Water crisis in Bengaluru and neighbouring areas: দক্ষিণের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শহরগুলোর অন্যতম বেঙ্গালুরু। তারই পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেখা গিয়েছে তীব্র পানীয় জলের সংকট। শুধু বেঙ্গালুরুই নয়। কর্ণাটকের প্রতিবেশী রাজ্যগুলোরও কমবেশি একই দশা। কারণটা বর্ষা আর জলাশয়ের প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত বলে, বিশেষজ্ঞদের দাবি।
বেঙ্গালুরুতে তীব্র জলসংকট
এই পরিস্থিতিতে বেঙ্গালুরুতে পানীয় জলের তীব্র সংকট গত কয়েকদিন ধরেই আন্তর্জাতিক সংবাদের শিরোনামে স্থান পেয়েছে। সোমবার (১৮ এপ্রিল), কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া বলেছেন যে বেঙ্গালুরু প্রতিদিন ৫০ কোটি লিটার জলের ঘাটতির সম্মুখীন হচ্ছে। এই ঘাটতি, দক্ষিণের শহরটির দৈনিক মোট জলচাহিদার প্রায় পঞ্চমাংশ। সিদ্দারামাইয়া জানান, এই পরিস্থিতিতে বেঙ্গালুরুর জন্য অতিরিক্ত জল সরবরাহের ব্যবস্থা করা হচ্ছে।
অন্যান্য রাজ্যেও জলসংকট
তবে, এই জলের ঘাটতি বেঙ্গালুরুতেই সীমাবদ্ধ নয়। আর, এটা কেবল পানীয় জলের সমস্যাও নয়। পুরো কর্ণাটক রাজ্যের পাশাপাশি তেলেঙ্গানা এবং মহারাষ্ট্রের বিভিন্ন অঞ্চলও জলের ঘাটতির মুখে পড়েছে। এর কারণ হিসেবে বিশেষজ্ঞরা জানাচ্ছেন, দক্ষিণের বেশিরভাগ অঞ্চলেই গত এক বছরে স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত হয়েছে। সেই কারণে এই জলসংকট গোটা অঞ্চলের ভূগর্ভস্থ জলাধারের সঙ্গেই সম্পর্কিত।
জলের ঘাটতি কেন
গত বছরের বর্ষাকালে, কর্ণাটকে বৃষ্টিপাত হয়েছে স্বাভাবিকের থেকে ১৮ শতাংশ কম। যা, ২০১৫ সালের পর থেকে সর্বনিম্ন। এমনকী বর্ষা-পরবর্তী সময়েও কর্ণাটকে খুব বেশি বৃষ্টি হয়নি। দেশের অন্যান্য অংশের মতো, দক্ষিণের এই রাজ্যে বর্ষাকালে বার্ষিক বৃষ্টিপাতের একটি বড় অংশের জল সংরক্ষণ করা হয়। সেই জল জলাধারগুলোকে ভরাট করে এবং জলাশয়গুলোকে পরিপূর্ণ করে। যার জেরে বর্ষার মাসগুলোয় বৃষ্টিপাতের ঘাটতি, প্রায়শই দক্ষিণের রাজ্যগুলোয় জলের অভাব বাড়িয়ে তোলে।
কর্ণাটকে জলসংকটের কারণ
গত বর্ষায় স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাত কিন্তু, শুধু কর্ণাটকেই হয়নি। কেরলেও ৩৪ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি ঘটেছে। বিহার, ঝাড়খণ্ড এবং পূর্ব উত্তরপ্রদেশে প্রায় ২৫ শতাংশ বৃষ্টির ঘাটতি লক্ষ্য করা গিয়েছে। কিন্তু, তারপরও কর্ণাটকে জলসংকট বেশি তীব্র আকার নিয়েছে। আইআইটি গান্ধীনগরের সিভিল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং আর্থ সায়েন্সের অধ্যাপক সুবিমল মিশ্র জানিয়েছেন, এর কারণ, দক্ষিণের এই রাজ্যের ভূগর্ভস্থ জলাধারের প্রকৃতি।
আরও পড়ুন- বদলে গেল ভোটগণনার তারিখ! নতুন তারিখ কত হল, জেনে নিন
জলধারণ ব্যবস্থার ফারাক
এই ব্যাপারে আইআইটি গান্ধীনগরের বিক্রম সারাভাই চেয়ারের অধ্যাপক মিশ্র বলেন, 'দক্ষিণ ভারতে জলধারণের ব্যবস্থাটা একটু অন্যরকম। এই অঞ্চল খুবই পাথুরে। এখানকার জলাধারগুলোয় তাই খুব বেশি জল ধরে না। সেগুলো দ্রুত খালি হয়ে যায়। আবার নতুন করে জল ভরার দরকার হয়। এর অর্থ হল, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না-হলে, দক্ষিণ ভারতে ভূগর্ভস্থ জলের পরিমাণও কমতে শুরু করে। তুলনায় উত্তর ভারতের জলাধারগুলোর জল ধরে রাখার ক্ষমতা অনেক বেশি। এই কারণেই বিহার এবং উত্তরপ্রদেশ, যেখানে গত বছর কর্ণাটকের চেয়েও কম বৃষ্টি হয়েছে, সেখানে কিন্তু একইরকম জলসংকট দেখা যায়নি।