Keir Starmer: ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী, কে এই কেয়ার স্টারমার? পরিচয়টা জানলে চমকে উঠবেন
The new Prime Minister: রক্ষণশীলদের ১৪ বছরের শাসনের পরে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টির। কেয়ার স্টারমার লেবার পার্টিকে এক ঐতিহাসিক জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারপরও, কিন্তু এই নেতা লেবার সমর্থকদের একটি অংশের সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন।
The new Prime Minister: রক্ষণশীলদের ১৪ বছরের শাসনের পরে ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী লেবার পার্টির। কেয়ার স্টারমার লেবার পার্টিকে এক ঐতিহাসিক জয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন। তারপরও, কিন্তু এই নেতা লেবার সমর্থকদের একটি অংশের সমালোচনার সম্মুখীন হয়েছেন।
Newly-elected Prime Minister: নবনির্বাচিত প্রধানমন্ত্রী স্যার কিয়ার স্টারমার তাঁর স্ত্রী ভিক্টোরিয়া স্টারমারের সঙ্গে ২০২৪ সালের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টির ব্যাপক জয়ের পর প্রথমবারের মত লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটের অফিসিয়াল বাসভবনে। (ছবি: স্টেফান রুসো, রয়টার্সের মাধ্যমে প্রাপ্ত)
The Labour Party and prime minister of United Kingdom: শুক্রবার (৫ জুলাই) ব্রিটেনের সাধারণ নির্বাচনে লেবার পার্টি জয়ী হয়েছে। এই দলের নেতা কেয়ার স্টারমার ব্রিটেনের নতুন প্রধানমন্ত্রী হয়েছেন।
Advertisment
বড় ব্যবধানে জয় লেবাররা বড় ব্যবধানে জয় পেয়েছে। ইউকে বা ব্রিটেনের হাউস অফ কমন্সের ৬৫০টি আসনের মধ্যে ৪১২টি আসন পেয়েছে। প্রায় এক শতাব্দীর মধ্যে এটাই রক্ষণশীল বা কনজারভেটিভ সবচেয়ে খারাপ পরাজয়। কনজারভেটিভ পার্টির টানা ১৪ বছরের শাসনের পরে ব্রিটেনে ক্রমবর্ধমান মুদ্রাস্ফীতির কারণে জীবনযাত্রার সংকট দেখা দিয়েছে। সেইসঙ্গে ব্রেক্সিট, কোভিড-১৯ মহামারি এবং জ্বালানি সংকট কুপ্রভাব ফেলেছে। তার ফলেই কনজারভেটিভদের এই পরাজয় বলে বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন। উলটোদিকে চার বছরে নেতৃত্বে কেয়ার স্টারমার লেবার পার্টির ভাগ্যের চাকা ঘুরিয়ে দিলেন।
নীচুতলা থেকে উঠে এসেছেন পেশায় ব্যারিস্টার কেয়ার স্টারমারের বয়স ৬১ বছর। তাঁর বাবা এক কারখানায় সরঞ্জাম প্রস্তুতকারকের কাজ করতেন। মা ছিলেন নার্স। তাঁর বাবা-মা উভয়েই লেবার পার্টির সমর্থক ছিলেন। লেবার পার্টি দীর্ঘদিন ধরেই শ্রমিক শ্রেণির অধিকারের কথা বলে। দলের প্রথম সংসদীয় নেতা কেয়ার হার্ডির নামানুসারে স্টারমারের নামকরণ করা হয়েছিল কেয়ার স্টারমার। যা কেয়ার স্টারমারের সঙ্গে লেবার পার্টির আজীবনের সম্পর্ক তৈরি করেছে। কিশোর বয়স থেকেই তিনি সক্রিয়ভাবে রাজনীতিতে নেমে পড়েন। অক্সফোর্ড থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়ে লিডস ইউনিভার্সিটিতে আইন পড়ার পর কেয়ার স্টারমারই তাঁর পরিবারের প্রথম ব্যক্তি, যিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের স্নাতক হন। তবে, এই অপরাধের জন্য তাঁকে নির্যাতনের মুখে পড়তে হয়নি। ব্যাপারটাকে ছোট অপরাধ হিসেবে গণ্য করা হয়েছিল।
আইন রক্ষা থেকে প্রণয়ন ১৯৮৭ সালে, স্টারমার মিডল টেম্পলে যোগ দেন। এই মিডল টেম্পল হল, ইনস অফ কোর্ট নামে চারটি বার অ্যাসোসিয়েশনের মধ্যে একটি। এই অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের ইংরেজি বারে ব্যারিস্টার হিসেবে ডাকা হয়। তারপর থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত, তিনি একজন মানবাধিকার আইনজীবী হিসাবে নিজের পরিচয় তৈরি করেন। মৃত্যুদণ্ডের সাজাপ্রাপ্তদের বাঁচাতে ক্যারিবিয়ান দ্বীপপুঞ্জজুড়ে ঘুরে বেড়ান। এমনকী, ম্যাকডোনাল্ডের বিরুদ্ধে 'ম্যাকলিবেল' মামলার মতো হাই-প্রোফাইল মামলাও লড়েন। মানহানির জন্য দুই পরিবেশবাদীর বিরুদ্ধে মামলা করার সিদ্ধান্তের কারণে ব্রিটেনের ম্যাকডোনাল্ডসের প্রতি জনগণ ক্ষুব্ধ হয়েছিলেন। সেই ঘটনাকে ম্যাকডোনাল্ডসের বিশাল জনসংযোগ বিপর্যয় হিসেবে আজও স্মরণ করা হয়। হেলেন স্টিল নামে এক পরিবেশবাদী জানিয়েছেন, সেই সময় স্টারমার তাঁদের বিনা পয়সায় আইনি লড়াইয়ে সাহায্য করেছিলেন। হেলেন বলেন, 'আমরা তাঁর সাহায্য ছাড়া মামলাটি লড়তেই পারতাম না।' ২০০৮ সালে দ্য গার্ডিয়ান, স্টারমারকে তাঁর প্রজন্মের সবচেয়ে উজ্জ্বল আইনজীবী হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে।
Advertisment
রানির আইনজীবী ২০০২ সালে, তিনি ব্রিটেনের রানির আইনজীবী নিযুক্ত হন। ২০০৩ থেকে ২০০৮ সালের মধ্যে স্টারমার উত্তর আয়ারল্যান্ড পুলিশিং বোর্ডের মানবাধিকার উপদেষ্টা হিসেবেও কাজ করেন। এই সময় তিনি সরকারি আইনজীবীদের পরিচালক নিযুক্ত হন। পরিচালক হিসাবে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ মামলার তদারকি করেন। বেশ কিছু সংস্কার করেন। বিশেষত হাই-প্রোফাইল জিমি স্যাভিল মামলার পরে যৌন নির্যাতনের তদন্ত পরিচালনার পদ্ধতিতে তিনি পরিবর্তন আনেন। ২০১৩ সালে স্টারমার পদত্যাগ করেন।
রাজনীতিতে প্রবেশ ২০১৫ সালে, স্টারমার ৫২ বছর বয়সে রাজনীতিতে প্রবেশ করেন। সেই সময় তিনি হলবর্ন এবং সেন্ট প্যানক্রাসে লেবার পার্টির প্রার্থী পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। এইসব আসন থেকে তিনি তিনটি নির্বাচনে অংশগ্রহণ করেন। এই সময়ে, স্টারমার ব্রেক্সিটের বিরুদ্ধে সওয়াল করেন। এমনকি তৎকালীন লেবার পার্টি তথা প্রধান বিরোধী নেতা জেরেমি করবিনের সেক্রেটারি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছিলেন। সঙ্গে, দ্বিতীয়বার ইউরোপীয় ইউনিয়নে যুক্ত থাকার পক্ষে গণভোটের সুপারিশ করেছিলেন। ২০২০ সালে তিনি লেবার পার্টির প্রধান হন।