কম নিরাপত্তা কর্মী, নতুন সংসদ ভবনের হাউসের ফ্লোর আর দর্শক গ্যালারির মধ্যে উচ্চতা হ্রাস, দেরিতে দর্শনার্থীদের সংখ্যা বৃদ্ধি, জুতো পরীক্ষা না-করা- এইগুলো বুধবারের লোকসভার নিরাপত্তা লঙ্ঘনের কারণের অন্যতম বলেই পার্লামেন্ট সিকিউরিটি সার্ভিসেস এবং দিল্লি পুলিশের কর্তারা দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে জানিয়েছেন।
পান্নুনের বৈঠক
সূত্রের খবর, দিল্লি পুলিশের নিরাপত্তা শাখা সংসদ এবং এর আশপাশে নিরাপত্তা ব্যবস্থা পর্যালোচনার জন্য একটি বৈঠক করেছে। খালিস্তানপন্থী বিচ্ছিন্নতাবাদী নেতা গুরপতবন্ত সিং পান্নুন ২০২৩ সালের ৬ ডিসেম্বর, '১৩ ডিসেম্বর বা তার আগে' সংসদে হামলার হুমকি দেওয়ার পরে এই ঘটনা ঘটল। এই ব্যাপারে উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিকরা নিশ্চিত করে জানিয়েছেন যে একটি বৈঠক করা হয়েছে। বৈঠকে মোতায়েন পুলিশের সংখ্যা বাড়ানোর ব্যাপারে আলোচনা হয়েছে। তবে, এই হামলার সঙ্গে খালিস্তানি নেতা পান্নুনের হুমকির কোনও যোগ নেই বলেই মনে করছেন তদন্তকারীরা।
রক্ষীর সংখ্যা বৃদ্ধি
পুলিশ এই কথা বললেও, গত মাসেই সংসদে নিরাপত্তারক্ষীর সংখ্যা বাড়ানো হয়েছিল। দিল্লি পুলিশ, সংসদে মোতায়েন পুলিশকর্মীর সংখ্যা বাড়িয়ে ২৫০ থেকে ৩০০ করেছে। দিল্লি পুলিশ সূত্রে খবর, সাগর শর্মা এবং মনোরঞ্জন ডি দুপুর ১টার কিছু আগে দর্শক গ্যালারিতে পৌঁছেছিলেন। মোট ছয়টি গ্যালারি, যেখানে এমপিরা বসেন, তার ঠিক ওপরে এই দর্শকাসন। যেখানে সাংসদরা বসেন, তার থেকে গ্যালারির সামনের সারিটি প্রায় সাড়ে দশ ফুট ওপরে।
গ্যালারির সামনে গ্লাস
এই উচ্চতা আগের সংসদ ভবনের তুলনায় কম। যা দেখে তদন্তকারীরা মনে করছেন, এই উচ্চতা থেকে লাফ দেওয়া একজন শক্তসমর্থ পুরুষের পক্ষে অস্বাভাবিক কিছু নয়। এক তদন্তকারী বলেন, 'এ ধরনের ঘটনা রোখার জন্য কোনও বাধা বা প্রাচীর, দর্শকাসনের সামনে নেই। এরপরই লোকসভার স্পিকার এবং বিভিন্ন কক্ষের নেতাদের বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়েছে, দর্শক গ্যালারির সামনে গ্লাস বসানো হবে।
বেড়েছে দর্শক
এই ব্যাপারে পার্লামেন্ট সিকিউরিটি সার্ভিসের একজন কর্মী জানিয়েছেন, এর পাহারায় মোতায়েন রয়েছে সিআরপিএফ আর দিল্লি পুলিশ। তদন্তকারীরা ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেছেন যে, 'প্রতিদিন শত শত দর্শক' আসছেন, বিশেষ করে নতুন সংসদ ভবন উদ্বোধনের পর থেকেই দর্শকের সংখ্যা বেড়েছে। আর, এই সময় সংসদ ভবনে কর্মী সংখ্যা সীমিত। ফলে, সমস্যা তৈরি হচ্ছে।
আরও পড়ুন- সক্রিয় কিডনি পাচার চক্র! ধরা পড়লে কী হতে পারে জানেন?
জুতো পরীক্ষা হয় না।
সূত্রের খবর, সাধারণত সংসদ ভবনের ভিতরে ৩০১ জন নিরাপত্তা কর্মী মোতায়েন থাকেন। তবে, বুধবার ১৭৬ জন ছিলেন। এই ব্যাপারে এক আধিকারিক বলেন, 'লোকজন সাধারণত বাসে আসেন। আমাদের প্রত্যেকের পাস এবং আইডি পরীক্ষা করা উচিত।' অন্য এক আধিকারিক জানিয়েছেন, দুই ব্যক্তি তাঁদের জুতোর মধ্যে রঙিন ধোঁয়ার ক্যানিস্টার লুকিয়ে রেখেছিলেন। জুতো সাধারণত পরীক্ষা করা হয় না। তাই ধরা যায়নি।