অনলাইন কোর্সের ভিসা নিয়ে আমেরিকার নতুন ঘোষণায় ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা কীভাবে প্রভাবিত হবেন?

ট্রাম্প প্রশাসন যত দ্রুত সম্ভব স্কুল কলেজে কাজ শুরু করার কথা বলে আসছে। সোমবার নতুন গাইডলাইন প্রকাশের পর ট্রাম্প নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন SCHOOLS MUST OPEN IN THE FALL!!!

ট্রাম্প প্রশাসন যত দ্রুত সম্ভব স্কুল কলেজে কাজ শুরু করার কথা বলে আসছে। সোমবার নতুন গাইডলাইন প্রকাশের পর ট্রাম্প নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন SCHOOLS MUST OPEN IN THE FALL!!!

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
USA Online Course International Students

হারভার্ড বিজনেস স্কুল এবারের ফলে এমবিএ প্রোগ্রাম পুরোটা অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত বদলেছে

আমেরিকা সোমবার ঘোষণা করেছে যেসব বিদেশি ছাত্রছাত্রীরা বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে অনলাইন ক্লাস করছেন, তাঁদের সে দেশ ছাড়তে হবে। সংশ্লিষ্ট বিশ্ববিদ্যালয়গুলি যদি ফল সেমেস্টারের পুরোটাই অনলাইন ক্লাস চালায়, সেক্ষেত্রে এই ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যেসব প্রতিষ্ঠান ছাত্রছাত্রীদের সাধারণ শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে ক্লাস করাচ্ছে, তাঁরা থাকলে পারবেন, তবে তাঁরা একটি ক্লাস বা তিন ঘণ্টার বেশি অনলাইন ক্রেডিট করতে পারবেন না।

Advertisment

আমেরিকার অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের এই নয়া নিয়মের ফলে কীবাবে প্রভাবিত হবেন ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা?

যেসব স্কুল বা প্রোগ্রামে ফল সেমেস্টারে পুরোটাই অনলাইন ক্লাস হচ্ছে, সেখানে অংশগ্রহণকারী ভারতীদের ফিরে আসতে হবে। যেসব স্কুল শারীরিক উপস্থিতির মাধ্যমে ক্লাস করাচ্ছে, সেখানে যদি তাঁরা বদলি হয়ে যান বা যথাযথ মেডিক্যাল লিভ নিতে পারেন, তবেই তাঁরা থাকতে পারবেন।

করোনাভাইরাস অতিমারীর পর ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় যেসব ছাত্রছাত্রী ফিরে আসতে বাধ্য হয়ছেন, তাঁরা পুরো অনলাইন ক্লাসের জন্য আমেরিকায় ফিরতে পারবেন না। একই কথা প্রযোজ্য সম্ভাব্য বা নতুন ছাত্রছাত্রীদের জন্যও, যাঁরা ফল সেমেস্টারে যোগ দিতে যান।

Advertisment

Yocket সংস্থার অন্যতম প্রতিষ্ঠাতা সুমিত জৈন ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসকে বলেন, একটা জিনিস স্পষ্ট, যারা অনলাইন কোর্স শুরু করতে যাচ্ছিলেন, সেসব ছাত্রছাত্রীরা ক্যাম্পাসে না যাওয়া পর্যন্ত তাঁরা মার্কিন ভিসা পাবেন না। এই অনলাইন সংস্থার মাধ্যমে ছাত্রছাত্রীরা বিদেশে পড়াশোনার পরিকল্পনা করে থাকেন।

ফল সেমেস্টারে কিছু বিশ্ববিদ্যালয় অনলাইন ও অফলাইন মিলিয়ে ক্লাস করানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সে সব বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব ভারতীয় ছাত্রছাত্রীরা নথিবদ্ধ, তাঁদের কী হবে?

তাঁরা আমেরিকায় থাকতে পারবেন, এবং ভারতে যাঁরা চলে এসেছেন, এক্ষেত্রে তাঁদের মার্কিন ভিসা দেওয়া হবে। তবে সে ক্ষেত্রে বিশ্ববিদ্যালয় বা কলজকে মার্কিন সরকারের কাছে শংসাপত্র দিয়ে জানাতে হবে সংশ্লিষ্ট ছাত্র ২০২০ সালের ফল সেমেস্টারের জন্য পুরোপুরি অনলাইন কোর্স করছে না, এবং ডিগ্রি প্রোগ্রামের দিকে স্বাভাবিক বাবে এগোচ্ছে ও ন্যূনতম অনলাইন ক্লাস করছে।

তবে ইংরেজি ভাষা শিক্ষার ট্রেনিংয়ের জন্য F-1 ভিসার ছাত্রছাত্রী বা M-1 ভিসার ছাত্রছাত্রীরা কোনও অনলাইন কোর্স করার জন্য অনুমতি পাবেন না।

আমেরিকা সরকার ক্যাম্পাস বন্ধ হওয়ার পর অনলাইন ক্লাসের অনুমতি দিয়েছিল। এখন এই অবস্থান পরিবর্তনের কারণ কী?

আমেরিকায় বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনার জন্য ক্লাসে শারীরিক উপস্থিতি বাধ্যতামূলত। অতিমারী ও তার পরবর্তী পর্যায়ে ক্যাম্পাস বন্ধ হয়ে যাওয়ায় সরকার বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের বেশি করে অনলাইন ক্লাস করার অনুমতি দিয়েছিল। তবে এ ছাড় দেওয়া হয়েছিল কেবল স্প্রিং ও সামার সেমেস্টারের জন্য।

আমেরিকার অভিবাসন ও শুল্ক দফতরের অধীন দ্য স্টুডেন্টস অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ ভিজিটর প্রোগ্রাম নতুন সিদ্ধান্তের ব্যাপারে তেমন কিছু জানায়নি।

কেউ কেউ একে ফল সেমেস্টারে কাজকর্ম শুরু করার ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয়গুলির উপর চাপ হিসেবে দেখছেন। ট্রাম্প প্রশাসন যত দ্রুত সম্ভব স্কুল কলেজে কাজ শুরু করার কথা বলে আসছে। সোমবার নতুন গাইডলাইন প্রকাশের পর ট্রাম্প নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে লেখেন SCHOOLS MUST OPEN IN THE FALL!!!

আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের নথিভুক্ত করার প্রক্রিয়া কীভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হবে?

মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয়গুলি ইতিমধ্যেই আন্তর্জাতিক ছাত্রছাত্রীদের অ্যাডমিশানের অফার দিয়েছে। এর ফলে পরবর্তী সেমেস্টারের জন্য ছাত্রছাত্রীরা উৎসাহী হবেন। সক্রিয় বা ইতিমধ্যেই নথিভুক্ত ছাত্রছাত্রীরা সেমেস্টার ড্রপ দেবার কথা ভাবতে পারেন। আমেরিকায় বিদেশি ছাত্রগোষ্ঠীর মধ্যে ভারতীয়রা সংখ্যা হিসেবে দ্বিতীয় বৃহত্তম, প্রথম রয়েছে চিন।

সুমিত জৈনের কথায় বিশ্ববিদ্যালয় গুলির পক্ষে ছাত্রছাত্রীদের ফল সেমেস্টারে অনলাইন কোর্সে জয়েন করানো শক্ত হবে। অধিকাংশ ছাত্রছাত্রীই পরের টার্ম পর্যন্ত অ্যাডমিশন পিছিয়ে দিচ্ছেন।

জুন মাসে বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের এক সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, উত্তরদাতাদের অর্ধেকের বেশি কোভিড সম্পর্কিত অনিশ্চয়তার জন্য ভিনদেশের বিশ্ববিদ্যালয়ে অ্যাডমিশন এক বছরের জন্য পিছিয়ে দিতে চান। আমেরিকার নয়া নির্দেশিকা এই অবস্থানকেই পোক্ত করবে, যার জেরে যেসব মার্কিন বিশ্ববিদ্যালয় ফল সেমেস্টার অনলাইনে করার কথা ঘোষণা করেছে, তাদের আয় কমবে।

আমেরিকার বিশ্ববিদ্যালয়গুলি এই গাইডলাইনের কী প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে?

কোনও কোনও বিশ্ববিদ্যালয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত জানার এক দিনের কম সময়ের মধ্যে ফল সেমেস্টারের সিদ্ধান্ত বদলেছে। হারভার্ড বিজনেস স্কুল এবারের ফলে এমবিএ প্রোগ্রাম পুরোটা অনলাইনে করার সিদ্ধান্ত বদলেছে। এর ফলে তাদের কাছে ছাত্রছাত্রী ফেরত আসবে।

কলম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয় ঘোষণার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে সমস্ত বিদেশি ছাত্রছাত্রীদের ই মেল করে জানিয়েছে তারা নোটিস খতিয়ে দেখছে এবং বিষয়টির প্রভাব খতিয়ে দেখছে।

আমেরিকান স্কুলে যেসব ভারতীয় এনরোল করিয়েছেন, তাঁদের সামনে কী পথ?

আমেরিকায় ভারতীয় ছাত্রদের বৃহত্তম ও প্রাচীনতম সংগঠন নর্থ আমেরিকান অ্যাসোসিয়েশন অফ ইন্ডিয়ান স্টুডেন্টসের একজিকিউটিভ ডিরেক্টর সুধাংশু কৌশিক বলেছেন, আমাদের প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয় ও সেখানকার ইন্টারন্যাশনাল স্টুডেন্টস অফিসের উপর দুটি বিষয়ে চাপ দিতে হবে, হয় আইসি যে তিনধরনের প্রয়োজনীয়তার কথা বলেছে সে সম্পর্কিত তিনটি কাঠামো তৈরি করা বা বিশ্ববিদ্যালয়কে বলা বিষয়টি নিয়ে আদালতের দ্বারস্থ হতে। ছাত্রছাত্রী, তাঁদের অভিভাবক ও প্রাক্তনীরা বাড়ি বসেই তা করতে পারেন।

USA