দেশাত্মবোধক সংগীত বন্দে মাতরমকে জাতীয় সংগীত জনগণমন-র সমমর্যাদা দেওয়া হোক, এ আবেদন খারিজ করে দিল দিল্লি হাইকোর্ট।
দিল্লি হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি ডিএন প্যাটেল ওবে বিচারপতি হরি শংকরের ডিভিশন বেঞ্চ বলেছে এ আবেদন গ্রাহ্য করার কোনও কারণ তাঁরা পাচ্ছেন না। আইনজীবী অশ্বিনী কুমার উপাধ্যায় এক আবেদন বলেছিলেন, বন্দে মাতরমকে জাতীয় সংগীতের মর্যাদা দিতে নির্দেশ দেওয়া হোক কেন্দ্রকে।
আরও পড়ুন, কেন মমতা তড়িঘড়ি নিগৃহীত অধ্যাপককে ফোন করতে গেলেন
এর আগে ২০১৭ সালে মাদ্রাজ হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ ওই আদালতেই এক বিচারপতির একটি নির্দেশ বাতিল করে দেন। কয়েক মাস আগের সেই বাতিল হওয়া নির্দেশে বলা ছিল বন্দে মাতরম গাওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে।
বিচারপতি এম ভি মুরলীধরণ নির্দেশ দেন তামিলনাড়ুর সমস্ত সরকারি-বেসরকারি স্কুলে সপ্তাহে অন্তত দু দিন বন্দে মাতরম গাওয়া বাধ্যতামূলক করতে হবে।
বিচারপতি এও বলেছিলেন যে ছাত্ররা যদি বাংলা বা সংস্কৃত ভাষায় এ গান গাইতে অসুবিধে বোধ করে, তাহলে তামিলে এ গান অনুবাদ করার পদক্ষেপ নেওয়া যেতে পারে।
আরও পড়ুন, ২৮ বছর পর সাধারণ প্যারোলে মুক্ত রাজীব হত্যাপরাধী নলিনী: এবার কী?
দিল্লি হাইকোর্টের আবেদনকারী বলেছিলেন বন্দে মাতরম জাতীয়তাবাদী আন্দোলনে বড় ভূমিকা রেখেছিল এবং একে জাতীয় সংগীতের সমমর্যাদা দেওয়া উচিত। আবেদনে বলা হয়েছিল, জনগণমন গানে মনের অবস্থা বর্ণনা করে হয়েছে, বন্দে মাতরমে বর্ণিত হয়েছে দেশের চরিত্র।
বন্দে মাতরম দীর্ঘ দিন ধরেই বিতর্কের কেন্দ্রে। কয়েক দক ধরেই মুসলিমরা বলে আসছেন এ গানে যেহেতু দেশকে মাতৃরূপিণী ঈশ্বরীর সঙ্গে তুলনা করা হয়েছে, সে কারণে এ গান নিয়ে তাঁদের অস্বস্তি রয়েছে।
২০০৬ সালে জামিয়ত উলেমা-ই-হিন্দের নেতৃত্ব ঘোষণা করেছে কোনও সত্যিকারের মুসলিম কোনওদিন বন্দে মাতরম গাইতে পারেন না। ২০০৯ সালে এ গান গাওয়ার বিরুদ্ধে ফতোয়া ঘোষণা করেছে দেওবন্দ।
আরও পড়ুন, কেন এনআরসি-র চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশের তারিখ পিছিয়ে দিল সুপ্রিম কোর্ট
১৮৭০ সালে বঙ্কিমচন্দ্র এ গানটি রচনা করেছিলেন। ১৮৮২ সালে বঙ্কিমের আনন্দমঠ প্রকাশিত হওয়ার পর এ গান জনপ্রিয় হয়। বাংলার জাতীয়বাদীদের মধ্যে এ গান দেশপ্রেমের উন্মেষ ঘটিয়েছে।
ভারতের একের পর এক প্রজন্মের কাছে বন্দে মাতরম এক আবেগঘন সংগীত, সে স্বাধীনতার আগেই হোক বা পরে। যদিও এর বিতর্কিত ইতিহাস এবং অর্থের কারণে এ নিয়ে বিতর্কও উঠে এসেছে মাঝে মাঝেই।
Read the Full Story in English