Advertisment

Vaikom satyagraha: পরাধীনতার পাশাপাশি অস্পৃশ্যতার বিরুদ্ধেও একইসঙ্গে লড়েছিল কংগ্রেস, সম্মতি দেন গান্ধীজিই

Travancore situation: ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অভূতপূর্ব সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। বেশ কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Vaikom satyagraha, Gandhiji

Vaikom satyagraha-Gandhiji: হিন্দুদের জাতিভেদ প্রথার অবসান ঘটিয়েছিল কংগ্রেস। অনুমতি ছিল গান্ধীজির। (ছবির সূত্র- উইকিমিডিয়া কমন্স, উইকিপিডিয়া)

Vaikom satyagraha Gandhiji: ত্রাভাঙ্কোর রাজ্যের মন্দির শহর ভাইকম। ১৯২৪ সালের ৩০ মার্চ সেখানে অহিংস আন্দোলন ছড়িয়ে পড়েছিল। মন্দিরে প্রবেশ নিয়ে সামাজিক আন্দোলন জাতীয়তাবাদী আন্দোলনের সত্যাগ্রহের ধারা গ্রহণ করেছিল।

Advertisment

বিংশ শতকের গোড়ার দিকে ত্রাভাঙ্কোর
ত্রাভাঙ্কোর রাজ্যে একটি 'সামন্তবাদী, সামরিকবাদী, এবং জাতিবাদ-চালিত সরকারের নির্মম ব্যবস্থাপনা ছিল।' সাংস্কৃতিক নৃতাত্ত্বিক এ আয়াপ্পান, 'Social Revolution in a Kerala Village: A Study in Culture (1965)'-এ লিখেছেন, বর্ণদূষণের ধারণা শুধু স্পর্শই নয়। দর্শনের ওপরও নেমে এসেছিল। নিম্নবর্ণের লোকেদের মন্দির এবং তার চারপাশে 'শুদ্ধ' স্থানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছিল। ১৯ শতকের দ্বিতীয়ার্ধে অভূতপূর্ব সামাজিক পরিবর্তনের সূচনা ঘটে। বেশ কিছু সামাজিক ও রাজনৈতিক উন্নয়ন হয়। খ্রিস্টান মিশনারিরা জাতিগত নিপীড়নের খপ্পর থেকে বাঁচানোর জন্য নিম্নবর্ণের একটি বড় অংশকে ধর্মান্তরিত করেছিল। পাশাপাশি মহারাজা আয়িলিয়াম থিরুনাল রামা ভার্মার (১৮৬০-৮০) শাসনকালে অনেক প্রগতিশীল সংস্কার দেখা যায়। তার অন্যতম ছিল, সর্বজনীন এমনকী নিম্নবর্ণের জন্যও বিনামূল্যে প্রাথমিক শিক্ষা।

পরিস্থিতি বদলাতে শুরু করেছিল
(‘Temple-Entry Movement in Travancore, 1860-1940’: Social Scientist, 1976), গ্রন্থে ইতিহাসবিদ রবিন জেফরি লিখেছেন, 'এই সময় বর্ণহিন্দু, খ্রিস্টান এবং নিম্নবর্ণের হিন্দু, বিশেষ করে এজাভাসদের মধ্যে একটি উল্লেখযোগ্য শিক্ষিত অভিজাত সম্প্রদায় তৈরি হয়। কিন্তু, ধর্ম এবং প্রথা বজায় ছিল। নিম্নবর্ণের বস্তুগত এবং বৌদ্ধিক বঞ্চনা অব্যাহত ছিল। ইতিহাসবিদ মেরি এলিজাবেথ কিং তাঁর, 'Gandhian Nonviolent Struggle and Untouchability in South India (2015)' গ্রন্থে লিখেছেন যে, এজাভাসরা ত্রাভাঙ্কোরের সবচেয়ে শিক্ষিত এবং সংগঠিত অস্পৃশ্য সম্প্রদায় হিসেবে উঠে এসেছিল। কিন্তু, রাজার চাকরিগুলো তখনও উচ্চবর্ণের জন্যই সংরক্ষিত ছিল। ১৯১৮ সালে, বর্ণ হিন্দুরা ছিল জনসংখ্যায় সংখ্যালঘু। রাজার রাজ্যের রাজস্ব বিভাগে ৪,০০০ চাকরির মধ্যে ৩,৮০০টি চাকরি তারাই করত। যার মানে হল, শিক্ষার মাধ্যমে আর্থ-সামাজিক অগ্রগতি ঘটেনি।

এজাভাসদের উত্থান
এজাভাস সম্প্রদায়ের যখন উত্থান ঘটে, তখন থেকেই আচার-অনুষ্ঠানের বৈষম্য, শিক্ষাগত অগ্রগতির বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো শুরু হয়। সেই সময় এজাভা আলুমুতিল চান্নারের কাছে মোটর গাড়ি ছিল। কিন্তু, যখন তাঁর মোটরগাড়ি এমন রাস্তায় পৌঁছয়, যেখানে এজাভাদের যাওয়ার অনুমতি ছিল না, সেখানে চান্নারকে গাড়ি থেকে নেমে হেঁটে ঘুরে যেতে হয়েছিল। এনিয়ে ব্যাপক শোরগোল হয়েছিল। মন্দিরে প্রবেশের বিষয়টি প্রথম উত্থাপন করেছিলেন এঝাভা নেতা টিকে মাধবন। তিনি নিজে পত্রিকা চালাতেন। তাঁর পত্রিকা দেশাভিমানিতে ১৯১৭ সালের একটি সম্পাদকীয়তে মাধবন প্রসঙ্গটি উত্থাপন করেন। গান্ধীর অসহযোগ আন্দোলনের সাফল্যের দ্বারা অনুপ্রাণিত হয়ে ১৯২০ সালের মধ্যে তিনি ভাইকম মন্দিরের কাছে একটি রাস্তায় নিষেধাজ্ঞামূলক নোটিশ বোর্ডের বাইরে গিয়ে প্রতিবাদের স্বাক্ষর রেখেছিলেন। এই পরিস্থিতিতে মহারাজা ঘুরিয়ে এঝাভাদের পাশেই দাঁড়িয়েছিলেন।

আরও পড়ুন-  ভারতের দ্বীপ শ্রীলঙ্কাকে দিয়ে দিয়েছে কংগ্রেস! ভোটের মুখে বিরাট অভিযোগ মোদীর

সরাসরি পাশে থেকেছিল কংগ্রেস
এই পরিস্থিতিতে জাতীয় কংগ্রেস সামাজিক সংস্কারে বড় ভূমিকা নিয়েছিল। মাধবন ১৯২১ সালে গান্ধীর সঙ্গে দেখা করেন। মন্দিরে প্রবেশের ব্যাপারে একটি গণআন্দোলনের জন্য মহাত্মার সমর্থন পান। ১৯২৩ সালে কাকিনাডায় কংগ্রেসের অধিবেশনে, কেরল প্রাদেশিক কংগ্রেস কমিটি একটি মূল ইস্যু হিসেবে অস্পৃশ্যতা বিরোধী প্রস্তাব পাস করেছিল। যে প্রস্তাবে রাস্তা সকলের ব্যবহারের জন্য এবং মন্দির সকলের জন্য, এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল। আর, তারপরই ভাইকম তাঁর প্রিয় শিব মন্দিরকে প্রথম সত্যাগ্রহের স্থান হিসেবে বেছে নেন।

CONGRESS kerala Mahatma Gandhi British
Advertisment