Advertisment

একুশের নির্বাচনে সব দলেরই লক্ষ্য সংখ্যালঘু-অনগ্রসর শ্রেণি, কেন?

বিধানসভা নির্বাচনে সব দলই চাইছে বঙ্গবাসীর মন জয়ে। তবে এবার অবশ্য নজরে সংখ্যালঘু এবং অনগ্রসর শ্রেণি।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
NULL

নজরে ওবিসি ভোট? অলঙ্করণ- পল্লবী দে

পশ্চিমবঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে সব দলই চাইছে বঙ্গবাসীর মন জয়ে। তবে এবার অবশ্য নজরে সংখ্যালঘু এবং অনগ্রসর শ্রেণি। বুধবার মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রকাশিত তৃণমূলের ইস্তেহারে মাহিষ্য, তামুলস, তিলিস-এর মতো পিছিয়ে পড়া শ্রেণির জন্য ওবিসি সংরক্ষণের উপর জোর দেওয়া হয়েছে। আবার একসিন আগেই বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি জে পি নাড্ডা একটি জনসভায় ঘোষণা করেছিলেন যে পশ্চিমবঙ্গে বিজেপি ক্ষমতায় এলে এই সকল সম্প্রদায়ের জন্য ওবিসি বিভাগে বিশেষ সংরক্ষণের ব্যবস্থা করবে।

Advertisment

ওবিসি ভোট

২০১৯ সালের লোকসভা নির্বাচনের পরিসংখ্যান বলছে বিশেষত দক্ষিণবঙ্গে অনগ্রসর এবং পিছিয়ে পড়া শ্রেণিদের আধিপত্যে এই সকল অঞ্চলগুলিতে বিজেপি-র বড় লাভের ইঙ্গিত দিয়েছে। একসময়ের তৃণমূলের শক্ত ঘাঁটিতে লোকসভা নির্বাচনেই ফাটল ধরিয়েছে বিজেপি। এসসি / এসটি ভোট যদি বিজেপিকে জঙ্গলমহল, উত্তর চব্বিশ পরগনা এবং নদিয়া জেলায় আরও ভাল ফলাফল পেতে সহায়তা করে, তবে ওবিসি ভোট বিজেপিকে পূর্ব ও পশ্চিম মেদিনীপুর, হুগলি এবং হাওড়ার মতো জেলাগুলিতে আসন জিততে সাহায্য করেছিল।
বিজেপি এখন এই ভোটগুলিকেই গুছিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছে। পিছিয়ে নেই তৃণমূলও। মমতা শিবিরও আশা করছে যে সংরক্ষণের প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট পুনরুদ্ধারের।

মমতা সরকারের ওবিসি নীতি

২০১১ সালে বাম শাসনের অবসান ঘটিয়ে প্রথমবারের জন্য ক্ষমতায় আসার এক বছর পর, ২০১২ সালে তৃণমূল সরকার পশ্চিমবঙ্গের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি (পরিষেবা ও শূন্যপদ সংরক্ষণ) বিল, ২০১২ পাস করে। যা ওবিসি বর্ণের জন্য সংরক্ষণের পথ সুগম করে । সিদ্দিকি ও সায়াদ বাদে সমস্ত মুসলিম সম্প্রদায়কে ওবিসি এ বা ওবিসি বি হিসাবে তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে। হিন্দুদের ক্ষেত্রে কাঁসারী, কাহার, মিদ্দে, কাপালী, কর্মকার, কুম্ভকার, কুর্মিস, মাঝি, মোদক, নাপিত, সূত্রধর, স্বর্ণকার, তেলি এবং কলুদের ওবিসির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করা হয়। পশ্চিমবঙ্গ সরকারের পিছিয়ে পড়া শ্রেণি কল্যাণ বিভাগের মতে, প্রায় ৩৮ লক্ষ ওবিসি শংসাপত্র জারি করা হয়েছে। সম্প্রতি সরকার দাবি করেছিল যে দুয়ারে সরকার কর্মসূচির আওতায় আরও কয়েক হাজারকে রাখা হয়েছে। মাহিষ্য (একটি প্রভাবশালী সম্প্রদায়), তোমার, তিলিস মতো গোষ্ঠীগুলিকে ওবিসি বিভাগ থেকে বাদ দেওয়া হয়েছিল কারণ বিশ্বাস করা হয় যে এই সম্প্রদায়গুলি সুবিধাভোগী এবং ইতিমধ্যে মূলধারার অংশ।

পশ্চিমবঙ্গের মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেছেন, তৃণমূলের ইস্তেহার প্রতিশ্রুতি ভোট ব্যাঙ্ক অর্জনের লক্ষ্যে নয়। তিনি বলেন, “মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় সর্বদা নিপীড়িতদের জন্য কিছু করতে আগ্রহী। তিনি তাদের জন্য খাদ্য, বাড়ি এবং স্বাস্থ্য সুরক্ষার আশ্বাস দিয়েছিলেন। এখন অনেকগুলি নতুন গোষ্ঠী একই দাবি করছে। আমরা এটি বিবেচনা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছি এবং তারা আমাদের ওবিসি তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হওয়ার যোগ্য কিনা তা আমাদের সরকার সিদ্ধান্ত নেবে। "

বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন যে বিজেপির প্রতিশ্রুতি "তৃণমূলের বিভাজনমূলক রাজনীতি"র মতো নয়। তিনি বলেন, "আমরা ইতিমধ্যে ঘোষণা দিয়েছিলাম যে মন্ডল কমিশন অনুসারে যারা রিজার্ভেশন পাওয়ার যোগ্য আমরা তা দিয়ে দেব তাঁদের। তা শোনার পরেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় মাহিষ্য এবং অন্যান্য গোষ্ঠী সম্পর্কে তাঁর ঘোষণা করেন ইস্তেহারে।”

ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস বাংলা এখন টেলিগ্রামে, পড়তে থাকুন

tmc bjp PM Narendra Modi Mamata Banerjee
Advertisment