লকডাউন নিয়ে অনিশ্চয়তা অনেকটাই কেটে গিয়েছে। বিভিন্ন ক্ষেত্রে দু মাসের বেশি সময় ধরে চলা বিধিনিষেধের জন্য আর্থিক কাজকর্মের পরিকল্পনা কারও দুরূহ হয়ে গিয়েছিল। সাম্প্রতিকতম নির্দেশিকায় কেবল আগের শিথিলতা বজায় রাখার কথাই বলা হয়নি, একইসঙ্গে রোডম্যাপও দেওয়া হয়েছে, কীভাবে এবং কখন বাকি বিধিনিষেধগুলিও শিথিল করা হবে।
এর ফলে ব্যবসাক্ষেত্র ও শিল্পক্ষেত্র ফের কাজ শুরু করতে পারবে। বিধিনিষেধ তুলে নেওয়া হয়েছে আন্তঃরাজ্য ও রাজ্যের অন্তর্বর্তী ব্যক্তি ও পণ্যচলাচলে, যার ফলে বাস্তবত আর্থিক ক্ষেত্র প্রায় পুরোপুরি খুলে গিয়েছে। এই সিদ্ধান্ত যখন গৃহীত হয়েছে, তখন শেষ সপ্তাহে নতুন ৫০ হাজারের বেশি কোভিড সংক্রমণ ধরা পড়েছে, তার আগের সপ্তাহে যে সংখ্যা ছিল ৪১ হাজার মত। রেল ও বিমান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা বহাল থাকলেও, এই আনলকডাউনের পর্যায়ে এবার দায়িত্ব অনেকটাই ব্যক্তিগত স্তরে চলে গেল- ব্যক্তি ও সংস্থা এই দু পক্ষই এখন মূল দায়ী।
সরকারি আধিকারিকরা অনেক আগেই কাজ শুরু করেছিলেন, প্রাইভেট ফার্মগুলির উপর বিধিনিষেধ জারি ছিল। নতুন নিয়মে এ সপ্তাহ থেকে প্রায় সবকটি সংস্থাই ফের কাজ শুরু করতে পারবে। এবার সংস্থগুলিকেই নিজেদের কর্মীদের স্বাস্থ্য সুরক্ষার সুনিশ্চিতির বিষয়টি মাথায় রেখে তাদের কাজকর্ম সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিতে হবে। সংস্থাগুলি সম্ভবত সারা সপ্তাহ ধরেই এ ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।
যেহেতু বেশি বেশি সংস্থা তাদের কাজ ফের শুরু করবে, সে কারণে মানুষকে এক জায়গায় জড়ো হবার ব্যাপারে সচেতন হতে হবে, এবং ব্যবহারিক জীবনের নতুন নিয়মাবলী মেনে চলতে হবে নিজের, বন্ধুদের এবং সহকর্মীদের সুরক্ষার জন্য।
ধরে নেওয়া যায় এ সপ্তাহের শেষে শিথিলতা পুরোপুরি কার্যকর হবে এবং বিভিন্ন সংস্থা ও ব্যক্তিবর্গ তাকিয়ে থাকবেন রাজ্যওয়ারি নির্দেশের দিকে, এবং তারপরেই তাঁরা তাঁদের কাজকর্মের পরিকল্পনা চূড়ান্ত করতে পারবেন। ইতিমধ্যে স্বাস্থ্যমন্ত্রক এ সপ্তাহ জুড়ে থেকে হোটেল পরিষবার, শপিং মল ও ধর্মস্থানের ক্ষেত্রে সাধারণ নিয়মবিধি পরিকল্পনা করবে, যা আগামী সপ্তাহে কার্যকর হবে।
ইতিমধ্যে দেশ জোড়া লকডাউনের কার্যকারিতা খতিয়ে দেখবে একটি সংসদীয় প্যানেল। কংগ্রেসের নেতৃত্বাধীন এই সর্বদলীয় কমিটির স্ক্রুটিনি এ সপ্তাহে রাজনৈতিক উত্তেজনা সৃষ্টি করতে পারে।
এ সপ্তাহে বৃষ্টি শুরু হলে জটিলতার মাত্রা কিছু রাজ্যে বাড়বে, যার মধ্যে রয়েছে মহারাষ্ট্র। এখানে সংক্রমিতের সংখ্যা অত্যধিক এবং তাদের এ বিষয়েও প্রস্তুতি শুরু করতে হবে।
লাদাখে ভারত চিনের মধ্যে গত সপ্তাহ পর্যন্ত যে উত্তেজনা ছিল, সে ব্যাপারে সামরিক ও কূটনৈতিক স্তরে আলোচনার কথা প্রকাশ্যে স্বীকার করে জানানো হয়েছে, পরিস্থিতির উন্নতি ঘটেছে। সীমানা নিয়ে নেপালের সঙ্গেও ভারতের সম্পর্কের অবনতি হয়েছে। নয়া দিল্লিকে এ ব্যাাপরেও কাঠমাণ্ডুর সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে এবং যাতে উত্তেজনা সৃষ্টি না হয়, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।