Joint Committee of Parliament: নরেন্দ্র মোদীর নেতৃত্বাধীন কেন্দ্রীয় সরকার ওয়াকফ আইনে বদল আনতে চাইছে। ১৯৯৫ সালের ওয়াকফ আইন সংশোধনের জন্য একটি বিল আনা হয়েছে। কীভাবে ওয়াকফগুলোকে শাসন করা যায়, নিয়ন্ত্রণ করা যায়, তাতে ব্যাপক পরিবর্তন আনা যায়, সেই সমস্ত প্রস্তাব-সহ বিলটি বিরোধী সাংসদদের প্রতিবাদের পর সংসদের একটি যৌথ কমিটির কাছে পাঠানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারই এই ওয়াকফ (সংশোধনী) বিল, ২০২৪ সংসদের যৌথ কমিটির কাছে সরকার পাঠিয়েছে। কেন্দ্রীয় সংখ্যালঘু বিষয়কমন্ত্রী কিরেন রিজিজু বিলটি পেশ করে বিরোধী দলগুলোর তীব্র সমালোচনার মুখে পড়েছেন। বিরোধীরা প্রস্তাবিত আইনটিকে, 'অসাংবিধানিক', 'সংখ্যালঘু বিরোধী' এবং 'বিভাজনকারী' বলে তীব্র কটাক্ষ করেছেন।
ওয়াকফ সম্পত্তি কী?
ওয়াকফ হল মুসলমানদের দ্বারা একটি নির্দিষ্ট উদ্দেশ্যে দেওয়া ব্যক্তিগত সম্পত্তি। যা ধর্মীয়, দাতব্য বা ব্যক্তিগত উদ্দেশ্যে দান করা হয়। এই সম্পত্তির সুবিধাভোগীরা আলাদা হতে পারেন। সম্পত্তির মালিকানা ঈশ্বরের হেফাজতে থাকে বলে বোঝানো হয়। একটি ওয়াকফ হল দলিল বা উপকরণ। এই দলিল কিন্তু, মৌখিকভাবে গঠিত হতে পারে। কোনও সম্পত্তিকে ওয়াকফ বলে গণ্য করা যেতে পারে, যদি তা দীর্ঘ সময়ের জন্য ধর্মীয় বা দাতব্য উদ্দেশ্যে ব্যবহার করা হয়। একবার একটি সম্পত্তিকে ওয়াকফ হিসেবে ঘোষণা করা হলে, এর চরিত্র চিরতরে পরিবর্তিত হয় এবং সেটা বদলানো যায় না।
ওয়াকফ কীভাবে পরিচালিত হয়?
ভারতে ওয়াকফ সম্পত্তিগুলো 'ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫' দ্বারা নিয়ন্ত্রিত হয়। ১৯১৩ সাল থেকে ভারতে ওয়াকফ শাসনের জন্য একটি বিধান রয়েছে। সেই সময় মুসলিম ওয়াকফ বৈধকরণ আইন কার্যকর হয়েছিল। এর পরে কার্যকর হয়, 'মুসলিম ওয়াকফ আইন, ১৯২৩'। স্বাধীনতার পরে, 'কেন্দ্রীয় ওয়াকফ আইন, ১৯৫৪' তৈরি হয়। পরে তার বদলে চালু হয়, 'ওয়াকফ আইন, ১৯৯৫'। এরপর ২০১৩ সালে, আইনে ওয়াকফ সম্পত্তি দখলের জন্য দুই বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের শাস্তি চালু হয়। ওয়াকফ সম্পত্তি বিক্রয় করা, উপহার দেওয়া, বিনিময় করা, বন্ধক দেওয়া বা হস্তান্তর করা স্পষ্টভাবে নিষিদ্ধ করার জন্য আইনে সংশোধন করা হয়েছিল।
ওয়াকফ বোর্ডের কাজ কী?
একটি ওয়াকফ বোর্ড হল রাজ্য সরকারের অধীনস্ত একটি সংস্থা। এই সংস্থা রাজ্যজুড়ে ওয়াকফ সম্পত্তির দেখভালের কাজ করে। বেশিরভাগ রাজ্যে, শিয়া এবং সুন্নি সম্প্রদায়ের জন্য আলাদা ওয়াকফ বোর্ড আছে। দেশের প্রায় সব বিশিষ্ট মসজিদই ওয়াকফ সম্পত্তি এবং রাজ্যের ওয়াকফ বোর্ডের অধীনে রয়েছে।
আরও পড়ুন- সুপ্রিম কোর্টে নাস্তানাবুদ ইডি-সিবিআই! সিসোদিয়ার কেসে মোদী সরকারের অস্ত্র ব্যর্থ কেন?
ওয়াকফ আইনে কোন বড় পরিবর্তনের প্রস্তাব করা হয়েছে?
প্রস্তাবিত বিলটি ওয়াকফ আইনের বর্তমান কাঠামোকে উল্লেখযোগ্যভাবে পরিবর্তন করতে চায়। মূলত মুসলিম সম্প্রদায় দ্বারা পরিচালিত ওয়াকফ সংশোধনী বোর্ড এবং ট্রাইব্যুনালের হাত থেকে ওয়াকফ পরিচালনার ক্ষমতা কেড়ে নিতে চায়। আর, সেগুলো রাজ্য সরকারের হাতে তুলে দিতে চায়। যাকে মুসলিমদের সম্পত্তি দখলের সরকারি প্রচেষ্টা বলে অভিযোগ করছে বিরোধীরা।