আরও একবার নোট বন্দী! লম্বা লাইনে দাঁড়িয়ে কালঘাম ঝড়বে সাধারণ মানুষের?? গতকালই রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়া জানিয়েছে, ক্লিন নোট পলিসির আওতায় অবিলম্বে ২০০০ টাকার নোট বন্ধ করার পরামর্শ দিয়েছে। এখন প্রশ্ন হল কেন চালু করা হয়েছিল ২০০০ টাকার নোট?
২০০০ টাকার নোট ২০১৬ সালের নভেম্বরে চালু হয়েছিল। এর উদ্দেশ্য ছিল যে ৫০০ এবং ১০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের পরে, অর্থনীতিতে মুদ্রার প্রয়োজনীয়তা দ্রুত মেটানো। ২০০০ টাকার নোটের বেশিরভাগই ২০১৭ সালের মার্চের আগে জারি করা হয়েছিল। পাশাপাশি এই নোটের আনুমানিক জীবনকাল মাত্র ৪ থেকে ৫ বছর।
রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়েছে, অন্যান্য মূল্যের ব্যাংক নোটের মজুদ সাধারণের অর্থের প্রয়োজন মেটাতে যথেষ্ট। এই সব দিক মাথায় রেখে ভারতীয় রিজার্ভ ব্যাংক ‘ক্লিন নোট পলিসির’ আওতায় ২০০০ টাকার নোট প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত নিয়েছে। গত কয়েক মাস ধরে বাজারে সেভাবে ২০০০ টাকার নোট দেখা যায়নি। পাশাপাশি কেন্দ্র এবিষয়ে সংসদে জানিয়েছে, গত ২ বছর সেভাবে ২০০০ টাকার নোট ছাপাও হয়নি।
কীভাবে পুরনো নোট বদলাবেন ?
এখন পর্যন্ত যে নিয়ম রয়েছে, সেই অনুযায়ী, ব্যাঙ্কে আপনি পুরনো নোট বদলাতে গেলে প্রথমে একটি নির্দিষ্টি ফর্ম্যাটে আপনার কাছে কিছু তথ্য চাইবে। তা পূরণ করতে হবে। এরপর নিজের বৈধ পরিচয়পত্রের একটি ফটো। কেউ যদি ওই সময়ের মধ্যে ২০০০ টাকার নোট বদল করতে না পারেন তাহলে কী হবে? এবিষয়ে রিজার্ভ ব্যাংক জানিয়েছে পুরো প্রক্রিয়ার জন্য চার মাসের বেশি সময় দেওয়া হয়েছে জন সাধারণকে ওই সময়ের মধ্যেই এই সুবিধা গ্রহণের পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে।
ব্যাংকের শাখা থেকে ২০০০ টাকা নোট বদলের জন্য কী গ্রাহক হওয়া প্রয়োজন?
না একজন নন অ্যাকাউন্ট হোল্ডার যে কোন ব্যাংকের শাখায় ২০,০০০ টাকার সীমা পর্যন্ত ২০০০ এর নোট বদল করে নিতে পারেন। ব্যাবসা বা অন্য কোন কারণে ২০,০০০ এর বেশি নগদ বদলের ক্ষেত্রে ওই টাকা কোন বাঁধা ছাড়াই অ্যাকাউন্টে জমা করা যেতে পারে। বিনিময় সুবিধার জন্য ব্যাংকের তরফে কোন চার্জ ধার্য করা হবে না।বিনিময় সুবিধাটি ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২৩ পর্যন্ত RBI-এর ১৯টি আঞ্চলিক অফিসে পাওয়া যাবে যেখানে ইস্যু বিভাগ রয়েছে।
এখন প্রশ্ন হল কালো টাকা রুখতে যে তড়িঘড়ি ৫০০ এবং ১০০০ এর নোট বাতিল করার পাশাপাশি বাজারে নতুন ৫০০ এবং ২ হাজার টাকার নোট আনা হল তাতে কী উদ্দেশ্য পূরণ হয়েছে? RBI এ সম্পর্কে জানিয়েছে বেশিরভাগ কালো টাকা সোনা দানা সম্পত্তির মধ্যেই লুকিয়ে ছিল।এছাড়াও ২০০০ টাকার নোট বিতরণের ক্ষেত্রেও সমস্যায় পড়তে হয়। প্রথমে RBI আইনের ২৪(২) ধারায় নোট বিতরণের অনুমতি দিলেও পরে সেটি বদলে ২৪(১) ধারায় কেন্দ্রকে ব্যাংক নোট ইস্যু করার ক্ষমতা দেয়। পাশাপাশি নতুন ২০০০ টাকার নোটের আকারের কারণে রাতারাতি Atm মেশিনে প্রযুক্তিগত বেশ কিছু বদল আনতে হয়। এরপর আসছে নিরাপত্তার বিষয়।
২০১৬ সালের ২৬ নভেম্বর ২০০০ টাকার জাল নোটের খবর প্রথম সামনে আসে। পুরনো ১০০০ টাকার নোটের তুলনায় নতুন ২০০০ টাকার নোট জাল করা তুলনামূলক ভাবে সহজ বলেই জানা যায়। এখন RBI যে নির্দেশ দিয়েছে তাতে ২০০০ টাকার নোটের বদল একবারে ২০,০০০ টাকার বেশি হবে না। এক্ষেত্রে প্রশ্ন কেউ যদি পরিবারের কোন অনুষ্ঠানের জন্য ২ লক্ষ টাকা নগদ ২০০০ টাকার নোটে সঞ্চয় করেন তাহলে ঐ ব্যক্তিকে সেটি বিনিময় করতে ১০ বার লাইনে দাঁড়াতে হবে। নোট বন্দিতে যে হয়রানি সাধারণ মানুষকে হতে হয়েছে তারই পুনরাবৃত্তি আবার হবে না তো উঠেছে প্রশ্ন।