Advertisment

Explained: গুজরাটের ঝুলন্ত সেতুতে ভয়াবহ দুর্ঘটনা, নেপথ্যে এক বিরাট কাহিনি

ভারতের সেরামিক শিল্পের প্রাণকেন্দ্র মোরবি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Morbi Bridge

মোরবি জেলা প্রশাসনের ওয়েবসাইটে ঝুলন্ত সেতুর ছবি।

রবিবার রাতে গুজরাটের মোরবিতে সেতু বিপর্যয়ে মৃত্যুর সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে। সোমবারই মৃতের সংখ্যা ১৩৩-এ পৌঁছে গিয়েছে। পরিস্থিতির গুরুত্ব বিবেচনা করে মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) ঘটনাস্থল পরিদর্শন করবেন বলে জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী দুর্ঘটনার পর থেকেই মাচ্ছু নদীতে তল্লাশি চালাচ্ছে।

Advertisment

মোরবি: ভারতের সেরামিক কারখানা

মোরবি জেলা তৈরি হয়েছে ২০১৩ সালের ১৫ আগস্ট। তার সঙ্গেই তৈরি হয়েছে আরও কয়েকটি নতুন জেলা। এর মধ্যে মোরবির পাঁচটি মহকুমা রয়েছে- মোরবি, মালিয়া, তানকারা, ওয়াংকানের এবং হালভাদ। এর আগে ওয়াংকানের ছিল রাজকোট জেলার অন্তর্ভুক্ত। আর, হালভাদ ছিল সুরেন্দ্রনগর জেলায়। এই জেলার উত্তরে রয়েছে কচ্ছ, পূর্বে সুরেন্দ্রনগর, দক্ষিণে রাজকোট ও পশ্চিমে জামনগর। এর মধ্যে মোরবি সেরামিক শিল্পের জন্য বিখ্যাত। এখানে শতাধিক সেরামিক উৎপাদন কারখানা রয়েছে। তবে, বেশিরভাগই ক্ষুদ্র এবং মাঝারিস্তেরর কারখানা। দেশের ৭০ শতাংশ সেরামিক মোরবিতেই তৈরি হয়। এখানে তৈরি সেরামিক টাইলস মধ্যপ্রাচ্য, পূর্ব এশিয়া এবং আফ্রিকায় সরবরাহ হয়। মোরবির সেরামিক শিল্পের বাৎসরিক টার্নওভার ৫০ হাজার কোটি টাকা। আর, বাৎসরিক রফতানির পরিমাণ ১৫ হাজার কোটি টাকা। মোরবির সেরামিক শিল্পের খ্যাতি এতটাই যে তার সঙ্গে কেবলমাত্র চিনের সেরামিক শিল্পেরই তুলনা চলতে পারে।

মোরবির নদী

আরব সাগর থেকে মোরবি শহরের দূরত্ব ৩৫ কিলোমিটার। আর, রাজকোট থেকে দূরত্ব ৬০ কিলোমিটার। জেলার সদরের নামও মোরবি। মোরবি শহরের পাশ দিয়ে বয়ে গিয়েছে মাচ্ছু নদী। খুব একটা বড় নয় মাচ্ছু। মাডলা পাহাড় থেকে এই নদীর উৎপত্তি হয়েছে। ১৩০ কিলোমিটার দূরে গিয়ে পড়েছে কচ্ছের রনে। ১৯৭৯ সালে মাচ্ছুতে জলাধার ভেঙে গিয়ে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটে। ২৫ যার জেরে হাজার লোকের মৃত্যু হয়েছিল। এই জলাধার ভেঙে পড়ার ঘটনা নিয়ে 'মাচ্ছু' নামে একটি গুজরাটি সিনেমাও তৈরি হয়েছে।

আরও পড়ুন- সিএএ নাগরিকত্ব আইন ভাঙবে না, দ্বিমুখী অবস্থান রেখেই শীর্ষ আদালতকে আশ্বাস কেন্দ্রের

নদীর ওপর 'ঝুলতো পুল'

এই মাচ্ছু নদীর ওপরই রয়েছে ঝুলন্ত সেতু। স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে যা পরিচিত 'ঝুলতো পুল' নামে। ১৮৭৯ সালে ব্রিটিশ জমানায় এই সেতু তৈরি হয়। মোরবির তৎকালীন শাসক স্যার বাঘাজি ঠাকুরের জমানায় এই পুল তৈরি হয়েছিল। বাঘাজি ঠাকুর, স্থানীয় বাসিন্দাদের কাছে ঠাকুর সাহেব নামে পরিচিত ছিলেন। তিনি ১৮৫৮ থেকে ১৯২২ সাল পর্যন্ত মোরবি শাসন করেন। স্যার বাঘাজির পরিকল্পনাতেই মোরবি শহর তৈরি হয়। যার মধ্যে রয়েছে দেশের প্রথম আর্ট ডেকো প্রাসাদ। গ্রিন চক নামে ইউরোপীয় স্থাপত্যের নকশায় শহরের প্রাণকেন্দ্রে তৈরি একটি চারকোণা কেন্দ্র।

মোরবি শহরের সরকারি ওয়েবসাইট বলছে, ঝুলন্ত সেতুটির ২৩৩ মিটার লম্বা। চওড়ায় ১.২৫ মিটার। এটা শহরের দরবারগড় প্রাসাদ ও লাখধিরজি ইঞ্জিনিয়ারিং কলেজকে যুক্ত করেছে। এই সেতু মোরবি শহরের পর্যটনের অন্যতম আকর্ষণ। এর তৈরির কৌশল দীর্ঘদিন ধরেই পর্যটকদের বিস্মিত করেছে। জেলার ওয়েবসাইট অনুযায়ী এই সেতুটি 'মোরবির শাসকদের প্রগতিশীল এবং বৈজ্ঞানিক চিন্তাধারার' সাক্ষী। দুই বছর আগে এই ঝুলন্ত সেতু বন্ধ হয়ে যায়। কোনওরকম ফিটনেট সার্টিফিকেট ছাড়াই গত ২৬ অক্টোবর খোলা হয়েছিল।

Read full story in English

Industry gujrat River
Advertisment