সোমবার ভোরবেলা থেকে ধারাবাহিক শক্তিশালী ভূমিকম্পে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে তুরস্ক। প্রথম কম্পনের মাত্রা ছিল ৭.৮। তুরস্কে গত এক শতাব্দীরও বেশি সময়ের হিসেব করলে দেখা যাবে, এটাই সবচেয়ে শক্তিশালী কম্পনের মাত্রা। তবে এতেই রেহাই পাননি তুরস্কবাসী। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ভূতাত্ত্বিক সমীক্ষার (ইউএসজিএস) ওয়েবসাইট বলছে ১২ ঘণ্টার ব্যবধানে তুরস্কে একই এলাকায় ৪ বা তার বেশি মাত্রার অন্তত ৪১টি কম্পন নথিভুক্ত হয়েছে। অবশ্য এই পরবর্তী কম্পনগুলোর মধ্যে বেশিমাত্রার কম্পন হয়েছে মাত্র একবার। রিখটার স্কেলে যার মাত্রা ছিল ৭.৫।
দক্ষিণ-পূর্ব তুরস্ক আবার সিরিয়া সীমান্তের কাছে। ফলে, সেখানেও অনুভূত হয়েছে কম্পন। তুরস্কের মত সিরিয়াও কম্পনে সাংঘাতিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শুধুমাত্র সোমবার সন্ধ্যার মধ্যেই কমপক্ষে ১,৭০০ জন এই ভূমিকম্পে প্রাণ হারিয়েছেন। যার মধ্যে তুরস্কেই সংখ্যাটা ছিল হাজারেরও বেশি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বড় ভূমিকম্পে আফটার শক হয়। এই ৪১টি পরবর্তী কম্পন হল সেই আফটার শক। বিশেষজ্ঞদের আশঙ্কা, এই আফটার শক ৪১-এ থেমে থাকবে না। আগামী কয়েকদিন এমনকী, কয়েক সপ্তাহজুড়ে আফটারশক চলবে। যার ফলে, আফটার শকের সংখ্যাটাও আরও বাড়বে।
তুরস্ক এবং সিরিয়া একটি ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল। যে অঞ্চলে ভূমিকম্প হয়েছে, সেটি 'আনাতোলিয়া টেকটোনিক ব্লক' নামে পরিচিত। এই অঞ্চল 'সিসমিক ফল্ট লাইন' বরাবর অবস্থিত। যা উত্তর, মধ্য এবং পূর্ব তুরস্কের মধ্যে দিয়ে গিয়েছে।
এটি ভূমিকম্পের সক্রিয় অঞ্চল। তবে, সেটা হিমালয় অঞ্চলের মতো অতিসক্রিয় ভূমিকম্পপ্রবণ অঞ্চল নয়। হিমালয় অঞ্চল ভূমিকম্পের দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্বের সবচেয়ে বিপজ্জনক অঞ্চলগুলোর অন্যতম।
আরও পড়ুন- ভয়াবহ ভূমিকম্প! ঘুমচোখেই ধ্বংসস্তূপে চাপা পড়ে মৃত্যুমিছিলে ১,৩০০, মাত্রা কত কম্পনের?
বড় ভূমিকম্প, অর্থাৎ ৫ বা তার বেশি মাত্রার ভূমিকম্প সাম্প্রতিক বছরগুলোয় খুব একটা ঘনঘন হয়নি। মার্কিন ভূতাত্ত্বিক সংস্থার মতে, ১৯৭০ সাল থেকে এই অঞ্চলে ৬ বা তার বেশি মাত্রার মাত্র তিনটি ভূমিকম্প হয়েছে। এই অঞ্চলে সর্বশেষ বড় ভূমিকম্পটি হয়েছিল ২০২০ সালের জানুয়ারি মাসে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই অঞ্চলের ভূমিকম্প আফ্রিকান, ইউরেশীয় এবং আরবীয় প্লেটের মধ্যে সংঘর্ষের ফলে ঘটছে। এতে আরবীয় প্লেটটি উত্তর দিকে সরে যাচ্ছে। এর ফলে আনাতোলিয়ান প্লেট সামান্য পশ্চিম দিকে সরেছে। আর সেখানেই তুরস্ক অবস্থিত।
Read full story in English