বিশ্বব্যাপী ব্যাংকিং সংকট। তার মধ্যে রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখল রিজার্ভ ব্যাংক। থাকল ৬.৫০%। আর্থিক নীতি কমিটির (এমপিসি) ছয় সদস্য সর্বসম্মতভাবে রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছেন রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস। এই অপ্রত্যাশিত ঘোষণার আগে বিশেষজ্ঞরা অবশ্য আশঙ্কা করেছিলেন যে রিজার্ভ ব্যাংক রেপো রেট বাড়াতে পারে। আর, তা বাড়তে পারে ২৫ বেসিস পয়েন্ট।
রেপো রেট
বাণিজ্যিক ব্যাঙ্কগুলি যে সুদের হারে রিজার্ভ ব্যাংকের থেকে টাকা ধার নেয়, তাকেই রেপো রেট বলে। রেপো রেট বাড়লে বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলোকে বেশি টাকা সুদ রিজার্ভ ব্যাংককে দিতে হয়। সেই ক্ষতি বাণিজ্যিক ব্যাংকগুলো গ্রাহকদের দেওয়া সুদের হার বাড়িয়ে পূরণ করে নেয়। ২০২২ সালের মে মাস থেকে টানা ছ'বার রেপো রেট বাড়িয়েছে রিজার্ভ ব্যাংক।
খুচরো বাজারে মূল্যবৃদ্ধি
বর্তমানে দেশে খুচরো মূল্যস্ফীতি জানুয়ারিতে ছিল ৬.৫২ %। ফেব্রুয়ারিতে কমে হয়েছে ৬.৪৪ %। যা দেখে রিজার্ভ ব্যাংকের আশা ২০২৩-২৪ অর্থবর্ষে খুচরো মূল্যস্ফীতি কমে ৫.২% হতে পারে। যার ভিত্তিতে রিজার্ভ ব্যাংকের গভর্নর শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, অর্থনীতিতে চলমান পুনরুজ্জীবন ধরে রাখতেই ঋণের সুদের হার অপরিবর্তিত রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
আপাতত সিদ্ধান্ত
তবে, খুচরো বাজারে মূল্যস্ফীতি কমলেও খাদ্য নয় এমন দ্রব্য, জ্বালানি নয় এমন দ্রব্যের জোগানের অভাবে তার মূল্য বাড়তেই পারে। সেকথা মাথায় রেখে শক্তিকান্ত দাস জানিয়েছেন, সুদের হার বৃদ্ধি না-করা, কোনও চিরকালীন সিদ্ধান্ত নয়। প্রয়োজন হলে অন্য ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
আরও পড়ুন- নিরপেক্ষতার সমাপ্তি, ন্যাটোয় যোগ ফিনল্যান্ডের, কতটা চাপে রাশিয়া?
রিজার্ভ ব্যাংকের ভাবনা
তবে, রিজার্ভ ব্যাংকের আর্থিক নীতি কমিটি মনে করছে, বিশ্ববাজারে মন্দার প্রভাব ভারতেও পড়ছে। অন্যান্য দেশে আর্থিক কড়াকড়ির জন্য ভারতে এবছর বিনিয়োগ কমতে পারে। এই অবস্থায় রিজার্ভ ব্যাংক সুদের পরিমাণ বাড়ালে, দেশীয় বাজারে তার প্রভাব পড়বে। পাশাপাশি, ক্রেতারাও তাদের চাহিদা কমিয়ে দেবে। যা ভারতের আর্থিক পরিস্থিতির আরও ক্ষতি করবে। তাই ঝুঁকি নিয়েই আপাতত তিন মাসের জন্য রেপো রেট অপরিবর্তিত রাখা হল।