কেন্দ্রীয় সরকারের চিতা অ্যাকশন পরিকল্পনা ২০২২ অনুসারে, প্রকল্পের স্বল্পমেয়াদি সাফল্যের অন্যতম মাইলফলক হল অন্তত, 'প্রথম বছরের জন্য নিয়ে আসা চিতাগুলোর ৫০%'-র বেঁচে থাকা। এটাকে যদি লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়, তবে বলতে হয় যে কুনো প্রকল্পটি ব্যর্থতার মুখে পড়েছে। ১২টি চিতার দ্বিতীয় ব্যাচ ১৮ ফেব্রুয়ারি দক্ষিণ আফ্রিকা থেকে আনা হয়েছে। মাত্র ছয় মাস পরে, তাদের মধ্যে চারটি মারা গেছে এবং একটি নিখোঁজ। তার আগে গত ১৭ সেপ্টেম্বর তাঁর জন্মদিনে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কুনোতে আটটি চিতার প্রথম দলকে ছেড়েছিলেন। তাদের এক বছর হতে এখনও ছয় সপ্তাহ বাকি।
তার মধ্যেই প্রথমবার ছাড়া চিতার সংখ্যা চারে নেমে এসেছে। যেখানে দুটো ইতিমধ্যেই মারা গেছে। আরও দুটো বনে পালনের অযোগ্য ঘোষিত হয়েছে। নামিবিয়ান জোড়ায় জন্ম নেওয়া চারটি শাবকের মধ্যে মাত্র একটিই এখন বেঁচে। সব মিলিয়ে এই প্রকল্পে মোট ২০টি চিতা আনা হয়েছে। যার মধ্যে ৪৫% ইতিমধ্যে মৃত। সংখ্যাটা কমে ১১-য় এসে ঠেকেছে। এখনও ছয় মাস বাকি আছে প্রকল্পের সময়সীমা শেষ হতে।
এই তথ্যগুলো বলছে, চিতাগুলো অন্যান্য শিকারিদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা বা স্থানীয়দের সঙ্গে সংঘর্ষের মত প্রত্যাশিত কোনও কারণে মারা যায়নি। প্রকৃতপক্ষে দুটি বাদে সমস্ত চিতাগুলোর মৃত্যু ঘটেছে ঘেরাটোপের মধ্যে। বেড়ার ওপাশে যে দুটি চিতা মারা গিয়েছে, তাদের মৃ্ত্যুর কারণ ছিল রেডিও কলার দ্বারা সৃষ্ট আঘাত। ওই দুটি চিতা ঘেরাটোপের মধ্যে দুটি প্রাণীর শিকারও করেছিল। বাল্মীক থাপারের মত পরিবেশবিদরা মনে করছেন, এই প্রকল্প গোড়া থেকেই ত্রুটিপূর্ণ ছিল। সেই কারণে এতগুলো চিতার মৃত্যু হয়েছে।
আরও পড়ুন- অযোগ্যতার কারণ তো বাতিল হয়েছে, সংসদে ফিরতে পারবেন রাহুল?
গত সেপ্টেম্বরে নামিবিয়া থেকে উড়ে আসা আটটি চিতার মধ্যে তিনটি চিতা সংরক্ষণ এরিয়া (সিসিএফ)-এ কার্যত বন্দি হয়ে কাটিয়েছে। এই তিনটি চিতার মধ্যে সাশা প্রথমে মারা গিয়েছে। বাকি দুটো জ্বালা এবং নাভাকে ১১ মাস আগে কুনোতে অবতরণের পর থেকে তাদের কখনও ঘেরাওয়ের বাইরে ছাড়া হয়নি। প্রকল্পের সাথে যুক্ত একাধিক বিশেষজ্ঞ এবং কর্মকর্তারা তিনটি চিতাকে গবেষণার কারণে ঘেরাওয়ের মধ্যে রাখতে পরামর্শ দিয়েছিলেন। এই প্রসঙ্গে প্রকল্পের এক আধিকারিক জানিয়েছেন, 'মূল পরিকল্পনা ছিল ২০টি চিতাকেই একত্রিত করা। কিন্তু, যেহেতু দক্ষিণ আফ্রিকানরা চিতাগুলো দিতে অনেক সময় নিয়েছে, তাই আমরা শুধুমাত্র নামিবিয়া থেকে আনা চিতাগুলো নিয়েই এগিয়েছিলাম।'