বহুজন সমাজ পার্টির (বিএসপি) বিধায়ক রাজু পাল হত্যাকাণ্ডের মূলসাক্ষী উমেশ পাল খুন হয়েছেন। ২০০৫ সালে এলাহাবাদে খুন হয়েছিলেন বিধায়ক রাজু পাল। সঙ্গে গুলিবিদ্ধ হয়ে খুন হয়েছিলেন তাঁর পুলিশ দেহরক্ষীও। সেই অভিযোগে এফআইআর দায়ের হয়েছিল সাংসদ আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে। বর্তমানে আতিক জেলবন্দি। ২৫ ফেব্রুয়ারি, শনিবার খুন হয়েছেন এই হত্যা মামলার মূলসাক্ষী উমেশ পাল। সেই হত্যাকাণ্ডেও এফআইআর দায়ের হয়েছে জেলবন্দি আতিক আহমেদের বিরুদ্ধে। পাশাপাশি, এফআইআরে নাম রয়েছে আতিক আহমেদের স্ত্রী সাহিস্তা পারভিন, তাঁর দুই ছেলে, আতিক আহমেদের ছোটভাই খালিদ আজিম ওরফে আশরফের।
উমেশ হত্যায় সরগরম উত্তরপ্রদেশ
উমেশ পালের এই হত্যাকাণ্ডে এখন সরগরম উত্তরপ্রদেশ। বিষয়টি উঠেছে উত্তরপ্রদেশ বিধানসভাতেও। আর, উঠতেই যেন আগুনে ঘি পড়েছে। কারণ মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ অভিযোগ করেছেন, সমাজবাদী পার্টি অপরাধীদের প্রশ্রয় দিয়েছিল। স্বভাবতই বিরোধীরা যোগীর এই অভিযোগ মানতে পারেননি। যোগী অবশ্য শপথ নিয়েছেন, 'আতিক আহমেদের মত মাফিয়া এবং অপরাধীদের ধ্বংস করে দেওয়া হবে।'
কে এই আতিক আহমেদ?
বর্তমানে গুজরাট জেলে বন্দি। ২০১৬ সালে প্রয়াগরাজের কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউটের এক ফ্যাকাল্টিকে মারধরের অভিযোগে জেল খাটছেন আতিক আহমেদ। আহমেদ শুধু প্রাক্তন সাংসদই নন। পাঁচবারের বিধায়কও। ১৯৮৯ সালে তাঁর রাজনৈতিক যাত্রা শুরু হয়েছিল। সেবার তিনি এলাহাবাদ পশ্চিম থেকে নির্দল প্রার্থী হিসেবে জিতেছিলেন। পরবর্তী দুটি বিধানসভা নির্বাচনেও এলাহাবাদ পশ্চিম থেকে জিতেছিলেন আতিক আহমেদ।
আরও পড়ুন- সিসোদিয়ার গ্রেফতারিতে আপ সরকারের মাথায় বাজ, রাজ্য চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন কেজরি
নেহরুর আসন জিতেছিলেন আতিক
এরপর ১৯৯৬ সালে আহমেদ সমাজবাদী পার্টিতে যোগ দেন। আর, চতুর্থবারের জন্য বিধায়ক হন। তিন বছর পর, আতিক আপনা দলে যোগ দেন। আর, ২০০২ সালে ফের এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা কেন্দ্র থেকে জয়ী হন। পরের বছর, তিনি সমাজবাদী পার্টিতে ফিরে যান। আর, ২০০৪ সালে ফুলপুর লোকসভা কেন্দ্র থেকে সাংসদ হন। একসময় এই ফুলপুর থেকে জয়ী হয়েছিলেন দেশের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু।
ভাইকে জেতাতে পারেননি
কিন্তু, আতিক আহমেদের রাজনৈতিক জীবনে প্রথম বড় ধাক্কা লাগে ২০০৫ সালে। রাজনীতিবিদ রাজু পালের হত্যাকাণ্ডে জড়ায় আতিক আহমেদের নাম। তার আগে রাজুর কাছে নির্বাচনে এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা আসনে ২০০৫ সালে পরাজিত হয়েছিলেন আতিকের ভাই আশরফ। সেটা ছিল আহমেদ পরিবারের কাছে বড় বিপর্যয়। কারণ, ২০০৪ সালেই আতিক ফুলপুর লোকসভা নির্বাচনে জয়ী হয়েছিলেন। সেই জন্য এলাহাবাদ পশ্চিম বিধানসভা আসনটি তিনি ছেড়ে দেন। তাতে শূন্য হয়েছিল আসনটি। আর, সেই শূন্য আসনেই আতিক নিজের ভাইকে জেতাতে পারেননি।