রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থা জানিয়েছে যে, হিমবাহ এখন আর কার্যত সংরক্ষণ করা যাচ্ছে না। সংস্থার বার্ষিক প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে, গত এক দশকে সমুদ্রপৃষ্ঠের বার্ষিক গড় ৪.৬২ মিলিমিটার বেড়েছে। বিশ্বে হিমবাহগুলোর অনেকখানি গত বছর দ্রুতগতিতে গলে গিয়েছে। যার জেরে, বিশ্বব্যাপী সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা দুই দশক আগের তুলনায় দ্বিগুণ বেড়েছে। শুক্রবার পৃথিবী দিবসের আগে জলবায়ু প্রতিবেদনে রাষ্ট্রসংঘের সংস্থা এমনটাই জানিয়েছে।
আবহাওয়া সংস্থার কথা
রাষ্ট্রসংঘের বিশ্ব আবহাওয়া সংস্থার (ডব্লিউএমও) প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ২০১৫-২০২২ সাল, এই সাত বছর ছিল সবচেয়ে উষ্ণ। সেই দিকে থেকে রেকর্ডও করেছে। গত গ্রীষ্মে ইউরোপে যে তাপপ্রবাহ আঘাত হেনেছে, তাতে ১৫,০০০-এরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। শুধু তাই নয়, এই তীব্র গরমে কিছু ইউরোপীয় হিমবাহও আবহাওয়া সংস্থার ধারণার বাইরে গলে গিয়েছে।
গলেছে হিমবাহ
রিপোর্ট অনুযায়ী, কিছু হিমবাহ ২০২১ সালের অক্টোবর থেকে ২০২২ সালের অক্টোবরের মধ্যে গড়ে ১.৩ মিটার (৪.৩ ফুট) ঘনত্ব হারিয়েছে। ব্লিউএমও মহাসচিব পেটেরি তালাস এক সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, 'আমরা ইতিমধ্যে হিমবাহ গলে যাওয়ার খেলা এবং সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বৃদ্ধির খেলায় হেরে গিয়েছি। তাই এটা একটা খারাপ খবর।' এটি গ্রিনহাউস গ্যাসের উচ্চস্তরীয় নির্গমনের ফলে ঘটেছে। যা ইতিমধ্যেই নির্গত হয়েছে। আর এর ফলে, হাজার বছর ধরে জলের বৃদ্ধিও অব্যাহত থাকবে।
আরও পড়ুন- সুদানে ধুন্ধুমার সংঘর্ষ, আটকে ৩,০০০ ভারতীয়, কোনদিকে গড়াচ্ছে পরিস্থিতি?
রেকর্ড উচ্চ তাপমাত্রা
লা নিনার ফলে তাপমাত্রা শীতল হয়নি। এর জেরে গত আট বছরে তাপমাত্রার গড় রেকর্ড করেছে। ২০২১ সালে গ্রিনহাউস গ্যাসের ঘনত্ব সবচেয়ে বেড়েছে। কার্বন ডাই অক্সাইডের (CO2) ঘনত্ব ছিল বেশ বেশি। এছাড়াও বেড়েছে মিথেন এবং নাইট্রাস অক্সাইডের পরিমাণও। ২০২২ সালের পরিসংখ্যান বলছে, সেই সব গ্যাসের পরিমাণ আরও বেড়েছে। যার জেরে এই সময়ে মহাসাগরগুলোও ছিল উষ্ণ। সমুদ্রপৃষ্ঠের প্রায় ৫৮% তাপপ্রবাহের মুখোমুখি হয়েছে। এমনটাই জানিয়েছে রাষ্ট্রসংঘের আবহাওয়া সংস্থা। এই সংস্থার রিপোর্টের সারসংক্ষেপে বলা হয়েছে, 'গ্রিনহাউস গ্যাসের মাধ্যমে জলবায়ু ব্যবস্থায় আটকে থাকা শক্তির প্রায় ৯০% সাগরে চলে যায়। এতে উচ্চ তাপমাত্রা বৃদ্ধি হ্রাস পায় বটে। কিন্তু, সামুদ্রিক বাস্তুতন্ত্রের ওপর ঝুঁকি তৈরি হয়।'