রবিবার, ১৭ সেপ্টেম্বর নয়াদিল্লিতে এই পতাকা উত্তোলন অনুষ্ঠান হয়েছে। (ছবি: পিটিআই)
রবিবার সকালে, নতুন সংসদ ভবনে প্রথম অধিবেশনের আগের দিন উপরাষ্ট্রপতি জগদীপ ধনখড় ভবনের গজদ্বারে জাতীয় পতাকা উত্তোলন করলেন। আমরা নতুন সংসদ ভবনে গজদ্বারের তাৎপর্য এবং অন্যান্য দ্বার বা প্রবেশদ্বারগুলো কী কী, তা একবার দেখে নিই:
Advertisment
গজদ্বার নতুন পার্লামেন্টে ছয়টি প্রবেশপথ রয়েছে। প্রতিটি পথই আলাদা ভূমিকা নির্দেশ করে। পার্লামেন্ট আর্ট প্রজেক্টের একটি সরকারি নোট অনুসারে, একটি হাতি বা গজর ভাস্কর্যটি উত্তর দিকের প্রবেশপথ পাহারা দেওয়ার জন্য স্থাপন করা হয়েছে। প্রাণী হাতি জ্ঞান, সম্পদ, বুদ্ধি এবং স্মৃতির প্রতিনিধিত্ব করে। এবং নির্বাচিত গণতন্ত্রের প্রতিনিধিদের আকাঙ্ক্ষারও মূর্ত প্রতীক। বাস্তুশাস্ত্র অনুসারে, কোনও ভবনের উত্তর দিকটি বুধ গ্রহের সঙ্গে যুক্ত। এই বুধ গ্রহ হল উচ্চ বুদ্ধির উৎস। দিশার অধিপতি কুবেরেরও দিক। কুবের দেহ হলেন সম্পদের দেবতা। আর, সেই কারণেই গজ বা হাতির ভাস্কর্যটি উত্তরের দিকে স্থাপন করা হয়েছে।
সাংস্কৃতিক প্রতীক নতুন সংসদ ভবনে, ভারতীয় সংস্কৃতিতে তাদের গুরুত্ব, তাদের নান্দনিক চেহারা, ইতিবাচক গুণাবলি এবং বাস্তুশাস্ত্রের অধ্যয়নের ভিত্তিতে ছয়টি প্রবেশপথেই শুভ প্রাণীদের লাল বেলে পাথরের ভাস্কর্যগুলো 'অভিভাবক মূর্তি' হিসেবে স্থাপন করা হয়েছে। হাতি বা গজ ছাড়া অন্যগুলো হল:-
Advertisment
অশ্বদ্বার অশ্ব বা ঘোড়া সবসময় সজাগ থাকে। বাস্তুশাস্ত্রে দক্ষিণের প্রবেশদ্বারে তার প্রস্তুত থাকা ধৈর্য, শক্তি এবং গতির প্রতীক। এটি শাসনের গুণমানকেও প্রকাশ করে।
গরুড় ঈগলের মত পাখি গরুড়। যা নতুন ভবনের পূর্বদ্বারে রয়েছে। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী এই পাখির মূর্তি ভবনের পূর্বদ্বারে থাকার অর্থ, তা দেশের জনগণ এবং প্রশাসকদের আকাঙ্ক্ষারই প্রতীক। বাস্তুশাস্ত্র অনুযায়ী, পূর্ব দিকটি উদীয়মান সূর্যের সঙ্গে সম্পর্কিত। যা আশা, বিজয় গৌরব এবং সাফল্যের প্রতীক।
মকর মকর একটি পৌরাণিক জলজ প্রাণী। এই প্রাণী বিভিন্ন প্রাণীর শরীরের অংশগুলোকে একত্রিত করে তৈরি। যা দেশের বৈচিত্র্যের মধ্যে ঐক্যের প্রতীক।
শার্দুল শার্দুল বা বাঘ হল আরেকটি প্রাণী। যা শক্তিশালী এবং সমস্ত জীবের মধ্যে শ্রেষ্ঠ। যা, দেশের মানুষের শক্তির প্রতীক।
হংস গণতন্ত্রে জনগণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ গুণ হল বিচক্ষণতার শক্তি এবং প্রজ্ঞা থেকে জন্ম নেওয়া আত্ম-উপলব্ধি। ভবনের উত্তর-পূর্বের প্রবেশদ্বারে হংস বা রাজহংস ভবনের এই অপরিহার্য বৈশিষ্ট্যই মনে করিয়ে দিচ্ছে।
এই ছয়টি প্রবেশপথের মধ্যে তিনটিকে আনুষ্ঠানিক প্রবেশদ্বার হিসেবে নকশা করা হয়েছে। বিশেষ অতিথিদের স্বাগত জানানোর জন্য এবং বিশেষ অনুষ্ঠানগুলোকে চিহ্নিত করার জন্য এই নকশা করা হয়েছে। এই আনুষ্ঠানিক প্রবেশদ্বারগুলো ভারতীয় শিল্প, সংস্কৃতি, নীতি এবং দেশপ্রেম প্রদর্শন করবে। যাকে যথাক্রমে জ্ঞান, শক্তি এবং কর্ম নামে নামকরণ করা হয়েছে। যা ভারতীয় জ্ঞান ব্যবস্থা, দেশপ্রেম এবং শিল্পের ঐতিহ্যের প্রতিনিধি।