Unified Pension Scheme and NPS: অভিন্ন পেনশন প্রকল্প কেন্দ্রীয় সরকারের ওপর অতিরিক্ত বোঝা। কিন্তু, তারপরও সংস্কারে পিছিয়ে থাকল না মোদী সরকার। তরুণ সরকারি কর্মচারীরা পেনশন হিসেবে বেতনের ৫০%-এরও কম পান। সেদিকে তাকিয়ে, কেন্দ্র এখন একটি নতুন ইউনিফাইড পেনশন স্কিম (ইউপিএস) বা অভিন্ন পেনশন প্রকল্পের ঘোষণা করল। শনিবার যার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভা। ২০২৫ সালের ১ এপ্রিল থেকে এই প্রকল্প চালু হবে। এমনটাই জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় তথ্য ও সম্প্রচার এবং রেলমন্ত্রী অশ্বিনী বৈষ্ণব। নিশ্চিত পেনশন, পারিবারিক পেনশন এবং সম্পূর্ণ পেনশনের বাধ্যতামূলক পরিষেবার কথা মাথায় রেখে এই নতুন পেনশন প্রকল্পের ঘোষণা করা হল বলে তিনি জানিয়েছেন।
কী করেছে কমিটি?
ইউপিএস বা এই পেনশন প্রকল্পটি তৈরির সময়, ২০২৩ সালের এপ্রিলে গঠিত টিভি সোমানাথন কমিটি ২০০৪ সালের জানুয়ারি থেকে সরকারি চাকরিতে যোগদানকারীদের জন্য প্রয়োগ করা জাতীয় পেনশন ব্যবস্থার মৌলিক সংস্কারমূলক বৈশিষ্ট্যগুলোকে পুরোপুরি বাতিল করেনি। কর্মচারীদের নানা অভিযোগ সমাধান করার চেষ্টা করেছে। সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হল আয়ের স্থিতিশীলতা এবং পরিবারের নিরাপত্তা বজায় রাখার ওপর জোর দেওয়া হয়েছে। এই পেনশন প্রকল্পে সরকারের অবদান এবার ১৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে মূল বেতনের ১৮.৫ শতাংশ করা হয়েছে। কর্মচারীদের অবদান আগের মতই মূল বেতনের তারিখ হিসেবে ১০ শতাংশ রাখা হয়েছে।
সরকারের ব্যয় বাড়বে, তবু কেন
নতুন পেনশন প্রকল্পে সরকারের ব্যয় অবশ্যই বাড়বে। প্রথম বছরে প্রায় ৬,২৫০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হবে। ২০০৪ সালে এনপিএস (NPS) চালু করার পর থেকে ইতিমধ্যেই অবসরপ্রাপ্ত কর্মচারীদের বকেয়া বেতনের জন্য সরকার ৮০০ কোটি টাকা অতিরিক্ত ব্যয় হওয়ার কথা স্বীকার করে নিয়েছে। চলতি বছরেই হরিয়ানা, মহারাষ্ট্র এবং ঝাড়খণ্ডের বিধানসভা নির্বাচনে এই অভিন্ন পেনশন প্রকল্প লাগু করা সরকারের কাজে আসবে বলেই মনে করছে কেন্দ্রের শাসক দল বিজেপি। গেরুয়া শিবির মনে করছে বেশ কিছু রাজ্য সরকারও কেন্দ্রের দেখাদেখি তাদের কর্মচারীদের জন্য এই অভিন্ন পেনশন প্রকল্প লাগু করতে পারে। সেক্ষেত্রেও প্রথমে চালু করার কৃতিত্ব মোদী সরকারই পাবে বলেই তাদের ধারণা।
আরও পড়ুন- চাঁদে বসতি স্থাপনের পথে মানুষ? বিজ্ঞানীরা এবার চন্দ্রের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণের চেষ্টায়
কী সুবিধা পাবেন কর্মচারীরা
এই প্রকল্পে কেন্দ্রীয় সরকারি কর্মচারীরা মোট ৬ ধরনের আর্থিক সুবিধা পাবেন। সেগুলো হল- এক) যে কর্মচারীরা ২৫ বছর বা ততোধিক চাকরি করছেন বা করেছেন, তাঁরা অবসরের আগের ১২ মাসের গড় বেসিক স্যালারির ৫০ শতাংশ পেনশন হিসেবে পাবেন। এই পেনশন প্রকল্পে কর্মচারীদের অবদান ১০ শতাংশই থাকছে। যা ন্যাশনাল পেনশন স্কিম বা এনপিএসে রয়েছে। আর, সরকারের অবদান ১৪ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১৮.৫ শতাংশ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। দুই) যে কর্মীরা ২০০৪-র পর কাজে যোগ দিয়েছেন অথবা অবসর নিয়েছেন কিংবা ২০২৫ সালের ১ এপ্রিলের মধ্যে অবসর নেবেন, তাঁরা এই প্রকল্পের সুবিধা নিতে পারেন। অবসরপ্রাপ্তরা আবেদন করলে তাঁদের অবসরকালীন সুযোগ সুবিধা ফের পরীক্ষা করা হবে। তারপর সুদের সঙ্গে বকেয়া শোধ করা হবে। তিন) যে হারে মহার্ঘ ভাতা পাওয়া যায় সেই হারেই ডিয়ারনেস রিলিফ দেবে সরকার। চার) পেনশনভোগী মারা গেলে তাঁর পরিবার পেনশনভোগীর প্রাপ্ত অর্থের ৬০ শতাংশ তুলে নিতে পারবে। পাঁচ) ১০ বছর চাকরি করে ছেড়ে দিলেও ন্যূনতম ১০ হাজার টাকা পেনশন সেই অবসরপ্রাপ্ত পাবেনই। ছয়) কর্মচারীরা বর্তমানে চালু জাতীয় পেনশন প্রকল্প (ন্যাশনাল পেনশন স্কিম) বা অভিন্ন পেনশন প্রকল্প (ইউপিএস)-এর মধ্যে যে কোনও একটি বেছে নিতে পারবেন।