Advertisment

Explained: শেষ হল কানওয়ার তীর্থযাত্রা, কেন পালিত হয় এই রীতি?

১৬ জুলাই এই তীর্থযাত্রা শেষ হয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Kanwar yatra

কানওয়ারিয়ারা গঙ্গা থেকে জল বহন করে গুরুগ্রামের জাতীয় সড়ক ৪৮-এ হাঁটছেন।

বার্ষিক কানওয়ার যাত্রায় প্রতিবছর লক্ষাধিক তীর্থযাত্রী গঙ্গা এবং অন্যান্য পবিত্র নদী থেকে শিব মন্দিরে জল নিয়ে যান। গত কয়েক বছরের মত এবছরও এই তীর্থযাত্রা উপলক্ষে ট্রাফিক ব্যবস্থার মধ্যেই ব্যাপক নিরাপত্তার বন্দোবস্ত করা হয়েছিল। গত ১৬ জুলাই এই তীর্থযাত্রা শেষ হয়েছে। মিরাটে গত ১৫ জুলাই পাঁচ জন কানওয়ারিয়া বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে মারা গিয়েছেন। হরিদ্বারে কানওয়ারিয়াদের একটি দল এক বিজেপি সদস্যকে লাঞ্ছিত করেছেন বলে অভিযোগ। এছাড়া এবছর এই তীর্থযাত্রা মোটের ওপর শান্তিপূর্ণ ছিল। চলুন দেখে নিই, কানওয়ার যাত্রা কী, আর এই বছর এর সুশৃঙ্খল সমাপ্তির জন্য কী ব্যবস্থা করা হয়েছিল।

Advertisment

কানওয়ার যাত্রার ধর্মীয় তাৎপর্য

কানওয়ার যাত্রা হল একটি তীর্থযাত্রা যা হিন্দু ক্যালেন্ডার মাসে শ্রাবণ (সাবন)-এ অনুষ্ঠিত হয়। এই বছর, এটি শুরু হয়েছিল ৪ জুলাই। ঐতিহ্যগতভাবে, গেরুয়া বসন পরিহিত ভক্তরা বিভিন্ন শিব মন্দিরে জলের কলসি নিয়ে খালি পায়ে হেঁটে যান। অনেক জায়গায় ট্রাক এবং অন্যান্য যানবাহনে চেপে যাতায়াত করেন তীর্থযাত্রীরা। গাঙ্গেয় সমভূমিতে, উত্তরাখণ্ডের হরিদ্বার, গোমুখ এবং গঙ্গোত্রী, বিহারের সুলতানগঞ্জ এবং উত্তরপ্রদেশের প্রয়াগরাজ, অযোধ্যা বা বারাণসীর মতো তীর্থস্থানে জল ঢালা হয়।

বাঁক কাঁধে চাপিয়ে কলসি বহন

ভক্তরা তাদের কাঁধে বাঁকে চাপিয়ে পবিত্র জলের কলসি বহন করেন। ১২টি জ্যোতির্লিঙ্গ-সহ গুরুত্বপূর্ণ মন্দিরে বা মিরাটের পুরো মহাদেব এবং অঘোরনাথ মন্দির, বারাণসীর কাশী বিশ্বনাথ মন্দির, ঝাড়খণ্ডের দেওঘরের বৈদ্যনাথ ধামের মতো নির্দিষ্ট মন্দিরগুলোতে তীর্থযাত্রীরা শিব লিঙ্গের পূজা করতে জল ব্যবহার করেন। এমনকী, ভক্তরা নিজের গ্রামে বা শহরেও শিবমন্দিরে গিয়ে শিবের মাথায় জল ঢালেন। গঙ্গার আশেপাশের এলাকায় এই শিব পূজার বিশেষ তাৎপর্য রয়েছে। উত্তর ভারতের কানওয়ার যাত্রার সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ একটি গুরুত্বপূর্ণ উৎসব, যাকে 'কাভাদি' বলা হয়, পালিত হয় তামিলনাড়ুতে। সেখানে আবার ভগবান মুরুগানকে পূজা করা হয়।

সমুদ্র মন্থনের কাহিনি

এই আচারের শুরুটা হয়েছে 'সমুদ্র মন্থন'-এর কাহিনিকে ঘিরে। ভগবত পুরাণ এবং বিষ্ণু পুরাণে বর্ণিত হিন্দু পুরাণের সবচেয়ে পরিচিত কাহিনিগুলোর মধ্যে যা অন্যতম। এই কাহিনি 'অমৃত' বা অমৃতের উত্স ব্যাখ্যা করেছে। কাহিনি অনুসারে, সমুদ্র মন্থনের সময় অমৃতের পাশাপাশি 'হলাহল' বা প্রাণঘাতী বিষ-সহ অনেক ঐশ্বরিক প্রাণীর উদ্ভব হয়েছিল। ধ্বংসকারী ভগবান শিব হলাহলকে গ্রাস করেছিলেন, যাতে তা ছড়িয়ে না-পড়ে।

আরও পড়ুন- কুনো জাতীয় উদ্যানে চিতা

শিবের বিষ কমাতে জল ঢালা শুরু

শিব যখন বিষ পান করেছিলেন, তখন তাঁর স্ত্রী পার্বতী বিষটি ধারণ করতে এবং শিবের ভিতরের জগতের ওপর যাতে সেই বিষ প্রভাব ফেলতে না-পারে, সেজন্য মহাদেবের গলা চেপে ধরেছিলেন। বিষের প্রভাবে শিবের ঘাড় নীল হয়ে গিয়েছিল। যা তাঁকে নীলকণ্ঠ বা নীল গলার দেবতা নামে পরিচিত করেছে। কিন্তু, বিষ তখনও প্রভাব ফেলছিল এবং মহাদেবের শরীর স্ফীত হয়ে উঠছিল। সেই বিষের প্রভাব কমাতে শিবকে জল নিবেদনের প্রথা শুরু হয়।

Temple Pilgrimage pujo
Advertisment