মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র অবশেষে ভারতে তার নতুন রাষ্ট্রদূতের নাম ঘোষণা করেছে। তিনি হলেন এরিক গারসেটি, লস অ্যাঞ্জেলেসের প্রাক্তন মেয়র। প্রথমবার মেয়র হওয়ার পর আড়াই বছর ওই পদে ছিলেন। জো বাইডেনের অনুগত গারসেটিকে প্রায় পাঁচ বছর আগে পর্যন্ত ডেমোক্র্যাটিক পার্টির উঠতি তারকাদের একজন হিসেবে দেখা হত। যাইহোক, তাঁর নয় বছরের দীর্ঘ মেয়রের মেয়াদের শেষ বছরগুলোয় কেলেঙ্কারির অভিযোগ ওঠে। সেই কারণে তাঁকে বাইডেন মন্ত্রিসভা থেকে সরানো হয়। এমনকী, তাঁর রাষ্ট্রদূত হওয়াও বানচাল হয়ে যাচ্ছিল। শেষ পর্যন্ত গত সপ্তাহে মার্কিন সিনেটে তাঁর ভারতের রাষ্ট্রদূত হওয়া নিয়ে সিদ্ধান্ত হয়।
কে এই এরিক গারসেটি?
গারসেটির ওয়েবসাইট বলে যে, ৫২ বছর বয়সি এই রাজনীতিবিদ সান ফার্নান্দো উপত্যকায় বেড়ে উঠেছেন। তিনি কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বিএ এবং এমএ অর্জন করেছেন। অক্সফোর্ড এবং লন্ডন স্কুল অফ ইকোনমিক্সে রোডস স্কলার হিসেবে অধ্যয়ন করেন। অক্সিডেন্টাল কলেজ এবং ইউএসসিতে পড়ান। ১২ বছর ধরে মার্কিন নৌবাহিনীর রিজার্ভের একজন আধিকারিক পদে ছিলেন এবং একজন উৎসাহী জ্যাজ পিয়ানোবাদক ও ফোটোগ্রাফার। তাঁর স্ত্রীর নাম অ্যামি ইলেইন ওয়েকল্যান্ড। এছাড়া তাঁর এক কন্যাও আছে।
সর্বকনিষ্ঠ মেয়র
তিনি ২০১৩ সালে লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র নির্বাচিত হন। ২০২২ সাল পর্যন্ত ওই পদে ছিলেন। ১০০ বছরের মধ্যে লস অ্যাঞ্জেলেসের সর্বকনিষ্ঠ মেয়র হয়েছিলেন। আর, তিনিই ছিলেন ওই চেয়ারে বসা প্রথম ইহুদি ব্যক্তি। এর আগে, তিনি ২০০৬ থেকে ২০১২ সাল পর্যন্ত লস অ্যাঞ্জেলেস সিটি কাউন্সিলের সভাপতি এবং তার আগে ১৩তম জেলার কাউন্সিল সদস্য হিসাবে দায়িত্ব পালন করেছেন। লস অ্যাঞ্জেলেসের মেয়র হিসেবে তিনি সুনাম কু়ড়িয়েছিলেন। ২০২৮ সালে এই শহরে বসবে অলিম্পিকের আসর। সেজন্য, শহরকে ধীরে ধীরে প্রস্তুত করাও ছিল তাঁর অন্যতম দায়িত্ব।
আরও পড়ুন- মরিশাসের ইলারা আদানি গ্রুপের অন্যতম মালিক, ঘুরিয়ে কাজ করছে দেশের প্রতিরক্ষা ক্ষেত্রে
সাফল্য ও ব্যর্থতা
লস অ্যাঞ্জেলেসের যোগাযোগ ব্যবস্থাকে উন্নত করা, এই শহরকে আরও ভূমিকম্প-প্রতিরোধী করে তোলা, ন্যূনতম ১৫ ডলার মজুরি গ্রহণের জন্য এবং কোভিড মহামারী চলাকালীন তার নিয়মিত প্রেস ব্রিফিংয়ের জন্য গারসেটির প্রতি অনেক বাসিন্দাই আশ্বস্ত হয়েছিলেন। তাঁর প্রশংসাও করেছিলেন। আবার, লস অ্যাঞ্জেলেসের গৃহহীনতার সংকটের জন্য তাঁকে সমালোচিতও হতে হয়েছিল।
সমালোচিত
জর্জ ফ্লয়েডের হত্যার পরে বিক্ষোভ চলাকালীন, তিনি এক মধ্যপন্থা নিয়েছিলেন। যার জন্য বাম ও ডান উভয়পন্থীদের দ্বারাই সমালোচিত হয়েছিলেন। সিটি কাউন্সিলে দুর্নীতির অভিযোগ তাঁর রেকর্ডে ছায়া ফেলেছে। যাইহোক, গারসেটির ওপর সবচেয়ে বড় ধাক্কাটি এসেছিল একজন সহকারীর বিরুদ্ধে যৌন অসদাচরণের অভিযোগের আকারে। গারসেটির বিরুদ্ধে অভিযোগ, তিনি ওই সহকারীর বিরুদ্ধে কোনও ব্যবস্থা নেননি।