ইংল্যান্ড ও ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) নতুন এক ক্রিকেট ফর্ম্যাট এনেছে। এ ফর্ম্যাট টি-২০-র থেকেও ছোট। ২০২০ সালের গ্রীষ্মে এই প্রতিযোগিতা শুরু হবে। মোট আটটি দল ইংল্যান্ডের সাতটি শহরে ঘুরে ঘুরে এই টুর্নামেন্ট খেলবে। গোটা পরিবারেই যাতে ক্রিকেট পৌঁছে যায়, সেই উদ্দেশ্যে এই নয়া প্রতিযোগিতা। এবারের টুর্নামেন্টে বেশ কিছু বড় নাম রয়েছে।
তবে বড় ধাক্কা বা বিস্ময় হল, বাদ পড়েছেন ক্রিস গেইল। ৪০ বছর বয়সী ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান এই ওপেনার টুর্নামেন্টে অংশ নেবার জন্য বেস প্রাইস রেখেছিলেন ১,২৫ হাজার পাউন্ড। কিন্তু তাঁকে কোনও দলই বাছেনি। গেইল একা নন। শ্রীলঙ্কার বর্ষীয়ান পেস বোলার লাসিথ মালিঙ্গা এবং দক্ষিণ আফ্রিকার পেস ব্যাটারি কাগিসো রাবাদাও প্রত্যাখ্যাত। ইংল্যান্ডের এই ১০০ বলের খেলার সম্পর্কে জরুরি কিছু তথ্য দেওয়া রইল।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: সৌরভের ক্ষমতাদখল এবং বিসিসিআই বনাম আইসিসি যুদ্ধের সম্ভাবনা
দ্য হান্ড্রেড ঠিক কী?
ম্যাচে দু পক্ষই ১০০ টি করে বল করবে। এর মধ্যে নো বা ওয়াইড বলা ধরা হবে না। অর্থাৎ খেলা হবে ২০০ বলের।
প্রতি ওভারে ১০টি করে ডেলিভারি থাকবে।
প্রতি দল ১০০টি করে বল খেলবে। ১০ বল অন্তর বোলিং এন্ডের বদল ঘটবে।
একজন বোলার টানা পাঁচ বা ১০টি বল করতে পারবেন। তবে গোটা ম্যাচে একজন বোলার ২০টির বেশি বল করতে পারবেন না।
টাইম আউট:
ফিল্ডিং করার সময়ে প্রত্যেক দলই ১৫০ সেকেন্ড পর্যন্ত স্ট্র্যাটেজিক টাইম আউটের সুযোগ পাবে।
টাইম আউটের সময়ে দলের কোচ মাঠে এসে প্লেয়ারদের সঙ্গে কৌশল নিয়ে আলোচনা করতে পারবেন।
পাওয়ারপ্লে:
প্রতি ইনিংসের শুরুতে ২৫ বলের পাওয়ারপ্লে থাকবে। পাওয়ার প্লের সময়ে ৩০ গজ সার্কেলের বাইরে দুজনের বেশি ফিল্ডার রাখা যাবে না।
আটটি দলের নাম কী?
আটটি দল হল, ট্রেন্ট রকেটস (ট্রেন্ট ব্রিজ), সাদার্ন ব্রেভ (দ্য আগিয়াস বোল), নর্দার্ন সুপারচার্জার্স (এমারেল্ড হেডিংলে), ওয়েলশ ফায়ার (সোফিয়া গার্ডেনস), ওভাল ইনভিসিবলস (দ্য কিয়া ওভাল), ম্যাঞ্চেস্টার অরিজিন্যালস (এমিরেটস ওল্ড ট্র্যাফোর্ড), লন্ডন স্পিরিট (লর্ডস), এবং বার্মিংহাম ফিনিক্স (এজবাস্টন)।
এই ফর্ম্যাটের প্রয়োজনীয়তা কী?
যেহেতু একটি ম্যাচ তিন ঘন্টারও কম সময়ের হবে, দ্য হান্ড্রেডের দর্শক হিলেবে বেশি করে মা এবং শিশুদের দর্শক হিসেবে পাওয়া যাবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। এ ছাড়া ভারতের আইপিএলের মত, সারা পৃথিবীতে যেভাবে টি২০ লিগের চাহিদা বাড়ছে, সে পরিস্থিতিতে দাঁড়িয়ে ইসিবি নিজেদের মত একটা প্রতিযোগিতার আয়োজন করতে চাইছিল, যা অন্যদের থেকে আলাদা হবে।
আপাতত চ্যালেঞ্জ কী?
এই ফর্ম্যাটে খ্যাতনামা প্লেয়ারদের অংশগ্রহণ যেমন সুনিশ্চিত করতে হবে, তেমনই যেসব সমালোচকরা ক্রিকেটের ভবিষ্যৎ নিয়ে মুখর, তাঁদের মুখ বন্ধ করতে হবে।
খেলোয়াড় বাছাই পদ্ধতি কী?
আইপিএলের মত এখানে কোনও নিলাম হবে না। প্রতিটি দল সাত রাউন্ডে দুবার করে নিজেদের পছন্দ বাছাই করতে পারবে। ওপেনিং রাউন্ডে ট্রেন্ট রকেটস তাদের প্রথম বাছাইয়ের সুযোগ পাবে। দ্বিতীয় রাউন্ড থেকে ব্যাপারটা উল্টে দেওয়া হবে। শেষ পর্যন্ত প্রতিটি দল ১৪ জন করে খেলোয়াড় এবং ইংল্যান্ডের খেলোয়াড় দলে নিতে পারবে। প্রতি রাউন্ডে বাছাইয়ের সময় পাওয়া যাবে ১০০ সেকেন্ড করে।
আরও পড়ুন, বিশ্লেষণ: রোহিত শর্মা কেন টেস্টেও ওপেনার হিসেবে হিট
প্লেয়ারদের দাম
প্রতিটি দলের কাছে ১৫ জন খেলোয়াড়ের বেতন হিসেবে ৯,৯০,০০০ ডলার (৯ কোটি টাকার বেশি) থাকবে। এর মধ্যে ৩০ হাজার পাউন্ড ২০২০ সালের জুন মাস পর্যন্ত রিজার্ভ থাকবে। সে সময়ে প্রতি দল তাদের ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রি হিসেবে একজন প্রতিভাবান স্থানীয় খেলোয়াড়কে পছন্দ করতে পারবে। স্থানীয় টি ২০ ভাইটালিটি ব্লাস্টে সেই খেলোয়াড়কে ভাল পারফর্ম করতে হবে এই ওয়াইল্ড কার্ড এন্ট্রির জন্য।
মোট কতজন প্লেয়ার?
রবিবার ৫৭০ জন প্লেয়ার নিজেদের নথিবদ্ধ করিয়েছেন। প্রতিটি গল তিনজন করে বিদেশি নিতে পারবে।
রবিবারে কী হল?
রবিবার পরের বছরের দ্য হান্ড্রেড প্রতিযোগিতার জন্য প্রথম যে বিদেশিকে বেছে নেওয়া হয়েছে, তিনি আফগানিস্তানের লেগ স্পিনার রশিদ খান। কিন্তু ক্রিস গেইল, লাসিথ মালিঙ্গারা রবিবার ডাক পাননি। রশিদকে তুলেছে ট্রেন্ট রকেট, তাদের সর্বোচ্চ বিড ১২৫০০০ পাউন্ডের বিনিময়ে। স্টিভ স্মিথ ও মাইকেল স্টার্ককে তুলেছে ওয়েলশ ফায়ার। দুজনের জন্যই তারা ১২৫০০০ পাউন্ড করে দিয়েছে।
অস্ট্রেলিয়ানদের নিয়ে এত কাড়াকাড়ি কেন?
এই টুর্নামেন্ট অনুষ্ঠিত হবে ২০২০ সালের জুলাই অগাস্ট মাসে। এই এক মাস অস্ট্রেলিয়ানরা খালি রয়েছেন। সে কারণেই তাঁদের নিয়ে টানাটানি। বিদেশি প্লেয়ারদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি রয়েছেন অস্ট্রেলিয়ানরা, ৫৩ জন। এরপরেই রয়েছে পাকিস্তান, ৩৫ জন। ইংল্যান্ডের টেস্ট প্লেয়াররা প্রথম ১০ দিন এই টুর্নামেন্টে খেলতে পারবেন। এরপর তাঁদের পাকিস্তানের সঙ্গে সিরিজ রয়েছে।
কোনও ভারতীয় নেই কেন?
বিসিসিআই ভারতীয় খেলোয়াড়দের এ ধরনের বিদেশি টুর্নামেন্টে খেলার অনুমতি দেয় না।
Read the Full Story in English