The Uttarakhand government: নতুন বিধিতে বিবাহ, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মত নানাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবারই বিধানসভায় এই বিল পেশ করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
The Uttarakhand government: নতুন বিধিতে বিবাহ, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মত নানাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে। মঙ্গলবারই বিধানসভায় এই বিল পেশ করেছে উত্তরাখণ্ড সরকার।
UCC-Uttarakhand: বিধানসভায় উত্তরাখণ্ডের মন্ত্রীদের সঙ্গে মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। (ছবি-পিটিআই)
Uttarakhand civil code in Assembly: উত্তরাখণ্ড সরকার মঙ্গলবার বিধানসভায় ইউনিফর্ম সিভিল কোড (ইউসিসি) বা অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, ২০২৪ পেশ করেছে। নতুন বিধিতে বিবাহ, বিচ্ছেদ, উত্তরাধিকারের মত নানাক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পরিবর্তনের কথা জানিয়েছে।
Advertisment
মুসলমানদের বিয়ের বিধিতে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
মুসলিম সমাজের বিয়ের প্রথা খারিজ করা হয়েছে।
মুসলমানদের উত্তরাধিকার আইনে পরিবর্তনের কথা বলা হয়েছে।
মুসলমানদের বিয়ের বয়সসীমায় পরিবর্তন প্রথমত, প্রস্তাবিত ইউসিসি হিন্দু বিবাহ আইন, ১৯৫৫ এবং বিশেষ বিবাহ আইন, ১৯৫৪-র সঙ্গে সঙ্গতি রেখে মুসলিম মহিলা এবং পুরুষদের বিয়ের ন্যূনতম বয়স ১৮ থেকে ২১ করেছে। যার বিরুদ্ধে ইতিমধ্যে আদালতে আবেদন জমা পড়েছে। কারণ, মুসলিম বিবাহ আইন অনুযায়ী ১৩ বছরেই বিয়ে করা যায়। যেহেতু প্রোটেকশন অফ চিলড্রেন ফ্রম সেক্সুয়াল অফেন্সেস (পকসো) অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে যৌন কার্যকলাপকে অপরাধ হিসেবে গণ্য করেছে, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ আইন অপ্রাপ্তবয়স্কদের মধ্যে বিবাহকে নিষিদ্ধ করেছে, তাই মুসলিমদের বিবাহের বয়সজনিত আইনের সঙ্গে এই দুটি আইনের বিরোধ ছিল। ২০২২-এর ডিসেম্বরে, জাতীয় মহিলা কমিশন অপ্রাপ্তবয়স্কদের বিয়ে করার অনুমতি দেওয়ার প্রথাকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানায়। ভারতের প্রধান বিচারপতি ডি ওয়াই চন্দ্রচূড়ের নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে মামলাটি বিচারাধীন।
Uttarakhand-UCC: এতে কি মুসলিম সমাজের অগ্রগতি ঘটবে? (প্রতীকী ছবি)
Advertisment
মুসলমানদের উত্তরাধিকারে পরিবর্তন শুধু তাই নয়, নতুন অভিন্ন দেওয়ানি বিধি মুসলমানদের উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রেও ব্যাপক পরিবর্তন আনছে। বর্তমানে মুসলমানরা- টেস্টামেন্টারি উত্তরাধিকার (ঐচ্ছিক উত্তরাধিকার) এবং ইন্টেস্টেট উত্তরাধিকার (অনৈচ্ছিক উত্তরাধিকার), এই দুই পদ্ধতিতে উত্তরাধিকার পান। তাঁরা তাঁদের সম্পত্তির এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত পছন্দের কাউকে উইলের মাধ্যমে দান করতে পারেন। অবশিষ্ট সম্পত্তি অথবা উইল না-থাকলে সম্পূর্ণ সম্পত্তি কুরআন এবং হাদিসে উল্লিখিত পদ্ধতিতে ভাগ হয়। যা নিশ্চিত করে যে, আইনি উত্তরাধিকারীদের সম্পূর্ণভাবে বর্জন করা যায় না। প্রস্তাবিত ইউসিসি বলছে, মৃত ব্যক্তি উইলে তাঁর এক-তৃতীয়াংশই নয়। সম্পূর্ণ সম্পত্তির উত্তরাধিকারীই কাউকে করে যেতে পারবেন।
উত্তরাখণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি অন্যদের সঙ্গে দেরাদুনের বিধানসভা ভবনে ভারতের সংবিধানের একটি অনুলিপি হাতে ধরেছেন।
ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন অনুসরণ অভিন্ন দেওয়ানি বিধি, ভারতীয় উত্তরাধিকার আইন, ১৯২৫-এর বেশিরভাগ বিধানই বজায় রেখেছে। ইন্টেস্টেট (অনৈচ্ছিক) উত্তরাধিকারের ক্ষেত্রে, সম্পত্তিটি ক্লাস-১ বা প্রথম শ্রেণির উত্তরাধিকারীদের কাছে চলে যাবে। এই তালিকায় আছেন সন্তান, বিধবা পত্নী, পিতামাতা। শ্রেণি-১ বা এই জাতীয় কোনও উত্তরাধিকারী না থাকলে, সম্পত্তিটি ক্লাস-২ বা দ্বিতীয় শ্রেণির উত্তরাধিকারীদের কাছে চলে যাবে। যাঁদের মধ্যে আছেন ভাইবোন, ভাইয়ের ছেলেমেয়ে, ভাগ্নে ইত্যাদি। যদি এমনও কোনও উত্তরাধিকারী না-থাকেন, তবে মৃত ব্যক্তির সঙ্গে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত যে কেউ এই সম্পত্তি পাবেন।
মুসলিম সমাজের বিয়ের প্রথা খারিজ অভিন্ন দেওয়ানি বিধিতে বহুবিবাহ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। এই বিলের ধারা ৪-এর অধীনে বিবাহের শর্ত হিসেবে বলা হয়েছে, বিয়ের সময় কারও জীবিত স্বামী বা স্ত্রী থাকতে পারবে না। এই বিধি স্পষ্টভাবে নাম না-করেই মুসলিম বিবাহ প্রথা- ইদ্দত, নিকাহ হালালাকে খারিজ করে দিয়েছে। যেমন অভিন্ন দেওয়ানি বিধির ধারা ৩০-এ বলা হয়েছে, বিবাহ বিচ্ছেদ হলে অন্য কাউকে বিয়ে করা যেতে পারে। তবে, তার জন্য মুসলিম ব্যক্তিগত আইনের কায়দা অনুযায়ী মধ্যে অন্য একজনকে বিয়ে বা হালালা নিকাহ করার দরকার নেই। যদি, হালালা নিকাহর মত কিছু করতে কাউকে বাধ্য করা, উৎসাহিত করা বা প্ররোচিত করা হয়, তবে নতুন দেওয়ানি বিধির ৩২ ধারা অনুযায়ী দোষীর তিন বছর পর্যন্ত কারাদণ্ড এবং এক লক্ষ টাকা পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে।