অ্যাপের নাম টিকটক। ফেসবুক-হোয়াটসঅ্যাপ-টুইটার জমানায় এই অ্যাপের জনপ্রিয়তাও ছিল তুঙ্গে। আমজনতা থেকে সেলিব্রেটি, টিকটিকে সোশাল উপস্থিতি ছিল দেখার মতো। কিন্তু কেন বিশ্ব রাজনীতিতে নয়া জায়গা করে নিল এই অ্যাপ? উত্তর খুঁজলে কারণ হিসেবে উঠে আসে চিনের নাম।
ভারত-চিন সীমান্ত সমস্যার মাঝে প্রধান কাঁটা ছিল টিকটক। এই অ্যাপের বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল ভারত। প্রাইভেসি ভঙ্গ হচ্ছে এবং চিনের বিরুদ্ধে এই অ্যাপ ব্যবহার করে তথ্য হ্যাকের অভিযোগও তোলা হয় ভারতের তরফে। অত:পর সীমান্ত সংঘর্ষ শুরু হতেই এই জনপ্রিয় অ্যাপ ব্যান করে ভারত। তবে শুধু ভারত নয়, চিনের বিরুদ্ধে খড়্গহস্ত মার্কিন মুলুকও সম্প্রতি এই অ্যাপ ব্যান করে দেয়। কারণ দর্শানো হয় একটাই, জাতীয় নিরাপত্তা সুরক্ষা।
তবে কূটনীতিতে ভারতের থেকে এগিয়ে রয়েছে ওয়াশিংটন। টিকটক অ্যাপের মূল সংস্থা চিন দেশিয় বাইটড্যান্সকে তাঁদের সমস্ত ব্যবস্থা মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সংস্থা মাইক্রোসফটের হাতে তুলে দিতে বলেছে। এই নীতি কেন নিচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসন? ইনস্টিটিউট অফ সাউথ এশিয়ান স্টাডিজের ডিরেক্টর সি রাজা মোহন লিখেছেন, "সম্প্রতি মার্কিন এবং চিনের প্রযুক্তিগত সংস্থাগুলির মধ্যে যে নতুন প্রতিযোগীতা শুরু হয়েছে সেখানে নতুন সংজ্ঞা আরোপ করতে চান ট্রাম্প। নিজের ঘরে বসেই চিনকে বার্তা দেওয়ার পাশাপাশি তাই এই এই নয়া মিশন শুরু করেছেন তিনি।" অর্থাৎ অ্যাপের জনপ্রিয়তাকে হাতিয়ার করেই নিজ সংস্থার হাতে ক্ষমতা চাইছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট।
সি রাজা মোহন এও বলেন, "রবিবারই মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের সচিব মাইক পম্পেও ইঙ্গিত দেন যে টিকটক ক্ষমতা হস্তান্তর দিয়ে প্রথম পদক্ষেপ নিচ্ছেন তাঁরা। আগামী দিনে চিনা অ্যাপ ব্যবহারের ক্ষেত্রে আর কী কী পদক্ষেপ নেওয়া যায় সে বিষয়টি প্রশাসনিক পর্যায়ে খতিয়ে দেখছেন তাঁরা।" গত মাসে মার্কিন অ্যাটোর্নি জেনারেল উইলিয়াম ব্রার সাফ জানিয়েছিলেন অ্যাপেল, মাইক্রোসফট, ডিজনি, গুগলের মতো সংস্থারা আমেরিকার পরিচয় বাহক। শুধু তাই নয় তাঁরা প্রত্যেকেই মার্কিন আইন অনুযায়ী তাঁদের বাধ্যবাধকতা সম্প্ররকে ওয়াকিবহাল।
কিন্তু প্রশ্ন উঠছে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসন। তবে নভেম্বরে যদি আসনচ্যুত হন ট্রাম্প, আর তাঁর জায়গায় ক্ষমতায় আসেন ডেমোক্র্যাটের জো বিডেন তাহলে কি পরিস্থিতি একই থাকবে? না কি চিনা অ্যাপের বিরুদ্ধে সুর নরম করবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র? লেখকের অবশ্য মত চিনা প্রভাব রাখতে চাইবেন না কেউই। বরং ভারতের নীতি নিয়ে চিনা অ্যাপ বাতিল করে নতুনভাবে ডিজিটাল ক্ষেত্র সাজাতে চাইবে উভয়পক্ষই। সেক্ষেত্রে ভারতের সঙ্গে রাজনৈতিক সমঝোতা বহাল রেখেও এই কাজ এগোতে পারে বলে মনে করছেন লেখক।
Read the story in English
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন