নিউইয়র্কের ম্যানহাটন আদালত বৃহস্পতিবার প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে তার ২০১৬-র নির্বাচনী প্রচারের সময় নীল ছবির অভিনেত্রী স্টর্মি ড্যানিয়েলসকে অর্থ দেওয়ার এক মামলায় অভিযুক্ত করেছে। ট্রাম্পই প্রথম মার্কিন প্রেসিডেন্ট যার বিরুদ্ধে এইরকম অপরাধের অভিযোগ আনা হয়েছে। এখন পর্যন্ত অভিযোগ প্রমাণিত হয়নি। তবে বিভিন্ন সংবাদমাধ্যম সূত্রে খবর ট্রাম্পের বিরুদ্ধে ৩০টি ব্যবসায়িক জালিয়াতির অভিযোগ রয়েছে।
যা হতে পারে:
ম্যানহাটন ডিস্ট্রিক্ট অ্যাটর্নি (ডিএ) বা জেলা আইনজীবী অ্যালভিন ব্র্যাগের তরফে জানানো হয়েছে, 'মিস্টার ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। আত্মসমর্পণের সুযোগ দিতে তাঁর আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়েছে।' এই প্রসঙ্গে সংবাদমাধ্যমনিউ ইয়র্ক টাইমস রিপোর্ট করেছে যে ট্রাম্প অভিযোগের মুখোমুখি হবেন বলে আশা করা হচ্ছে। অন্য আইনি প্রক্রিয়ায় যেখানে একজন আসামিকে বিচারক বা ম্যাজিস্ট্রেটের সামনে হাজির করা হয়, সেভাবেই ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আইনি প্রক্রিয়া চলবে। এই প্রক্রিয়া শুরু হবে আগামী সপ্তাহের শুরুতে।
ট্রাম্পের দাবি:
ট্রাম্পের দাবি, তিনি 'সম্পূর্ণ নির্দোষ'। শুধু তাই নয়, তাঁর বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগকে 'ইতিহাসের সবচেয়ে বড় রাজনৈতিক নিপীড়ন এবং নির্বাচনী হস্তক্ষেপ' বলে চিহ্নিত করেছেন। অবশ্য ট্রাম্পের বিরুদ্ধে অভিযোগ নতুন কিছু নয়। একের পর এক অভিযোগ রয়েছে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে। যেমন, ২০২০ সালে জর্জিয়ার নির্বাচনের ফলাফল উলটে দেওয়ার অভিযোগ। অফিস ছাড়ার পরও সরকারি নথি আটকে রাখার অভিযোগ। ২০২১ সালের ৬ জানুয়ারি হিংসায় উসকানি দেওয়ার অভিযোগ। এমন নানা অভিযোগ রয়েছে ট্রাম্পের বিরুদ্ধে।
আরও পড়ুন- জয়পুর বিস্ফোরণ মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত চার আসামি বেকসুর খালাস, তদন্তের মুখে তদন্তকারী
ট্রাম্পের বিরুদ্ধে টাকা দেওয়ার অভিযোগ:
প্রেসিডেন্ট নির্বাচনী প্রচারের শেষ সপ্তাহে ২০১৬ সালের অক্টোবরে নীল ছবির নায়িকা ড্যানিয়েলসকে ১ লক্ষ ৩০ হাজার মার্কিন ডলার দেওয়া সংক্রান্ত মামলায় ট্রাম্পকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ২০০৬ সালের জুলাই মাসে ট্রাম্পের সঙ্গে ওই পর্নস্টারের যৌন সম্পর্কের অভিযোগ ছিল। ট্রাম্পের আশঙ্কা ছিল, সেসব নিয়ে ড্যানিয়েলস মুখ খুললে নির্বাচনে প্রভাব পড়বে। তাই তিনি চেয়েছিলেন স্টোর্মি ড্যানিয়েলস মুখ বন্ধ রাখুক।
নীরবতার বিনিময়ে প্রাক্তন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প বিপুল অর্থ ড্যানিয়েলসকে দিয়েছিলেন। ট্রাম্পের তৎকালীন আইনজীবী মাইকেল কোহেন তাঁর হয়ে এই অর্থ দিয়েছিলেন। কোহেন একটি 'হোম ইকুইটি লাইন অফ ক্রেডিট'-এর মাধ্যমে ড্যানিয়েলসকে অর্থ দিয়েছিলেন। পরে ট্রাম্পের নিজস্ব সংস্থা ট্রাম্প অর্গানাইজেশন সেই অর্থ শোধ করেছিল। যা আসলে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের নির্বাচনী আইন ভঙ্গের শামিল বলেই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।