Advertisment

Explained: জ্ঞানবাপি মসজিদ সমীক্ষায় এলাহাবাদ হাইকোর্টের অনুমতি, মামলার সময়সারণি

জেলা আদালত সমীক্ষার গোটা প্রক্রিয়াটি ভিডিওগ্রাফির নির্দেশ দিয়েছিল।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Gyanvapi Mosque

মুসলিম ভক্তরা ২০২২ সালের ২৭ মে, বারাণসীর জ্ঞানবাপি মসজিদে নিরাপত্তার মধ্যে শুক্রবারের প্রার্থনা করতে পৌঁছেছেন।

বৃহস্পতিবার (৩ আগস্ট) জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটির আবেদন খারিজ করে দিল এলাহাবাদ হাইকোর্ট। জ্ঞানবাপী মসজিদ প্রাঙ্গণে 'বৈজ্ঞানিক তদন্ত, সমীক্ষা, খনন' করার নির্দেশ দিয়েছিল বারাণসী জেলা আদালত। সেই আদেশের বিরুদ্ধেই জ্ঞানবাপী মসজিদ কমিটির চ্যালেঞ্জ খারিজ করে দিয়েছে এলাহাবাদ হাইকোর্ট। এই ব্যাপারে এলাহাবাদ হাইকোর্ট বলেছে, 'বিচারের স্বার্থেই বৈজ্ঞানিক সমীক্ষা প্রয়োজন।' এর আগে বারাণসী জেলা আদালতের নির্দেশে আর্কিওলজিক্যাল সার্ভে অফ ইন্ডিয়া (এএসআই) ২৪ জুলাই মসজিদের সমীক্ষা শুরু করেছিল।

Advertisment

সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ
কিন্তু, মসজিদ কমিটি সেই সমীক্ষার বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হয়েছিল। এরপরই সমীক্ষা বাতিলের এবং মসজিদ কমিটিকে হাইকোর্টের দ্বারস্থ হওয়ার নির্দেশ দিয়েছিল শীর্ষ আদালত। সেই অনুযায়ী, এলাহাবাদ হাইকোর্টের দ্বারস্থও হয়েছিল জ্ঞানবাপি মসজিদ কমিটি। বৃহস্পতিবার এলাহাবাদ হাইকোর্ট বারাণসী জেলা আদালতের রায়ের বিরুদ্ধে দাখিল করা মসজিদ কমিটির সেই আবেদনই খারিজ করে দিল। কাশী বিশ্বনাথ মন্দিরের ঠিক পাশেই রয়েছে জ্ঞানবাপি মসজিদ।

কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংসের পর নির্মিত
ঐতিহাসিক নথি অনুসারে, ১৭ শতকে মুঘল সম্রাট আওরঙ্গজেবের নির্দেশে মূল কাশী বিশ্বনাথ মন্দির ধ্বংস করার পর নির্মিত হয়েছিল। বর্তমান মন্দিরটি পরবর্তীকালে ১৮ শতকের শেষের দিকে রানি অহল্যাবাঈ হোলকারের নির্দেশে মসজিদের পাশে নির্মিত হয়েছিল। মসজিদের চারপাশ নিয়ে কয়েক দশকের পুরনো মামলা-মোকদ্দমা গত বছর পাঁচ জন হিন্দু মহিলা মসজিদ চত্বরের বাইরের দেওয়ালে মা স্রিংগার গৌরীর পূজা করার অধিকার চাওয়ার পরে গতি পেয়েছে। বিষয়টি তারপরই ম্যাজিস্ট্রেট আদালত, সেখান থেকে জেলা আদালত, সুপ্রিম কোর্ট, এলাহাবাদ হাইকোর্টে গিয়েছে।

তাহলে বারাণসী আদালতের নির্দেশ কী ছিল?
এই বছর ২১ জুলাই, বারাণসী জেলা আদালত পুরাতত্ত্ব বিভাগকে দিয়ে মসজিদ প্রাঙ্গনে 'বৈজ্ঞানিক তদন্ত, সমীক্ষা এবং খনন' চালানোর নির্দেশ দিয়েছিল। এই ব্যাপারে জেলা ও দায়রা জজ অজয়কৃষ্ণ বিশ্বেশা এএসআইকে, 'বিল্ডিংয়ের তিনটি গম্বুজের ঠিক নীচে একটি গ্রাউন্ড পেনিট্রেটিং রাডার সমীক্ষা করতে এবং প্রয়োজনে খননের নির্দেশ' দিয়েছিলেন।

এএসআই ডিরেক্টরকে দেওয়া নির্দেশ
এর পাশাপাশি, আদালত এএসআই ডিরেক্টরকে নির্দেশ দিয়েছিল, 'বর্তমান কাঠামো একটি হিন্দু মন্দিরের পূর্ব থেকে বিদ্যমান কাঠামোর ওপর নির্মিত কি না, তা খতিয়ে দেখতে।' একইসঙ্গে, বিল্ডিংটিতে পাওয়া সমস্ত প্রত্নবস্তুর একটি তালিকা প্রস্তুত করতেও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত। সব মিলিয়ে মসজিদের ব্যাপারে বিজ্ঞানসম্মত তদন্ত করা, নির্মাণের বয়স এবং প্রকৃতি খুঁজে বের করারও নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।

জেলা আদালত বিষয়টি কীভাবে নিল?
২১ জুলাই বারাণসী জেলা আদালতের আদেশটি মা শ্রিংগার গৌরীর পূজা করার অধিকার চেয়ে হিন্দু মহিলাদের দায়ের করা দেওয়ানি মামলার জেরে এসেছিল। আদালত স্পষ্ট করেছে যে সমীক্ষাটি উজু খানা বা অযু এলাকাকে বাদ রেখেই করা হবে। এই উজুখানা গত বছর সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে সিল করে দেওয়া হয়েছিল। কারণ, হিন্দু মামলাকারীরা দাবি করেছেন যে তাঁরা সেখানে একটি শিবলিঙ্গ চিহ্নিত করেছেন।

আরও পড়ুন- সরকারের আইআইএম বিল কেন স্বায়ত্তশাসন নষ্টের আশঙ্কার জন্ম দিয়েছে?

মসজিদ কমিটির দাবি
যাইহোক, মামলায় মসজিদ কমিটি দাবি করেছে, যে বস্তুটি পাওয়া গেছে সেটি একটি ফোয়ারা। কোনও শিবলিঙ্গ নয়। জেলা আদালত নির্দেশ দিয়েছিল যে সমীক্ষার গোটা প্রক্রিয়াটি ভিডিওগ্রাফি করা হবে। আর, ২০২৩ সালের ৪ আগস্ট এই ব্যাপারে প্রতিবেদন জমা দেওয়া হবে আদালতে। কিন্তু, মামলাটি এলাহাবাদ হাইকোর্টে চলে যায়। এর আগে বারাণসী জেলা আদালত চলতি বছরের ১৬ মে এলাহাবাদ হাইকোর্টের নির্দেশেই মসজিদে এএসআই সমীক্ষায় সম্মত হয়েছিল।

mosque High Court Temple
Advertisment