Advertisment

Explained: বিকাশের সংকল্পে ভারত, সংস্কৃতিতে বিরাট পদক্ষেপ! কাশীর সঙ্গে তামিল ভাবধারাকে মেলাচ্ছেন মোদী

১৭ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Viksit Bharat Sankalp Yatra

রবিবার, ১৭ ডিসেম্বর, ২০২৩-এ উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথ এবং অন্যান্যদের সঙ্গে বারাণসীতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিকশিত ভারত গঠনের সংকল্পে শপথ নিচ্ছেন। (পিটিআই ছবি)

'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' আর 'কাশী তামিল সংগমম' কী? প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর ঘোষণার পর থেকে এই শব্দগুলোর সঙ্গে পরিচিত হয়েছিল গোটা ভারত। ১৭ ডিসেম্বর, রবিবার এই দুটি বিষয়ে যে আরও বেশি করে জোর দেওয়া হবে, বারাণসীতে তা স্পষ্ট করলেন প্রধানমন্ত্রী। 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' অনুষ্ঠানে ভাষণ দিতে গিয়ে, প্রধানমন্ত্রী বলেন, 'বিকাশ ভারত সংকল্প যাত্রা আমার কাছে অত্যন্ত স্পর্শকাতর বিষয়। আমি যা বলেছি এবং যা করেছি, তা কি আমি যেভাবে চেয়েছিলাম সেভাবে হয়েছে? এটা থেকে কি তাঁরা উপকৃত হয়েছেন, যাঁদের জন্য এই সব ঘোষণাগুলো করা হয়েছিল?'

Advertisment

প্রধানমন্ত্রী বলেছেন

প্রধানমন্ত্রী যোগ করেন, 'বিকাশ ভারত সংকল্প যাত্রা একটি বড় স্বপ্ন। এটি একটি বড়সড় সংকল্প। যা, আমাদের নিজেদের চেষ্টায় পূরণ করতে হবে।' প্রধানমন্ত্রী মোদী তাঁর সংসদীয় এলাকা বারাণসীতে দু'দিনের সফরে এই সব মন্তব্য করেছেন। সোমবার তিনি সেবাপুরী উন্নয়ন ব্লকের বারকি গ্রামসভায় 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা' কর্মসূচিতে অংশ নেন। তিনি বারাণসী এবং পূর্বাচল অঞ্চলে ১৯,১৫৫ কোটি টাকার ৩৭টি প্রকল্পের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন করেছেন। প্রধানমন্ত্রী তাঁর সফরে কাশী তামিল সংগমমের দ্বিতীয় সংস্করণেরও উদ্বোধন করবেন। চলুন দেখে নিই, 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা', 'কাশী তামিল সংগমম' কী?

'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা'

'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা'- হল একটি সরকারি উদ্যোগ। এই উদ্যোগ গোটা দেশে নেওয়া হয়েছে। আয়ুষ্মান ভারত, উজ্জ্বলা যোজনা, পিএম সুরক্ষা বিমা, প্রধানমন্ত্রী স্বনিধির মত কেন্দ্রীয় প্রকল্পগুলোর বাস্তবায়ন সম্পর্কে সচেতনতা বাড়াতে এবং এই প্রকল্পগুলো কেমনভাবে চলছে, তার ওপর নজর রাখার জন্য এই কর্মসূচি বা প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে। যার ওয়েবসাইট অনুসারে, 'বিকশিত ভারত সংকল্প যাত্রা'র চারটি লক্ষ্য: 'যারা বিভিন্ন প্রকল্পের অধীনে যোগ্য কিন্তু এখনও পর্যন্ত সুবিধা পাননি, তাঁদের কাছে সেই সব প্রকল্পের সুবিধা পৌঁছে দেওয়া। তথ্যের প্রচার এবং প্রকল্প সম্পর্কে সচেতনতা তৈরি করা। সরকারি প্রকল্পের সুবিধাভোগীদের থেকে তাঁদের ব্যক্তিগত গল্প/অভিজ্ঞতা জেনে নেওয়া। সংকল্প যাত্রা চলাকালীন বিশদ বিবরণের মাধ্যমে সম্ভাব্য সুবিধাভোগীদের তালিকাভুক্ত করা।'

গৃহীত কর্মসূচি

বিভিন্ন কেন্দ্রীয় মন্ত্রক এবং রাজ্য সরকারের সক্রিয় অংশগ্রহণের মাধ্যমে এই কর্মসূচি হাতে নেওয়া হচ্ছে। ১৬ ডিসেম্বর, প্রধানমন্ত্রী মোদী রাজস্থান, মধ্যপ্রদেশ, ছত্তিশগড়, তেলেঙ্গানা এবং মিজোরামে এই সংকল্প-যাত্রা শুরু করেছিলেন। লক্ষ্য ছিল সেই পাঁচটি রাজ্য, যেখানে সম্প্রতি বিধানসভা নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অন্যান্য রাজ্যে অবশ্য এর আগেই কর্মসূচিটি শুরু হয়েছিল। কিন্তু, নির্বাচনের আগে আদর্শ আচরণবিধি জারি থাকায় এই পাঁচটি রাজ্যে সংকল্প যাত্রা শুরু করা সম্ভব হয়নি। প্রথমে, ১৫ নভেম্বর ঝাড়খণ্ডের খুন্তি থেকে এই সংকল্প যাত্রার সূচনা হয়। সরকারের প্রেস ইনফরমেশন ব্যুরো (পিআইবি) জানিয়েছে, 'মাত্র একমাসেরও অল্প সময়ের মধ্যে, এই সংকল্প যাত্রা দেশের ৬৮,০০০ গ্রাম পঞ্চায়েত (জিপি)-জুড়ে বসবাসকারী আড়াই কোটিরও বেশি নাগরিকের কাছে পৌঁছে গিয়েছে। আরও, প্রায় দু'কোটি ব্যক্তি, বিকশিত ভারত সংকল্প গ্রহণ করেছেন। আর, কেন্দ্রীয় সরকারি প্রকল্পের ২ কোটিরও বেশি সুবিধাভোগী 'মেরি কাহানি মেরি জুবানি' উদ্যোগের অধীনে তাঁদের অভিজ্ঞতা শেয়ার করেছেন। নাগরিকরা প্রকল্পের ওয়েবসাইটে একটি ফর্ম পূরণ করে এবং তারপর একটি শংসাপত্র ডাউনলোড করে তাঁদের সংকল্প (শপথ) গ্রহণ করেছেন।'

আরও পড়ুন- মাত্র দুই সপ্তাহেই আত্মসমর্পণ, পূর্ব পাকিস্তানে ভারতের বিজয়, রূপকথার ইতিহাস

'কাশী তামিল সংগমম' কী?

'কাশী তামিল সংগমম' প্রকল্প গত বছর হাতে নেওয়া হয়েছে। ভারতের উত্তর ও দক্ষিণের মধ্যে ঐতিহাসিক এবং সভ্যতাগত সংযোগের বিভিন্ন দিক প্রকাশের লক্ষ্যে হাতে নেওয়া হয়েছে এই প্রকল্প। এবছর, প্রকল্পটি ১৭ ডিসেম্বর থেকে ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত চলবে। তামিলনাড়ু এবং বারাণসীর বিভিন্ন সাংস্কৃতিক দল কাশীতে অনুষ্ঠান পরিবেশন করবে। পিআইবির মতে, 'এই জনসংযোগ কর্মসূচির প্রধান উদ্দেশ্য হল কাশী এবং তামিলনাড়ুর মধ্যে জীবন্ত বন্ধনকে পুনরুজ্জীবিত করা। প্রাচীন ভারতে শিক্ষা ও সংস্কৃতির দুটি গুরুত্বপূর্ণ কেন্দ্র ছিল কাশী এবং তামিলনাড়ু। এই প্রকল্প জ্ঞান এবং সংস্কৃতির সেই দুটি ঐতিহ্যপূর্ণ স্থানকে কাছাকাছি নিয়ে আসবে। উৎসবের সাহায্যে দুটি প্রাচীন সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের মধ্যে বৌদ্ধিক, সাংস্কৃতিক, আধ্যাত্মিক এবং শিল্পগত সংযোগকে পুনরায় আবিষ্কার এবং শক্তিশালী করবে এই প্রকল্প। সরকারের প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে যে, অনুষ্ঠানে তামিলনাড়ু ও কাশীর শিল্প ও সংস্কৃতি, তাঁত, হস্তশিল্প, রন্ধনপ্রণালী এবং অন্যান্য বিশেষ পণ্য প্রদর্শনের স্টল তৈরি করা হয়েছে। আধুনিক উদ্ভাবন, ব্যবসায়িক বিনিময়, এডুটেক এবং পরবর্তী প্রজন্মের অন্যান্য প্রযুক্তি'কে এখানে তুলে ধরা হবে। সাহিত্য, প্রাচীন গ্রন্থ, দর্শন, আধ্যাত্মিকতা, সংগীত, নৃত্য, নাটক ইত্যাদি বিষয়ে সেমিনার, আলোচনা, বক্তৃতা ইত্যাদির আয়োজন করা হবে। ইভেন্টের প্রতিনিধিদের প্রথম ব্যাচ, তামিলনাড়ু থেকে 'গঙ্গা' নামে ছাত্রদের একটি দল, রবিবার কাশী পৌঁছেছে। আরও ছয়টি দল, শিক্ষক (যমুনা), পেশাদার (গোদাবরী), আধ্যাত্মিক সদস্য (সরস্বতী), কৃষক ও কারিগর (নর্মদা), লেখক (সিন্ধু) এবং ব্যবসায়ী (কাবেরী)-দের দল আগামী দিনে শহরে (কাশী) পৌঁছবে।'

Hindu culture Kashi Vishwanath Dham India modi yogi adityanath
Advertisment