বুধবার চার দিনের সফরে নয়াদিল্লি পৌঁছেছেন নেপালের প্রধানমন্ত্রী পুষ্পকমল দাহাল ওরফে প্রচণ্ড। গত বছর (২০২২ সালে) ডিসেম্বরে তিনি নেপালের প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্ব গ্রহণ করেন। বৃহস্পতিবার ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে তাঁর বৈঠক। দুই প্রতিবেশী রাষ্ট্রনেতার আলোচ্য বিষয়বস্তর মধ্যে রয়েছে শক্তিক্ষেত্র, বাণিজ্য এবং পারস্পরিক সহযোগিতা।
নাগরিকত্বে উদারতা
কাঠমান্ডু থেকে প্রধানমন্ত্রীর যাত্রার কয়েক ঘণ্টা আগে, নেপালের প্রেসিডেন্ট রামচন্দ্র পাউডেল নেপালের নাগরিকত্ব আইনের একটি বিতর্কিত সংশোধনীতে সম্মতি দিয়েছেন। এই সংশোধনী অনুযায়ী, কোনও নেপালের নাগরিককে বিয়ে করলে বিবাহিত বিদেশি মহিলা তৎক্ষণাৎ নেপালের নাগরিকত্ব পাবেন। সঙ্গে পাবেন রাজনৈতিক অধিকারের নিশ্চয়তা।
চিনের বাড়াবাড়ি
এর আগে নেপালের আইনের এই সংশোধনীতে সম্মতি দিতে অস্বীকার করেছিলেন প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট বিদ্যাদেবী ভান্ডারী। এমনকী নেপালের পার্লামেন্ট তাঁর কাছে সংশোধনীটি দ্বিতীয়বার ফেরত পাঠানোর পরেও বিদ্যাদেবী ভাণ্ডারী ওই আইনে সম্মতি দেননি। এবার সেই সংশোধনীতেই নেপালের বর্তমানে প্রেসিডেন্ট সম্মতি দেওয়ায় নেপালের নাগরিকত্ব আইন বিশ্বের সবচেয়ে উদারপন্থী আইন হয়ে উঠল। প্রেসিডেন্ট পাউডেলের এই পদক্ষেপ অবশ্য চিনকে বিচলিত করতে পারে। কারণ, বারবার নেপালকে চিন সতর্ক করে আসছিল যে এই আইন তিব্বতি উদ্বাস্তুদের বংশধরদের নেপালে নাগরিকত্ব এবং সম্পত্তির অধিকার দিতে পারে। যাতে চিনের তীব্র আপত্তি রয়েছে।
আরও পড়ুন- বাড়তে চলেছে জিডিপি? কী আশা করছে বিভিন্ন সরকারি প্রতিষ্ঠান?
প্রচণ্ডর অবস্থান বদল
ভারত ও নেপালের সম্পর্ক বরাবরই বেশ ভালো। সেই সূত্র ধরে ১৯৯৭ সালের আগে পর্যন্ত দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানরা একে অপরের দেশে সফর অব্যাহত রেখেছিলেন। এটা ছিল দ্বিপাক্ষিক নিয়মিত চর্চিত ঐতিহ্য। কিন্তু, ১৯৯৭ সালের পর থেকে সেই ঐতিহ্য বা চিরাচরিত রীতিতে ভাটা পড়ে। প্রচণ্ডও প্রথমে অত্যন্ত চিনপন্থী ছিলেন। একইসঙ্গে ছিলেন ভারতবিদ্বেষী। কিন্তু, নেপালের ওপর চিন যেভাবে নানা ক্ষেত্রে নিয়ন্ত্রণ কায়েম করার চেষ্টা করছে, তার জেরে প্রচণ্ডও এখন চিনের ব্যাপারে সতর্ক। একইসঙ্গে, ভারতকে তিনি বন্ধু হিসেবে চাইছেন বলেই নয়াদিল্লির ধারণা।