বর্তমানে টানা বৃষ্টিতে বিপর্যস্ত উত্তর ভারতের একাংশ। প্রবল ক্ষতির মুখে পড়েছে উত্তরাখণ্ড দিল্লি, হরিয়ানা, জম্মু-কাশ্মীর, পঞ্জাব, হিমাচলপ্রদেশ-সহ উত্তর ভারতের বিভিন্ন রাজ্য। দুর্যোগপূর্ণ পরিস্থিতিতে উত্তর ভারতে এখনও পর্যন্ত ১০০ জনের মৃত্যু হয়েছে। তার মধ্যে সবচেয়ে খারাপ পরিস্থিতি হিমাচল প্রদেশের। সেখানে এখনও পর্যন্ত ৮০ জনের মৃত্যু হয়েছে। আহত ৯২ জন। নিখোঁজ ৮ জনেরও বেশি।
রাজধানী দিল্লিতেও যমুনা নদী বিপদসীমার ওপর দিয়ে বইছে। যমুনা নদীর সেতুতে যান চলাচল এবং ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। পরিবর্তন হয়েছে বিভিন্ন ট্রেনের রুট। বন্ধ শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। টানা বৃষ্টিতে দিল্লির একাধিক জায়গা এখন জলের তলায়। দিল্লির পাশের রাজ্য হরিয়ানায় লাগাতার বৃষ্টিতে ৬০০ গ্রাম জলের তলায় চলে গিয়েছে। খোদ হরিয়ানার স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অনিল ভিজের জেলা অম্বালার ৪০ শতাংশ চলে গিয়েছে জলের তলায়। শুধু তাই নয়, হরিয়ানার ৭ নম্বর জাতীয় সড়ক এখন জলের নীচে। এর পাশাপাশি, উত্তর ভারতের অন্যান্য রাজ্যগুলোও বৃষ্টিতে বর্তমানে বিপর্যস্ত।
এই যখন উত্তরভারতের ছবি, সেই সময় উলটো ছবি ধরা পড়ছে দেশের দক্ষিণ ও পশ্চিমের দুই রাজ্য কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে। সেখানে কৃষকরা বৃষ্টির প্রত্যাশায় বসে থাকলেও সব খটখটে। এই সময় ডাল চাষ হয়। তার জন্য জল দরকার। কিন্তু, সব শুকনো থাকায় কৃষকদের চাষের জন্য প্রয়োজনীয় জল মিলছে না। যার জেরে কৃষকরা ভয়ংকর সমস্যায় পড়েছেন। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের হিসেব অনুযায়ী, চলতি খরিফ মরসুমে জুন থেকে ৯ জুলাই পর্যন্ত ডাল চাষ করা হচ্ছে মোট ৪৬.৩২ লক্ষ হেক্টর জমিতে। গত বছর একই সময়ে এই চাষ করা হয়েছিল ৫৬.৪৩ লক্ষ হেক্টর জমিতে। ফলে গত বছরের থেকে এবছর ১৭.৯% কম জমিতে চাষ করা হচ্ছে।
আরও পড়ুন- জুলাইয়ে ব্যাপক বৃষ্টি, কতটা অপ্রত্যাশিত, কেনই বা হচ্ছে?
এই কম জমিতে চাষের কারণ, ডাল চাষের জন্য নির্ধারিত এলাকায় বর্ষার ব্যাপক ঘাটতি দেখা দিয়েছে। আবহাওয়া দফতরের হিসেব অনুযায়ী বর্তমান বর্ষার মরশুমে ১ জুন থেকে ১১ জুলাই পর্যন্ত মহারাষ্ট্রে স্বাভাবিকের চেয়ে গড়ে ঐতিহাসিক ২৩% কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। কর্ণাটকে ২৬.২% এবং তেলেঙ্গানায় ৩০.৯% কম বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় কৃষি মন্ত্রকের আশঙ্কা, এসবের প্রভাব পড়বে ডালের উৎপাদনে। আর, জোগান বা উৎপাদন কম হওয়ায় আগামী বাড়তে পারে ডালের দাম।