধরে পরিধান করে আসছিলেন। তাজিকিস্তানের রেডিও লিবার্টি অনুযায়ী, এই আইন না মানলে অপরাধীদের ৭,৯১০ সোমোনি ($৭৪৭) থেকে ৩৯,৫০০ সোমোনিস ($৩,৭২৪) পর্যন্ত জরিমানা করা হতে পারে। নতুন আইনে ইদি, ইদ, নওরোজের সময় শিশুদের অর্থ উপহার দেওয়া- ইদ-উল-ফিতর, ইদ-আল-আধাকে ঘিরে চালু থাকা উত্সবগুলো নিষিদ্ধ করা হয়েছে।
হিজাব 'বিদেশি' পোশাক
কেন হিজাবকে 'বিদেশি' পোশাক বলে মনে করা হচ্ছে? আসলে তাজিকিস্তানে বর্তমানে ধর্মনিরপেক্ষ সরকার ক্ষমতায়। হিজাব নিষেধাজ্ঞার মূলে প্রেসিডেন্ট রাহমন। তিনি ক্ষমতাসীন ধর্মনিরপেক্ষ সরকারের প্রধান। তাঁর সরকার তাজিকিস্তানের নিজস্ব সংস্কৃতি বা 'তাজিকি' সংস্কৃতির প্রচার করে। জনসাধারণের ধর্মীয় মাতামাতি কমিয়ে আনার জন্য তাজিকিস্তানের সরকার অতীতেও নানা ব্যবস্থা নিয়েছে। আর, সেই ধারাবাহিক পদক্ষেপের সাম্প্রতিকতম নজির হল হিজাব নিষিদ্ধকরণ। যা তাজিকিস্তানের শাসক দলের রাজনীতি এবং ক্ষমতা দখলের সঙ্গেও ওতপ্রোতভাবে জড়িত। রাহমন ১৯৯৪ সাল থেকে মধ্য এশীয় দেশ তাজিকিস্তানের প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। তাঁর ৩০ বছরের শাসন এই অঞ্চলে (মধ্য এশিয়া) অন্যতম দীর্ঘতম শাসন হিসেবে চিহ্নিত। কর্মজীবনের গোড়া থেকেই তিনি বিভিন্ন ধর্মীয় রাজনৈতিক সংগঠনের বিরোধী অবস্থান নেন।
আরও পড়ুন- লোকসভা অধিবেশনের প্রথম দিন যা ঘটল, ফটো করে বাঁধিয়ে রাখতে চাইবেন সাংসদরা
ভারতেও বিরোধিতা
ভারতে সংঘ পরিবার দীর্ঘদিন ধরেই হিজাবের বিরোধিতা করে চলেছে। কর্ণাটকে তো বিজেপি সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন হিজাব নিয়ে ব্যাপক অশান্তির সৃষ্টি হয়েছিল। এবার, তাজিকিস্তানের মত দেশেও হিজাব নিষিদ্ধ হয়ে যাওয়ায় যথারীতি সংঘ পরিবারের চাপ মোদী সরকারের ওপর বাড়ল।