৮ জুন থেকে অফিস, ধর্মীয় স্থান, মল, রেস্তোরাঁ এবং হোটেল খোলার মাধ্যমে আর্থিক কাজকর্মে গতি আসবে বলে প্রত্যাশা করা হচ্ছে। সে কারণে বৃহস্পতিবার স্বাস্থ্যমন্ত্রক বিস্তারিত সাধারণ পরিচালনা প্রণালী (standard operating procedures বা SOP) ঘোষণা করেছে।
৮ জুন থেকে কি সমস্ত অফিস, ধর্মীয় স্থান, মল, রেস্তোরাঁ ও হোটেল খুলবে?
সাধারণ পরিচালনা প্রণালী প্রকৃতিগত ভাবে পরামর্শ বা উপদেশমূলক, রাজ্য সরকার এবং বিভিন্ন সংস্থা সেগুলিকে প্রয়োগ করবে।
ওষুধ বা অত্যাবশ্যকীয় পণ্য সম্পর্কিত নয় এমন কোনও অফিস কনটেনমেন্ট জোনে খোলা যাবে না। কনেটেনমেন্ট জোনের বাইরে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান খোলা যাবে। তবে অতি প্রয়োজনীয় বা স্বাস্থ্য সংক্রান্ত বিষয় ছাড়া ৬৫ বছরের বেশি বয়সী নাগরিক, যাঁদর অন্য ধরনের অসুস্থতা রয়েছে, গর্ভবতী মহিলা ও ১০ বছরের কম বয়সীদের বাড়িতে থাকার উপদেশ দেওয়া হয়েছে।
এসব জায়গায় যাওয়ার জন্য কী ধরনের নিয়ম পালন করা উচিত?
অফিস, ধর্মস্থান, মল, রেস্তোরাঁ, হোটেলে সকলের যতদূর সম্ভব সামাজিক দূরত্ববিধি পালন করে চলা উচিত, অন্তত ৬ ফুটের শারীরিক দূরত্ব বাঞ্ছনীয়। মাস্ক বা মুখাবরণ রেস্তোরাঁ সহ সর্বত্র পরা প্রয়োজন।
লকডাউনে সত্যিই কত কোভিড মৃত্যু আটকানো গেল?
সাধারণ পরিচালনা প্রণালীতে বলা হয়েছে, হাত যদি নোংরা না-ও দেখায় তাহলেও মাঝেমাঝেই সাবান দিয়ে অন্তত ৪০ থেকে ৬০ সেকেন্ড সময় ধরে ধোয়া উচিত। অন্তত ২০ সেকেন্ড ধরে অ্যালকোহল বেসড স্যানিটাইজার দিয়ে হাত সাফ করা যেতে পারে। শ্বাসজনিত বিধি কঠোরভাবে পালনীয়। অর্থাৎ হাঁচি বা কাশির সময়ে নাক ও মুখ টিস্যু বা রুমাল বা হাত ভাঁজ করে ঢেকে রাখতে হবে এবং টিস্যু ভালভাবে নষ্ট করে ফেলতে হবে।
কোভিড-১৯ উপসর্গযুক্ত কোনও ব্যক্তি এসব জায়গায় যেতে পারবেন না।
রেস্তোরাঁগুলিতে কি যতজন ধরে ততজনই যেতে পারবেন?
না। ফুড কোর্ট ও রেস্তোরাঁগুলি বসার যত আসন রয়েছে তার ৫০ শতাংশের বেশি মানুষকে জায়গা দিতে পারবে না। বসে খাওয়ার বদলে বাড়ি নিয়ে গিয়ে খাওয়ার ব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া হয়েছে।
যাঁরা বাড়িতে খাবার পৌঁছে দেন, তাঁরা বাড়ির দোরগোড়ায় খাবারের প্যাকেট রাখবেন, কোনওভাবেই সরাসরি গ্রাহকের হাতে খাবারের প্যাকেট দেবেন না। হোম ডেলিভারির কর্মীদের সে কাজে যোগ দেওয়ার আগে থারমাল স্ক্রিনিংয়ের দায়িত্ব রেস্তোরাঁ কর্তৃপক্ষের। সমস্ত প্রবেশপথে হাত সাফাই (স্যানিটাইজার ডিসপেনসার)-এর ব্যবস্থা করতে হবে এবং থারমাল স্ক্রিনিংয়ের বন্দোবস্ত রাখতে হবে।
করোনা সংক্রমণে হোমিওপ্যাথি ওষুধ নিয়ে বিতর্ক
এসব জায়গায় এয়ার কন্ডিশনার কি চলবে?
এসি চালানো যেতে পারে, তবে নিয়ম মেনে। প্রণালীতে বলা হয়েছে এয়ার কন্ডিশনিং ও ভেন্টিলেশনের ক্ষেত্রে সিপিডব্লিউডি গাইডলাইন অনুসরণ করতে হবে, অর্থাৎ তাপমাত্রা রাখতে হবে ২৪ থেকে ৩০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে, আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ রাখতে হবে ৪০ থেকে ৭০ শতাংশের মধ্যে, যতদূর সম্ভব খোলা হাওয়া ও ক্রস ভেন্টিলেশনের ব্যবস্থা করতে হবে। লিফট ব্যবহারের ক্ষেত্রে কতজন উঠতে পারবে তা সুনির্দিষ্ট করতে হবে।
যদি এসব জায়গায় কোনও পজিটিভ ঘটনা দেখা যায় তাহবে কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে?
অফিসের ক্ষেত্রে বন্ধ হওয়ার পর কতজন কর্মী সংক্রমিত হয়েছেন সে ব্যাপারে খেয়াল রাখতে হবে। এক দুজন যদি সংক্রমিত হন, তাহলে গত ৪৮ ঘণ্টায় ওই ব্যক্তি যে যে জায়গায় গিয়েছেন সেগুলি জীবাণুমুক্ত করলেই চলবে। গোটা অফিস বা বিল্ডিং বন্ধ করার প্রয়োজন নেই। তবে বড় ধরনের প্রাদুর্ভাব ঘটলে ৪৮ ঘন্টার জন্য বিল্ডিং বা অফিস বন্ধ করতে হবে এবং সম্পূর্ণ জীবাণুমুক্তি প্রক্রিয়া চালাতে হবে। সমস্ত কর্মীরা যতক্ষণ না অফিস জীবাণুমুক্ত হয়, ততদিন বাড়ি থেকে কাজ করবেন।
অন্য জায়গার ক্ষেত্রে প্রথম পদক্ষেপ হল অসুস্থ ব্যক্তির আইসোলেশন ও মাস্কিং। একবার ওই ব্যক্তিকে স্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষের কাছে তুলে তাঁরা পরিস্থিতি খতিয়ে দেখবেন এবং সংস্রব চিহ্নিতকরণ সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নেবেন। গোটা এলাকা জীবাণুমুক্ত করতে হবে।