মাত্র তিন মাস আগে চিনের শীর্ষ নেতা শি জিনপিং, মস্কোয় ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক করেছিলেন। সেই সময় রাশিয়ান প্রেসিডেন্ট দাবি করেছিলেন যে তাঁর ওপর জনগণের 'দৃঢ় সমর্থন' আছে। সেই সমর্থনের প্রতি আস্থা প্রকাশ করেছিলেন চিনের প্রেসিডেন্টও। কিন্তু, সেই আস্থা এখন প্রশ্নে বিদ্ধ। খোদ রাশিয়ার বুকে বেসরকারি সেনা সংস্থা ওয়াগনার প্রাইভেট মিলিটারি গ্রুপ পুতিনের সরকারের বিরুদ্ধে বিদ্রোহ ঘোষণা করেছিল। যা পুতিনের দুর্বলতর ভাবমূর্তিকে প্রকাশ করে দিয়েছে।
চিনের নেতারাই এখন বলছেন যে এই বিদ্রোহ স্বল্পস্থায়ী হলেও তা চিন ও রাশিয়ার সম্পর্ককে প্রভাবিত করতে পারে। কারণ, ইতিমধ্যেই রাশিয়ার জন্য চিন বিশ্বব্যাপী সমালোচনার মুখে পড়েছে। শুধু তাই নয়, বিদেশে চিনের কিছু স্বার্থও হুমকির মুখে পড়েছে। মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের আধিপত্যের বৈশ্বিক ব্যবস্থাকে চ্যালেঞ্জ করার জন্য চিন এমনিতেই আমেরিকা এবং তার বন্ধু রাষ্ট্রগুলোর কুনজরে রয়েছে। তার ওপর দীর্ঘদিন ধরে তারা রাশিয়াকে প্রয়োজনীয় অংশীদার হিসেবে দেখে। তাই ঝুঁকিপূর্ণ হলেও ইউক্রেনে পুতিনের সেনার হামলার পর রাশিয়ার সঙ্গে চিন বন্ধুত্বের সম্পর্কে ছেদ ঘটায়নি। আর, পুতিনও পশ্চিমী দেশগুলোর চাপের মুখে চিনের ওপর আরও বেশি করে নির্ভরশীল হয়ে পড়েছেন।
আরও পড়ুন- হুল দিবস, ব্রিটিশদের বিরুদ্ধে ভারতীয়দের প্রথম মুক্তিযুদ্ধ!
এই পরিস্থিতিতে চিন ও রাশিয়া উভয় দেশের স্বার্থ বজায় রাখতে হলে, পুতিনকে নিয়ন্ত্রণে থাকতে হবে। তবে, রাশিয়ার পাশে থাকবে চিন। কারণ, তাতে চিনের স্বার্থ মিটবে। এমনটাই মনে করছেন বেজিংয়ের বিশেষজ্ঞরা। কিন্তু, এই পরিস্থিতিতে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে যে পুতিনকে নিয়ন্ত্রণে রাখলেই কি সব সমস্যা মিটে যাবে? প্রশ্নটা উঠেছে, কারণ ওয়াগনারের সৈন্যরা মস্কোর দিকে অগ্রসর হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে নিয়মিত রাশিয়ান বাহিনীর কাছ থেকে কোনও প্রতিরোধের সম্মুখীন হয়নি।
বিদ্রোহের নেতা ইয়েভজেনি প্রিগোজিনকে বেলারুশে অভয়ারণ্যে নির্বাসন দেওয়ার পুতিনের সিদ্ধান্ত কার্যত আপস। এর মধ্যে কোনও লড়াইয়ের চিহ্নমাত্র ছিল না। স্বাভাবিক ভাবে যে লড়াই হওয়ার কথা ছিল। কিন্তু, তা না-হওয়ায় পুতিন যেভাবে আপস করেছেন, সূত্রের খবর যে সেটাই চিন্তায় রাখছে চিনকে।