কোভিড-১৯ কার্ভ নিয়ে যখন এত কথা হচ্ছে, সে সময়ে মনে রাখতে হবে এই কার্ভের সঙ্গেই যুক্ত হয়ে রয়েছে আর্থিক কার্ভও। আপনাদের অনেকেই হয়ত খেয়াল করেছেন লকডাউনের ফলে ভারতের যে জিডিপি ৬.৫ শতাংশ অনুমান করা হয়েছিল, তা বর্তমান আর্থিক বর্ষে শূন্যয় নেমে এসেছে, এমনকী কেউ কেউ আশঙ্কা করছেন তা এ বছর সংকুচিতও হতে পারে।
গত সপ্তাহে দুটি ঘটনা ঘটেছে, একটি আন্তর্জাতিক ও একটি দেশীয়, যার ফলে বোঝা যায় যে আর্থিক ও শারীরিক স্বাস্থ্যের কোন পরিস্থিতিতে আমরা দাঁড়িয়ে রয়েছি।
প্রথমটা হল আমেরিকায় ওয়েস্ট টেক্সাস ইন্টারমিডিয়েটের মে চুক্তিতে অশোধিত তেলের দামের ঐতিহাসিক পতন, যা ২০ এপ্রিল -৪০ ডলার প্রতি ব্যারেলে পৌঁছয়। তেলের দামের এই অবস্থা চাহিদা ধ্বংসের যে দিকে ইঙ্গিত করে তা মানবেতিহাসে কখনও ঘটেনি। এবং তার চাইতেও খারাপ হল, যা মনে হচ্ছে, তাতে এই দুর্বলতা আরও কিছুকাল চলবে।
দ্বিতীয় ঘটনা ঘটেছে ঘরের কাছে। অতি পরিচিত মিউচুয়াল ফান্ড ফ্র্যাঙ্কলিন টেম্পলটন তাদের ৬টি ফান্ড বন্ধ করে দিয়েছে কোভিড ১৯-এর কারণ দেখিয়ে। কেউ কেউ এটাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা মনে করলেও অনেকেরই বিশ্বাস লগ্নিকারীদের পক্ষে এ ইঙ্গিত ভাল নয়। এই পরিস্থিতিতে আর্থিক পরিস্থিতি সম্পর্কে কেই বা নিশ্চিত হতে পারেন!
কিন্তু ভারতের আর্থিক নীতিপ্রণেতারা এর মোকাবিলা কীভাবে করবেন?
সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ যে ঘটনার দিকে নজর থাকবে তা হল, কেন্দ্রীয় সরকার আবার কোনও আর্থিক রিলিফ প্যাকেজ ঘোষণা করে কিনা, তার উপর। ধরে নেওয়া যেতে পারে করোনা সংকট এখনও বেশ কয়েকমাস অর্থনীতিকে নিম্নমুখী রাখবে, সেক্ষেত্রে অর্থমন্ত্রীকে ভবিষ্যতের জন্য হাতে কিছু রাখতে হবে, হাত খালি করে দেওয়া ঠিক হবে না।
ফলে, অর্থনীতির দৃষ্টিভঙ্গি থেকে দেখলে এ সপ্তাহে যে প্রশ্নগুলির দিকে তাকিয়ে থাকতে হবে, তা হল, কোনও আর্থিক উৎসাহপ্রদান কি ঘটবে? যদি ঘটে, তাহলে তার মাত্রা কী এবং তার উপভোক্তা কারা? অতি ধনীদের উপর কি আরও কর বসবে? সংস্থাগুলিকে দেউলিয়া ঘোষণার ব্যাপারে কি আবার মোরাটোরিয়াম ঘোষণা করা হবে? এবং সবচেয়ে বড় কথা হল, সরকার কি রিজার্ভ ব্যাঙ্ককে তাদের ঘাটতি মেটাতে মুদ্রাকরণ করতে বলবে?
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন