প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী গান্ধীনগর থেকে নতুন প্রজন্মের বন্দে ভারত এক্সপ্রেস ট্রেনের আজ শুভ সূচনা করেন। প্রধানমন্ত্রী মোদী নিজেও এই ট্রেনে চেপে আহমেদাবাদ পর্যন্ত ভ্রমণ করেন এবং নতুন বন্দে ভারত ট্রেনের রোমাঞ্চ অনুভব করেন। এই ট্রেনটি ইতিমধ্যেই ইন্টারনেট সেনসেশন হয়ে উঠেছে।
নতুন এই ট্রেনটি বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। এতে নতুন সব ফিচার যোগ করা হয়েছে। মাত্র পাঁচ ঘণ্টা মিনিটে মুম্বাই পৌঁছে যাবে স্বপ্নের এই বন্দেভারত ট্রেন। বন্দে ভারত 2.0 হল দেশের প্রথম পরবর্তী প্রজন্মের সেমি হাই স্পিড ট্রেন যা গান্ধীনগর ক্যাপিটাল এবং মুম্বাই সেন্ট্রালের মধ্যে আগামীকাল থেকে ছুটে চলবে। দিল্লির দুটি রুটে একটি বিশাল সাফল্যের পরে, ভারতের প্রথম দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হাই স্পিড ট্রেনটি এখন গুজরাটের মাটিতে তার শক্তি প্রদর্শন করবে।
অটোমেটিক ট্রেন প্রোটেকশন সিস্টেম বসানো হয়েছে নতুন এই ট্রেনে। যাত্রী রক্ষীদের মধ্যে যোগাযোগের জন্য ভয়েস রেকর্ডিং সুবিধা যুক্ত করা হয়েছে। ট্রেনে আধুনিক ফায়ার ডিটেকশন সিস্টেম বসানো হয়েছে। এই বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়াও যাত্রীরা ট্রেনের ভিতরে বাতাস বিশুদ্ধিকণের বিশেষ সুবিধাও পাবেন। এর জন্য একটি অ্যান্টি-ব্যাকটেরিয়াল সিস্টেম বসানো হয়েছে।
এই বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়াও, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের অন্যান্য শক্তিশালী বৈশিষ্ট্য রয়েছে যা এই ট্রেনটিকে সবচেয়ে আধুনিক ট্রেনগুলির মধ্যে একটি করে তুলেছে। এর দুর্দান্ত বৈশিষ্ট্য হল এই ট্রেনটি মাত্র ১২৯ সেকেন্ডে শূন্য থেকে ১৬০ কিমি প্রতি ঘণ্টা গতিবেগে যাত্রা করতে সক্ষম। বন্দে ভারত-এর প্রথম সংস্করণে এই সময় ছিল ১৪৫ সেকেন্ড। অন্যান্য বৈশিষ্ট্যগুলির মধ্যে আরও ভাল ফ্লোর প্রুফিংয়ের সঙ্গে এয়ার কন্ডিশনার প্রযুক্তিও উন্নত করা হয়েছে।
প্রধানমন্ত্রীর 'মেক ইন ইন্ডিয়া'-এর ভিশনকে মাথায় রেখে, প্রধান ট্রেন সিস্টেমগুলি ভারতে ডিজাইন ও তৈরি করা হয়েছে। ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে সারা দেশে ৭৫ টি বন্দে ভারত ট্রেন চালানোর লক্ষ্য রয়েছে। গুজরাটে নতুন বন্দে ভারত এক্সপ্রেস দেশের তৃতীয় বন্দে ভারত ট্রেন। অন্য দুটি ট্রেন দিল্লি-বারানসি এবং নয়াদিল্লি-শ্রী মাতা নয়াদিল্লী দেবী কাটরার মধ্যে চলছে। আজাদি কা অমৃত মহোৎসব উদযাপনের অংশ হিসাবে, প্রধানমন্ত্রী ২০২৩ সালের আগস্টের মধ্যে সারা দেশে ৭৫ টি বন্দে ভারত ট্রেন চালানোর লক্ষ্য নির্ধারণ করেছেন।
একনজরে দেখে নেওয়া যাক নতুন বন্দে ভারত একপ্রেসের সেরা কিছু বৈশিষ্ট্য-
এই ট্রেনটি মাত্র ৫২ সেকেন্ডে বুলেট ট্রেনের চেয়ে দ্রুত গতিতে অর্থাৎ ০-১০০ কিমি গতিতে ছুটতে পারে। বুলেট ট্রেন ০-১০০ কিমি গতিতে পৌঁছতে ৫৫ সেকেন্ড সময় নেয়। বন্দে ভারত এক্সপ্রেস সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ১৬০ কিমি। আসনগুলো আগের তুলনায় আরও আরামদায়ক ও নরম করা হয়েছে। নতুন বন্দে ভারতে ১১২৮ টি আসন রয়েছে যেখানে ২টি কোচে এক্সিকিউটিভ চেয়ার কার রয়েছে। নতুন বন্দে ভারতে আর্মার সিস্টেম কাজ করবে, যেখানে দুটি ট্রেন একটি ট্র্যাকে আসার সঙ্গে সঙ্গেই অটোমেটিক ব্রেকিং সিস্টেম কাজ করা শুরু করবে।
নিরাপত্তার কথা মাথায় রেখে প্রতিটি কোচে দুটি ইমারজেন্সি এক্সিটের ব্যবস্থা করা হয়েছে। প্রতিটি কোচে ৮টি সিসিটিভি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। আগুন লাগার ক্ষেত্রে স্বয়ংক্রিয় অ্যালার্ম সিস্টেম বসানো হয়েছে নতুন এই ট্রেনে। ড্রাইভার কেবিনে হাই-টেক বৈশিষ্ট্য রয়েছে, যেখানে ড্রাইভার ডিজিটাল মোডে সব ধরণের তথ্য পাবেন। টক ব্যাক ডিভাইসের মাধ্যমে চালক যাত্রী এবং যাত্রী চালকের সঙ্গে কথা বলতে পারবেন।