শুক্রবার ঝাঁপ বন্ধ হয়ে গেল সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের। বিশ্বের অন্যতম বৃহত্তম এই ব্যাংক। টেকনোলজি দুনিয়ায় ঋণদানকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের বিরাট নাম। মার্কিন ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশনের আওতায় এই ব্যাংকে গ্রাহকদের আমানতের পরিমাণ ১৭৫ বিলিয়ন ডলার। সেই ব্যাংক বন্ধ হওয়ায় ব্যাংক শিল্পের দুনিয়া যেন কেঁপে উঠল। ২০০৮ থেকে বিশ্বজুড়ে যে আর্থিক মন্দার প্রভাব চলছে, এই ব্যাংকের বন্ধ হওয়ায় তা যেন একটা বৃত্ত সম্পূর্ণ করল।
ব্যাংকের দখল
ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ ফিনান্সিয়াল প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন শুক্রবার সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক বন্ধ করে দিয়েছে। ব্যাংকে জমা থাকা নগদের পরিমাণ কম ছিল। এই অবস্থায় গ্রাহকরা যাতে নগদ তুলে না-নেন, তা নিশ্চিত করতে চেষ্টা করেছিল ব্যাংক কর্তৃপক্ষ। তার দু'দিনের মধ্যে ঝাঁপ বন্ধ করে দেওয়া হল এই ব্যাংকের। নিয়ন্ত্রক সংস্থা ক্যালিফোর্নিয়া ডিপার্টমেন্ট অফ ফিনান্সিয়াল প্রোটেকশন অ্যান্ড ইনোভেশন এই ব্যাংকের রিসিভার হিসেবে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশনকে নিয়োগ করেছে।
প্রথম দায়িত্ব
রিসিভার সংস্থা ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের আমানত ও সম্পদ ধরে রাখতে একটি নতুন ব্যাংক তৈরি করেছে। এই ব্যাপারে ফেডারেল ডিপোজিট ইনস্যুরেন্স কর্পোরেশন জানিয়েছে, নতুন ব্যাংকের নাম হচ্ছে ন্যাশনাল ব্যাংক অফ সান্তা ক্লারা। এই নতুন ব্যাংক সোমবার সকালের মধ্যে কাজ শুরু করবে। রিসিভার সংস্থা জানিয়েছে, নতুন ব্যাংকের আপাতত প্রথম কাজ হল, বন্ধ হয়ে যাওয়া সিলিকন ভ্যালি ব্যাংকের চেকগুলো ক্লিয়ার করা।
আরও পড়ুন- এসএসসি দুর্নীতি: আদালত চত্বরে বিস্ফোরক শান্তনু! অভিষেক ঘনিষ্ঠের নিশানায় কারা?
কীভাবে ডুবল?
সিলিকন ভ্যালি ব্যাংক লাভের আশায় বিপুল পরিমাণ বিনিয়োগ করেছিল। নতুন বা স্টার্ট আপ সংস্থাকে তারা প্রচুর অর্থ দিয়েছিল। বিপুল পরিমাণ বন্ডও কিনেছিল। অর্থাৎ হাতে নগদ ছিল কম। বিনিয়োগের পরিমাণ ছিল বেশি। এর মধ্যেই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় বা ফেডারেল ব্যাংক মুদ্রাস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ করতে গত বছর সুদের হার বাড়ানো শুরু করে। কিন্তু, স্টার্ট আপ সংস্থার অনেকগুলোই শেষ পর্যন্ত মুখ থুবড়ে পড়ে। যার জেরে ব্যাংকের গ্রাহকরা আতঙ্কিত হয়ে পড়েন। তাঁরা টাকা তুলতে শুরু করেন। এর জেরেই মুখ থুবড়ে পরে ব্যাংক। বুধবার বন্ধ হয়ে যাওয়া ব্যাংকটি জানিয়েছিল, তাদের প্রায় ২০০ কোটি মার্কিন ডলার ক্ষতি হয়েছে।