চিনে করোনা সংক্রমণের বাড়বাড়ন্তের পিছনে আছে ওমিক্রনের শাখা BF.7। অবশ্য প্রথমবার না। এর আগে অক্টোবরে এটি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং বেশ কয়েকটি ইউরোপীয় দেশে ব্যাপক প্রভাব ফেলেছে। চরিত্র বদলে এই সাব ভেরিয়েন্ট হয়ে উঠেছে আরও ভয়ংকর। একসঙ্গে ১৮ জনের মধ্যেও ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। তার রূপবদলের ফলেই এখন নাজেহাল বিশ্ব। এমনটাই জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা।
বর্তমান পরিস্থিতি
পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে চিনের প্রতিদিন ২,০০০ জন করে করোনায় আক্রান্ত হচ্ছেন। আক্রান্তদের স্যাম্পেল টেস্ট করে দেখা গিয়েছে, বেশিরভাগই BF.7 দ্বারা সংক্রমিত। ২০১৯-এ চিনেই প্রথম করোনা ধরা পড়েছিল। তারপর বারবার চরিত্র বদলাতে দেখা গিয়েছে এই ভাইরাসকে। বিশেষজ্ঞরা এনিয়ে বারবার সতর্ক করে দিয়েছেন বিশ্ববাসীকে। তাঁরা বারবার জানিয়েছেন, করোনা কিন্তু পুরোপুরি শেষ হয়ে যায়নি। রূপ বদলে ফিরে আসতে পারে। হতে পারে আরও চেয়েও বেশি সংক্রামক।
ওমিক্রনেরই উপশাখা
সেই বদলে যাওয়া রূপই হল বর্তমানে BF.7। বিশেষজ্ঞরা মনে করছেন, করোনার এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে সংক্রামক রূপ হল এই উপশাখা। এত দ্রুত তা ছড়ায় যে টিকাতেও এর সংক্রমণ থেকে নাগরিকদের সুরক্ষা দিতে পারছে না চিন। এটা আসলে ওমিক্রনের BA.5.2.1.7 রূপ। একেই সংক্ষেপে BF.7 বলা হচ্ছে।
নতুন ভাইরাসের উপসর্গ
করোনার এই নতুন ভাইরাস বা ওমিক্রনের উপশাখা BF.7-এর উপসর্গ আলাদা কিছু নয়। করোনার প্রথম সময় থেকে যা যা উপসর্গ ছিল সেগুলোই। অর্থাৎ, জ্বর হওয়া, কাশি হওয়া, সর্দি হওয়া, নাক দিয়ে জল গড়ানো। বিশেষজ্ঞদের একাংশের আশঙ্কা এই অতিসংক্রামক করোনার জন্য আগামী কয়েক মাসের মধ্যে বিশ্বে লক্ষ লক্ষ মানুষের মৃত্যু ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
আরও পড়ুন- স্পাইস জেটের ওপর ক্ষুব্ধ জাতীয় মহিলা কমিশন, বিমান সংস্থাকে কড়া নোটিস
দ্রুত ছড়াচ্ছে
সবচেয়ে বড় কথা একজনের থেকে ১৮ জনের দেহে এই রোগ ছড়ানোর সম্ভাবনা থাকায়, দ্রুতহারে সংক্রমণ বাড়বে। যাঁদের মধ্যে চিকিৎসক, স্বাস্থ্যকর্মীদেরও থাকার সম্ভাবনা রয়েছে। যার ফলে অভাব দেখা দিতে পারে স্বাস্থ্যকর্মীদের। শুধু তাই নয়, অনেক সময় উপসর্গহীন অবস্থায় কোনও ব্যক্তি আক্রান্ত হলে, তা আরও ভয়ংকর আকার ধারণ করবে। এমনটাই আশঙ্কা বিশেষজ্ঞদের।
মোকাবিলার রাস্তা
এই পরিস্থিতিতে মোকাবিলার রাস্তা বলতে বিশেষজ্ঞরা জোর দিচ্ছেন টিকাকরণের ওপর। পাশাপাশি, জোর দেওয়া হচ্ছে বুস্টার ডোজ নেওয়ার ওপর। বহু মানুষ টিকা নিলেও বুস্টার ডোজ নেননি। তাই তাঁদের মধ্যে সংক্রমণের সম্ভাবনা বেশি। এমনটাই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। আক্রান্তদের দ্রুত চিহ্নিত করা ও বিচ্ছিন্ন করা সম্ভব না-হলে, তাই পরিস্থিতি ঘোরালো হয়ে উঠতে পারে। আক্রান্তদের চিহ্নিত করতে সেই কারণে স্যাম্পেল সংগ্রহ ও নমুনা পরীক্ষার ওপর জোর দিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। কেবলমাত্র তবেই মৃত্যু রোখা সম্ভব হবে বলেই মত বিশেষজ্ঞদের।
Read full story in English