India should target per capita: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী দেশবাসীকে বিকশিত ভারত (ভিক্সিত ভারত)-এর স্বপ্ন দেখিয়েছেন। কিন্তু, আর্থিক ক্ষেত্রে বিকাশের লক্ষ্য কী হবে, সেটা অত্যন্ত জরুরি প্রশ্ন। বর্তমানে কেন্দ্রীয় সরকার জিডিপিকে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে নির্ধারণ করেছে। কিন্তু, জিডিপি বা জাতীয় মোট উৎপাদন বাড়লেই কি দেশের অগ্রগতি ঘটে গিয়েছে বলে আদৌ ধরা যায়? আর্থিক বিশেষজ্ঞদের একাংশের স্পষ্ট মত, মাথাপিছু আয় বা দেশের মাথাপিছু গড় আয় না বাড়লে, কিছুতেই কোনও দেশকে বিকশিত দেশ বলা সম্ভব নয়।
বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি
যদি জিডিপির হিসাবকেই বিকাশের মাত্রা হিসেবে ধরা হয়, তবে সামান্য ৬% বার্ষিক জিডিপি বাড়লেও, ভারত ২০২৮ সালের মধ্যে বিশ্বের তৃতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হয়ে উঠবে। সেক্ষেত্রে ২০৪৭ সালের মধ্যে এক 'উন্নত ভারত'-এর লক্ষ্যে হাঁটা ভারতের মাথাপিছু জিডিপি দাঁড়াবে ১৩ হাজার থেকে ১৪ হাজার মার্কিন ডলার। অনেকেই হয়তো জানেন না যে ১৯৯০ সালে চিনের মাথাপিছু মোট জাতীয় উৎপাদন (জিডিপি) ভারতের চেয়ে কম ছিল। আর, এর সামগ্রিক জিডিপি, যা একবছরে দেশের মধ্যে উত্পাদিত সমস্ত পণ্য ও পরিষেবার মূল্য- ভারতের তুলনায় সামান্য, ২৩% বেশি।
চিনের জিডিপি বেড়েছে
১৯৯০ সালে, চিন এবং ভারত ছিল বিশ্বের ১১তম এবং ১২তম বৃহত্তম অর্থনীতি। দুই দেশের নামমাত্র জিডিপি ছিল যথাক্রমে ৩৯৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার এবং ৩২১ বিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরের দুই দশকে এই হিসেবটা বদলে গেছে। চিনের প্রকৃত জিডিপি ১৯৯০-এর দশকে প্রতিবছর গড়ে ১০% এবং ২০০০-এর দশকে ১০.৪% হারে বৃদ্ধি পেয়েছিল। ২০১০ সালের মধ্যে, চিন মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের পরে বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনীতি হিসেবে উঠে এসেছে।
ব্যবধান বাড়িয়েছে চিন
১৯৯০ সালে প্রায় একইস্তরে শুরু করার পরে, চিন ক্রমশ এগিয়ে যায়। আর, ভারতের সঙ্গে তার মোট জাতীয় উৎপাদনের ব্যবধান আরও প্রসারিত হয়। ১৯৯০ সালে, চিনের অর্থনীতি ভারতের চেয়ে ১.২ গুণেরও বেশি ছিল। ২০১০ এবং ২০২২ সালে সেটাই বেড়ে যথাক্রমে ভারতের অর্থনীতির ৩.৬ গুণ এবং ৫.৩ গুণ হয়েছে। চিনের মাথাপিছু জিডিপি ২০১৯ সালের মধ্যে ১০ হাজার মার্কিন ডলার ছাড়িয়েছে।
আরও পড়ুন- ইডির আইনজীবী মুখই খুলতে পারেননি, সঞ্জয় সিংয়ের জামিনের আসল কারণ ফাঁস
ভারতের অবস্থান
অন্যদিকে, ডলারের বিচারে ভারতের প্রকৃত জিডিপির বৃদ্ধি ২০১০-২২ সালে গড়ে ৫.৯% এবং ২০১৪-য় নরেন্দ্র মোদী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে ৫.৭%-এ নেমে এসেছে। বিশ্ববাজারে যেহেতু ডলারের মাধ্যমে আমদানি, রফতানি বেশি হয়, তাই ভারতের জিডিপি বাড়লেও তা আন্তর্জাতিক দুনিয়ায় ডলারের মাপকাঠিতে তাই যথেষ্ট কম। কারণ, ডলারের তুলনায় টাকার মূল্যের পতন। এই পরিস্থিতিতে বিশেষজ্ঞদের একাংশ মনে করছেন, জিডিপি বৃদ্ধির প্রকৃত সুফল পেতে হলে জনগণের মাথাপিছু উৎপাদন এবং আয় সমানতালে বৃদ্ধি করা জরুরি। তাতেই দেশবাসীর জীবনযাত্রার মানে জিডিপি বৃদ্ধির প্রতিফলন পড়বে। না-হলে জিডিপি বৃদ্ধির হিসেবে অনেক ফাঁক থেকে যাবে।