কেন্দ্রীয় সরকার বিদেশ বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর জন্য ভারতে দরজা খুলছে। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো এদেশে ক্যাম্পাস তৈরি করবে। এক প্রস্তাবের মাধ্যমে সেই পথে এগোচ্ছে সরকার। অতীতে রাজনৈতিক বাধার মুখে পড়ে এমন চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে। বৃহস্পতিবার, উচ্চশিক্ষা নিয়ন্ত্রক বিশ্ববিদ্যালয় অনুদান কমিশন (ইউজিসি) বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলোকে ভারতে প্রবেশের অনুমতি দেওয়ার জন্য খসড়া আইন প্রকাশ করেছে। জনসাধারণের মন্তব্য এবং প্রতিক্রিয়া ১৮ জানুয়ারি পর্যন্ত ugcforeigncollaboration@gmail.com-এ ইমেলের মাধ্যমে গৃহীত হবে। চলতি মাসের শেষের দিকে বিধিগুলো নথিবদ্ধ হবে।
অক্সফোর্ড, কেমব্রিজ, হার্ভার্ডের মত বিশ্ববিদ্যালয় কি ভারতে এখন ক্যাম্পাস খুলতে পারবে?
আইনগতভাবে হ্যাঁ। তবে এটি শেষ পর্যন্ত নির্ভর করবে এই বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভারতে আদৌ শাখা খুলতে আগ্রহী হবে কি না, তার ওপর। ইউজিসির অবশ্য দাবি, বেশ কিছু ইউরোপীয় দেশের বিশ্ববিদ্যালয় ভারতে ক্যাম্পাস স্থাপনে ভীষণ আগ্রহ দেখিয়েছে। আগামী কয়েক মাসের মধ্যে তাই, ইউজিসি ভারতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরির জন্য বিদেশে ভারতীয় দূতাবাসগুলোয় পৌঁছবে। আর, সেখানে বিভিন্ন দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে ভারতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস তৈরি নিয়ে আলোচনা করবে।
সরকার কি ভারতে বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ফি কাঠামো নিয়ন্ত্রণ করবে?
না, এই বিষয়ে সরকারের কোনও বক্তব্য নেই। বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়গুলো ভারতীয় এবং বিদেশি উভয় ছাত্রদের জন্য ফি কাঠামো এবং ভর্তির মানদণ্ড নির্ধারণের পূর্ণ স্বাধীনতা পাবে। তারা ভারত বা বিদেশ থেকে ফ্যাকাল্টি নিয়োগের ক্ষেত্রে একটি বিনামূল্যে সাহায্যও পাবে। তবে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি ও চাকরিতে কোনও সংরক্ষণ গ্রাহ্য হবে না। খসড়া প্রবিধানে বলা হয়েছে যে ফি কাঠামো 'স্বচ্ছ এবং যুক্তিসঙ্গত' হওয়া উচিত। তবে, বৃত্তি প্রদান করা হতে পারে। সেটা দরিদ্র শিক্ষার্থীদের ক্ষেত্র। আর, মেধাবী পড়ুয়াদের ক্ষেত্রে।
আরও পড়ুন- পুনর্বাসন না-দিয়ে উচ্ছেদ নয়, হলদোয়ানিতে কেন এমন নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট?
কেন ভারতে বিদেশি বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাসের অনুমতি দেওয়ার আগের চেষ্টাগুলো ব্যর্থ হয়েছিল?
এর প্রধান কারণ রাজনৈতিক। যে জোট সরকারগুলো ২০১৪ সাল পর্যন্ত ভারতে সরকার পরিচালনা করেছিল, তারা নানা চাপের মুখোমুখি হয়েছিল। উচ্চশিক্ষায় বিদেশি পুঁজির প্রবেশের বিরুদ্ধে বামেরা বরাবরই সরব। জাতীয় রাজনীতিতে সেই সময় তাদের দৃঢ় উপস্থিতি ছিল। বিরোধী দলে থাকা বিজেপিও সেই সময় বিদেশি শিক্ষার দেশে প্রবেশের বিরোধিতা করেছিল। আরএসএস-ঘনিষ্ঠ স্বদেশি জাগরণ মঞ্চ ইউপিএ সরকারেরর বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বিলের বিরোধিতা করেছিল। তাদের দাবি ছিল, বিদেশি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানগুলো দেশের শিক্ষার মানোন্নয়ন ঘটাবে না। শুধুমাত্র মুনাফা অর্জন করবে।
Read full story in English