আনোয়ার-উল-হক কাকার সোমবার (১৪ আগস্ট) পাকিস্তানের নতুন অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছেন। গত বুধবার (৯ আগস্ট) পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার পর তাঁকে নিয়োগ করা হয়েছে ঠিক আইনসভার পাঁচ বছরের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন দিন আগে। এরপর প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ ও বিরোধী দলের নেতা রাজা রিয়াজ পাকিস্তান পার্লামেন্টের জনপ্রতিনিধি কাকারকে পাকিস্তানের তত্ত্বাবধায়ক প্রধানমন্ত্রী হিসেবে মেনে নিতে সম্মত হয়েছেন।
কাকারের এজেন্ডা
কাকারের এজেন্ডার তালিকার শীর্ষে আছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের জন্য মন্ত্রিসভার নামকরণ এবং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন নিশ্চিত করা। পাকিস্তানের সংবিধানের অধীনে একটি নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার জাতীয় নির্বাচনের তত্ত্বাবধান করে থাকে। পাকিস্তান পার্লামেন্টের নিম্নকক্ষ ভেঙে দেওয়ার ৯০ দিনের মধ্যে নির্বাচন করাতে হয়। এর অর্থ হল, নভেম্বরের শুরুতে নির্বাচন হতে পারে।
আনোয়ার-উল-হক কাকার কে?
বছর ৫২-র কাকার পাকিস্তানের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলীয় প্রদেশ বেলুচিস্তানের বাসিন্দা। আফগানিস্তানের সীমান্তবর্তী একটি অঞ্চল এই বেলুচিস্তান। যেটি পাকিস্তানের ইতিহাসে মাঝে মধ্যেই অভ্যন্তরীণর জন্য সংবাদ শিরোনামে আসে। চ্যানেল জিও নিউজ অনুসারে, কাকার কোয়েটা শহরে পড়াশোনা করেছেন। পরে উচ্চশিক্ষার জন্য লন্ডন যান। ২০০৫ সালে পাকিস্তানে ফিরে আসেন।
প্রেসিডেন্টের কার্যালয়
পাকিস্তানের প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, কাকারের নিয়োগ অনুমোদন করেছেন প্রেসিডেন্ট আলভি। কাকার অবশ্য পাকিস্তানের রাজনৈতিক মহলে বিশেষ পরিচিত নন। বিদায়ী ক্ষমতাসীন জোটের একজন সদস্য পাকিস্তানি গণমাধ্যম সংস্থা ডনকে বলেছেন যে কাকারের নাম প্রধানমন্ত্রী পদের জন্য ওঠা জোট সরকারের অনেক নেতার কাছেই রীতিমতো 'বিস্ময়'-এর ব্যাপার।
কাকারের উঠে আসা
কাকারের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট অনুসারে, তিনি ২০১৮ সাল থেকে পাকিস্তানের পার্লামেন্টে ছয় বছরের মেয়াদে জনপ্রতিনিধির দায়িত্ব পালন করছেন। তিনি বেলুচিস্তান আওয়ামি পার্টির একজন নেতা। এই বেলুচিস্তান আওয়ামি পার্টিকে পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর অত্যন্ত ঘনিষ্ঠ বলে মনে করা হয়। রবিবার সন্ধ্যায় কাকার সামাজিক মাধ্যম এক্স (পূর্বতন টুইটার)-এ বলেছেন, 'তত্ত্বাবধায়ক সরকারের প্রধানমন্ত্রী হিসেবে আমাকে অর্পিত দায়িত্বের কারণে আমি বেলুচিস্তান আওয়ামি পার্টির (বিএপি) সদস্যপদ ফেরত দিচ্ছি। আর, আমার জনপ্রতিনিধির পদও ত্যাগ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি।'
আরও পড়ুন- হিমাচলে প্রবল বর্ষণ: কখন বৃষ্টিকে মেঘভাঙা বৃষ্টিপাত বলে?
কুরেশির বক্তব্য
পাকিস্তানের প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ বা পিটিআই আশা প্রকাশ করেছে যে কাকার অবাধ, সুষ্ঠু ও বিশ্বাসযোগ্য নির্বাচন নিশ্চিত করবেন। এই প্রসঙ্গে ইমরান জমানায় পাকিস্তানের বিদেশমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি বলেছেন, 'যদি নির্বাচনের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন থাকে, তাহলে পাকিস্তানে কোনও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা থাকবে না। আর, রাজনৈতিক স্থিতিশীল না-হলে পাকিস্তানে আর্থিক স্থিতিশীলতাও আসবে না।' জেলবন্দি ইমরানের জায়গায় কুরেশিই এখন তেহরিক-ই-ইনসাফ দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন।