Advertisment

Explaiened: ইজরায়েল-হামাস 'যুদ্ধ'-এ রাষ্ট্রসংঘ কেন চুপচাপ, জন্মলগ্নেই লুকিয়ে রহস্য?

রাষ্ট্রসংঘ কি তার দায়িত্ব পালনে আদৌ সফল?

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
President Roosevelt & Prime Minister Churchill on the U.S.S. Augusta in a formal evening gathering.

প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট ও প্রধানমন্ত্রী চার্চিল ইউএসএসের অগাস্টাতে এক আনুষ্ঠানিক সন্ধ্যায়। (ছবি সৌ: রাষ্ট্রসংঘ)

আজ সেই বিশেষ দিন। ১৯৪৫ সালে, এই দিনেই প্রতিষ্ঠা হয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের। আন্তর্জাতিক সম্পর্কের তখন টালমাটাল পরিস্থিতি। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ (১৯৩৯-৪৫) তখন সবেমাত্র শেষ হয়েছে। তার বেশ কিছু বছর আগে হয়েছে (১৯১৪-১৮) প্রথম বিশ্বযুদ্ধ। যে দেশগুলো প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর বিশ্বে আধিপত্য বিস্তার করেছিল, তারা দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধে ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত হয়। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র আর সোভিয়েত রাশিয়া হয়ে ওঠে বিশ্বের দুই উদীয়মান শক্তি। সেই সময়ে ভবিষ্যতের আশঙ্কা থেকে বিশ্বকে একজোট রাখার প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গিয়েছিল। যা থেকেই জন্ম নিয়েছিল রাষ্ট্রসংঘের ধারণা।

Advertisment

রাষ্ট্রসংঘের জন্ম
রাষ্ট্রসংঘের আগে ভার্সাই চুক্তির অংশ হিসাবে প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পরে ১৯১৯ সালের জুন মাসে 'লিগ অফ নেশনস' তৈরি করা হয়েছিল। ১৯৩৯ সালে দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ শুরু হলে সেই সংস্থা তার কার্যকারিতা হারায়। জেনেভায় এর সদর দফতর খালি হয়ে যায়। ফলে, ১৯৪১ সালের আগস্টে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ফ্রাঙ্কলিন ডি. রুজভেল্ট এবং ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী উইনস্টন চার্চিল কানাডার নিউফাউন্ডল্যান্ডের দক্ষিণ-পূর্ব উপকূলে প্লাসেন্টা বেতে এক নৌ জাহাজে গোপন বৈঠক করেন। দুই দেশের প্রধানরা আন্তর্জাতিক শান্তি প্রচেষ্টার জন্য একটি নতুন সংস্থা তৈরির সম্ভাবনা এবং যুদ্ধ সম্পর্কিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা করেন। তাঁরা একসঙ্গে একটি বিবৃতি জারি করেন। যা আটলান্টিক চার্টার নামে পরিচিত। এটি রাষ্ট্রসংঘ গঠনের পথ প্রশস্ত করেছিল।

un declaration
রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণা মার্কিন প্রেসিডেন্ট রুজভেল্ট দ্বারা প্রস্তাবিত হয়েছিল।

ভারতও যোগ দিয়েছিল
মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ১৯৪১-এর ডিসেম্বরে বিশ্বযুদ্ধে যোগ দেয়। যে দেশগুলি অক্ষশক্তির (জার্মানি-ইতালি ও জাপান) বিরুদ্ধে ছিল, সেই ২৬টি মিত্র দেশ ১৯৪২ সালের ১ জানুয়ারি রাষ্ট্রসংঘের ঘোষণাপত্রে স্বাক্ষর করতে ওয়াশিংটন ডিসিতে মিলিত হয়েছিল। সেই সময়ে ব্রিটিশ ঔপনিবেশিক শাসনের অধীনে থাকা ভারতও এই দেশগুলির তালিকায় ছিল। পরবর্তীতে বিদেশ মন্ত্রকের এক বিবৃতি অনুসারে, 'স্বাধীন ভারত রাষ্ট্রসংঘে তার সদস্যপদকে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখার জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ গ্যারান্টি হিসাবে দেখেছে।'

আরও পড়ুন- ভারত থেকে ৪১ কূটনীতিককে প্রত্যাহার কানাডার, ভঙ্গ হল ভিয়েনা চুক্তি?

রাষ্ট্রসংঘের কাজ
রাষ্ট্রসংঘ তৈরি হওয়ার পরবর্তী কয়েক বছরে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন এবং চিন যুদ্ধোত্তর সনদের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা গ্রহণ করেছিল। রাষ্ট্রসংঘকে অবশেষে ১৯৪৫ সালের ২৪ অক্টোবর, ৫১টি দেশ দ্বারা সমর্থন করে। যার মধ্যে ছিল পাঁচটি স্থায়ী সদস্য (ফ্রান্স, চিন প্রজাতন্ত্র, সোভিয়েত ইউনিয়ন, ব্রিটেন এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র)। এছাড়াও ছিল ৪৬টি অন্যান্য স্বাক্ষরকারী দেশ। রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদের প্রথম সভা ১৯৪৬ সালের ১০ জানুয়ারি, অনুষ্ঠিত হয়। রাষ্ট্রসংঘের চারটি প্রধান লক্ষ্যের মধ্যে রয়েছে আন্তর্জাতিক শান্তি ও নিরাপত্তা বজায় রাখা, দেশগুলোর মধ্যে বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে তোলা, আন্তর্জাতিক সমস্যা সমাধানে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা অর্জন এবং এই অভিন্ন লক্ষ্য অর্জনে বিভিন্ন দেশগুলোর কর্মকাণ্ডে সমন্বয় ঘটানো।

United Nations USA Britain
Advertisment