শুক্রবার (১৯ মে) কেন্দ্রীয় সরকার একটি অর্ডিন্যান্স জারি করেছে। এই অর্ডিন্যান্স দিল্লির লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে রাজধানী দিল্লির প্রশাসনে পরিষেবাগুলোর ওপর নিয়ন্ত্রণ বাড়ানোর ক্ষমতা দিয়েছে। এই অর্ডিন্যান্সে দিল্লিতে নিযুক্ত আমলাদের নিয়োগ এবং বদলির ক্ষমতা লেফটেন্যান্ট গভর্নরকে দেওয়া হয়েছে। সম্প্রতি, এই দিল্লিতেই প্রশাসনিক পরিষেবাগুলোর ওপর ক্ষমতা দিল্লি সরকারের বলে স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছিল সুপ্রিম কোর্ট। তারপরও সুপ্রিম রায়ের উলটো অর্ডিন্যান্স কেন্দ্রীয় সরকার জারি করল। যা, সাংবিধানিক সংকট তৈরি কি না, এমন বেশ কয়েকটি প্রশ্নের জন্ম দিয়েছে।
সুপ্রিম কোর্টের সিদ্ধান্ত কি বাতিল করা যায়?
আইন তৈরি করে আদালতের রায়ের কার্যকারিতা বাতিল করা আর আদালতের নির্দেশের পূর্বাবস্থা ফিরিয়ে আনার ক্ষমতা আইনসভার আছে। তবে, সেই তৈরি করা আইন কিছুতেই সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশের বিরোধী হতে পারে না। বদলে, আদালতের রায়ের অন্তর্নিহিত কারণ খোঁজাই হতে পারে, সেই আইনের লক্ষ্য। এর অর্থ হল রায়ের ভিত্তি সরিয়ে একটি আইন পাস করা যেতে পারে। এই ধরনের আইন পূর্ববর্তী বা সম্ভাব্য উভয়ই হতে পারে। যার অর্থ হল, যে কারণে আদালত রায় দিয়েছে, সেই কারণ দূর করে একটি আইন পাস করা যেতে পারে। সেটা পুরনো আইনও পাস করানো যেতে পারে। আবার, তার সঙ্গে নতুন কিছু যুক্ত করে, সেই আইনও পাস করানো যেতে পারে। সুপ্রিম কোর্ট ২০২১ সালের ১৪ জুলাই, মাদ্রাজ বার অ্যাসোসিয়েশন বনাম ভারত সরকার মামলার এক রায়ে তেমনটাই বলেছে।
আরও পড়ুন- দিল্লির প্রশাসনিক ক্ষমতা: সুপ্রিম নির্দেশে কেন্দ্রের আঁতে ঘা! নতুন পদক্ষেপের সঙ্গে বিশেষ আর্জিও
সুপ্রিম কোর্টের রায়ে সমস্যাটা কোথায়?
সুপ্রিম কোর্টের দুটি সাংবিধানিক বেঞ্চ, ২০১৮ সালে ও ২০২৩ সালের ৫ মে, দিল্লি সরকারের ক্ষমতা সম্পর্কে বলেছে। এই উভয় রায়ই সংবিধানের ২৩৯এএ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যার সঙ্গে জড়িত। এই আইন বা অনুচ্ছেদ দেশের রাজধানীর শাসন কাঠামোর সঙ্গে সম্পর্কিত। ১৯৯১ সালে, ২৩৯এএ অনুচ্ছেদ সংবিধানের অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল। তা সংসদের মাধ্যমেই গৃহীত হয়েছিল। সেই আইনে দিল্লি বিধানসভা এবং দিল্লি সরকারের কার্যকারিতা সম্পর্কে বলা আছে। এই সম্পর্কে যে আইনটি পাস হয়েছিল, তা হল জাতীয় রাজধানী অঞ্চল দিল্লি আইন, ১৯৯১। সুপ্রিম কোর্টের সাংবিধানিক বেঞ্চ, গত ৫মে-এর রায়ে ২৩৯এএ অনুচ্ছেদের ব্যাখ্যার মধ্যে একটি নির্বাচিত সরকারের প্রতি তিনটি সাংবিধানিক দায়বদ্ধতা বা মৌলিক নীতি- প্রতিনিধিত্বমূলক গণতন্ত্র, যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামো এবং জবাবদিহিতাকে মান্য করেছে।