Advertisment

Explained: টাইটান নিয়ে টানটান উত্তেজনার অবসান, বিস্ফোরণে চূর্ণবিচূর্ণ জলযান, কারণটা কী?

ধ্বংসাবশেষের টুকরো পাওয়া গিয়েছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Titan

নিখোঁজ টাইটান ডুবোজাহাজের জন্য চার দিনব্যাপী অনুসন্ধান একটি দুঃখজনক সমাপ্তিতে এসে শেষ হয়েছে। জাহাজটিতে থাকা পাঁচ জনের সবাই মারা গেছেন বলে ধরে নেওয়া হয়েছে। ইউএস কোস্ট গার্ড (ইউএসসিজি) বৃহস্পতিবার এমনটাই জানিয়েছিল। কোস্ট গার্ড বা উপকূলরক্ষী বাহিনী তার আগে ঘোষণা করেছিল যে উদ্ধারকারীরা যে জায়গায় অনুসন্ধান চালাচ্ছেন, সেখানে একটি ধ্বংসস্তূপ খুঁজে পেয়েছেন। শুধু তাই নয়, উদ্ধারকারী দলগুলো টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষে ভ্রমণকারী নিখোঁজ টাইটান ডুবোজাহাজেরও সন্ধান পেয়েছে।

Advertisment

ধ্বংসাবশেষের খোঁজ

পরে আরও জানানো হয় যে, একটি রিমোট-কন্ট্রোলড আন্ডারওয়াটার সার্চ ভেহিকেল (ROV) সমুদ্রের তলায় ধ্বংসাবশেষের টুকরো খুঁজে পেয়েছে, যা টাইটান ডুবোজাহাজের বলে নিশ্চিত হওয়া গিয়েছে। সমুদ্রের তলায় ডুবে যাওয়া টাইটানিকের থেকে ওই ধ্বংসাবশেষের টুকরো পাওয়া গিয়েছে প্রায় ৪৮৮ মিটার (১,৬০০ ফুট) দূরে। উপকূলরক্ষী বাহিনীর কর্তা রিয়ার অ্যাডমিরাল জন মাউগার বৃহস্পতিবার বোস্টনে এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'উদ্ধার হওয়া ধ্বংসাবশেষ ডুবোজাহাজটির একটি বিপর্যয়কর বিস্ফোরণের ইঙ্গিত দিয়েছে।'

ডুবোজাহাজে কীভাবে বিস্ফোরণ ঘটল?

ঠিক কী ঘটেছিল, তা এখনও স্পষ্ট নয়। তবে, বিশেষজ্ঞরা অনুমান করছেন যে বিস্ফোরণটি রবিবার হয়েছিল। ডুবোজাহাজ টাইটান কার্বন ফাইবার এবং টাইটানিয়াম দিয়ে তৈরি হয়েছিল। যা ৪,০০০ মিটার গভীরতায় জলের তীব্র চাপ সহ্য করতে পারবে বলেই মনে করা হয়েছিল। যাত্রীদের জলের চাপ থেকে রক্ষা করার জন্য নৈপুণ্যের সঙ্গে এই ডুবোজাহাজের নকশাটি তৈরি করা হয়েছিল। এটা জরুরি ছিল এই কারণে যে, টাইটানিকের ধ্বংসাবশেষের কাছাকাছি, অর্থাৎ সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে ৩,৮০০ মিটার নীচে জলের চাপ প্রায় ৪০০ বায়ুমণ্ডল বা কোনও ব্যক্তির কাঁধে ৩৫টি হাতি থাকার সমান।

বিশেষজ্ঞদের বক্তব্য

অস্ট্রেলিয়ার অ্যাডিলেড বিশ্ববিদ্যালয়ের ইন্টিগ্রেটেড ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের শিপবিল্ডিং হাবের পরিচালক এরিক ফুসিল বলেছেন, 'যে কোনও গভীর জলের ডুবুরি মাত্রেই জানেন যে সমভূমি ঠিক কতটা আরামদায়ক। কারণে, সমুদ্রের তলদেশে যাওয়া ইঞ্জিনিয়ারিং দৃষ্টিকোণ থেকে মহাকাশে যাওয়ার চেয়ে কম চ্যালেঞ্জিং নয়।' আর এই কারণেই বিশেষজ্ঞরা গভীর তলদেশে ডুব দেওয়ার জন্য টাইটানিয়াম এবং কার্বন ফাইবারের ব্যবহার নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন। কারণ, তাদের বৈশিষ্ট্য আলাদা। টাইটানিয়াম স্থিতিস্থাপক এবং উপাদানের ওপর স্থায়ী চাপ ছাড়াই চাপের পরিসরের সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পারে। আর, কার্বন ফাইবার শক্ত এবং নন-ইলাস্টিক। তাতে সহজেই চিড় ধরে।

আরও পড়ুন- মিশরে মোদী, ঠিক কোথায় দাঁড়িয়ে দিল্লি-কায়রো সম্পর্ক?

ডুবোজাহাজ নির্মাণে ত্রুটি

এরিক ফুসিল শুক্রবার জানিয়েছেন যে এই উপকরণের পার্থক্যের জন্য ডুবোজাহাজ নির্মাণে ত্রুটি দেখা দিতে পারে। যাতে জলের চাপের কারণে রীতিমতো বিস্ফোরণ ঘটতে পারে। এক সেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে জাহাজটি ৩,৮০০ মিটার জলের চাপে নীচে চলে যেতে পারে। যার জেরে চারদিক থেকে চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যেতে পারে। এই বিস্ফোরণে ২০ মিলিসেকেন্ডেরও কম সময়ের মধ্যে সবার মৃত্যু হওয়ার কথা। যা মস্তিষ্কের তথ্য সঞ্চালনের চেয়েও দ্রুতগতিতে কাজ করবে।

titan submarine titanic
Advertisment