Advertisment

Explained: চিতা তো আছেই, আর কোন বড় আকারের বন্য বিড়াল জঙ্গল দাপিয়ে বেড়ায়?

চিতা আর চিতাবাঘকে অনেকে গুলিয়ে ফেলেন। কিন্তু, এদের মধ্যে পার্থক্যটা চামড়ার দাগ দেখলেই স্পষ্ট হয়।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
cheetah

একটা সময় টিভির পরদায় ঠান্ডা পানীয়র বিজ্ঞাপনে বলে ওঠা 'চিতা ভি পিতা' হ্যায় কথাটা দর্শকমনে বেশ স্থায়ী হয়েছিল। এই দর্শকদের আবার অধিকাংশই ভারতীয়। কিন্তু, চিতা সেই ঠান্ডা পানীয় পিতা হ্যায় কি না, জানা না-থাকলেও, বনবিভাগের ইতিহাস বলছে, ভারতে চিতার বিলুপ্তি ঘটেছে বহু আগেই। আফ্রিকাতে অবশ্য চিতা ছিল, আছে। সেই চিতা-কে নাকি আবার আফ্রিকা থেকে ভারতে ফেরানো হয়েছে।

Advertisment

এটুকু পড়ে অনেকে হয়তো ভাবছেন, এতদিন তো ভারতে চিতাবাঘের কথা শোনা যেত। সেগুলো কি তাহলে চিতা না? এক্ষেত্রে উত্তরটা হচ্ছে, একদমই না। এই সব পশুদের গায়ের দাগ একটি ভালো করে দেখলেই সেটা স্পষ্ট হয়ে যায়। যদিও এই সবই হল বিড়াল প্রজাতির। কিন্তু, তাদের মধ্যে অনেকটাই পার্থক্য আছে। তার মধ্যে সাতটি বড় বিড়াল প্রজাতির পশু হল-

প্যানথেরা

এটি বড় বন্য বিড়ালদের একটা প্রজাতি। যা গর্জন করতে পারে। কিন্তু, গরগর আওয়াজটা করতে পারে না। প্রজাতির দিক থেকে প্যান্থেরা বড় বিড়াল যেমন সিংহ, চিতাবাঘ এবং জাগুয়ারের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সম্পর্কিত। সেই তুলনায় বাঘ এবং তুষার চিতার চেয়ে প্যান্থেরা একটু আলাদা। এর মধ্যে তুষার চিতাবাঘ আবার এই প্রজাতির বাকিদের থেকে একটু ব্যতিক্রমী। কারণ, সে গর্জন করতে পারে না।

বাঘ বা প্যানথেরা টাইগ্রিস

এর ওজন হয় ৭৫ থেকে ৩০০ কেজির মধ্যে। এই পশুও বিপন্ন প্রজাতির মধ্যে পড়ে। জিম করবেটের সেই 'সীমাহীন সাহস আর বিরাট হৃদয়ের ভদ্রলোক' নির্জনতা পছন্দ করে। অঞ্চলগতভাবেও বিড়াল প্রজাতির প্রাণীদের মধ্যে সবচেয়ে বড় এবং প্রথম প্রজন্মের প্যান্থেরার সদস্য। বনজ এই প্রাণী সাইবেরিয়ান তাইগা থেকে সুন্দরবন ব-দ্বীপ পর্যন্ত এলাকায় পাওয়া যায়। ভারত, বাংলাদেশ, মালয়েশিয়া এবং দক্ষিণ কোরিয়ার এটি জাতীয় প্রাণী। বাঘ ২০০৪ সালের অ্যানিম্যাল প্ল্যানেট গ্লোবাল অনলাইন পোলে কুকুরের চেয়েও বিশ্বের প্রিয় প্রাণীর মর্যাদা পেয়েছিল।

সিংহ বা প্যানথেরা লিও

ওজন ১০০ থেকে ২৫০ কেজি। বিপন্ন প্রজাতির পশুদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি বিপন্নর অন্যতম। আফ্রিকা এবং এশিয়ার দীর্ঘদিনের বাসিন্দা। বিড়াল প্রজাতির মধ্যে সবচেয়ে সামাজিক বিড়াল হল সিংহ। এরা দলে বাস করে। খোলা বন্য এলাকা পছন্দ করে। প্রাপ্তবয়স্ক পুরুষ সিংহদের বিশেষ কেশর থাকে। সিংহ মানব সংস্কৃতিতে সর্বাধিক স্বীকৃত প্রাণীর প্রতীক। সারনাথের অশোক স্তম্ভ, বাকিংহাম প্রাসাদের প্রধান প্রবেশদ্বার, ২০ শতকের ফক্স এবং এমজিএম লোগোতে সিংহই প্রতীক।

জাগুয়ার বা প্যানথেরা ওঙ্কা

এর ওজন ৫০ থেকে ১১০ কেজি। অতিবিপন্ন প্রজাতির পশুর অন্যতম। আমেরিকার বৃহত্তম বিড়াল প্রজাতির পশু জাগুয়ার সমস্ত বন্য বিড়ালের মধ্যে সবচেয়ে শক্তিশালী। এর কামড়ের শক্তি মারাত্মক। এরা সরাসরি শিকারের মাথার খুলিতে কামড় দেয়। মেলানিস্টিক (কালো) জাগুয়ারকে ব্ল্যাক প্যান্থার বলা হয়। মায়ান এবং অ্যাজটেক সভ্যতায় জাগুয়ার শক্তিশালী বোঝানোর প্রতীক ছিল।

আরও পড়ুন- বাগুইআটি কাণ্ডের রেশ? বিধাননগরের কমিশনারের পদ খোয়ালেন সুপ্রতিম সরকার

চিতাবাঘ বা প্যানথেরা পারডাস

এর ওজন ৩০ থেকে ৯০ কেজির মধ্যে। বিরল প্রজাতির মধ্যে পড়ে এই বন্য বিড়াল প্রজাতির প্রাণী। এরা দেখতে অনেকটা জাগুয়ারের মতই। জিম করবেট চিতাবাঘকে 'সব প্রাণীর মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর' বলে বর্ণনা করেছিলেন। এর 'চলাচলের ভঙ্গিমা অনুগ্রহ এবং রঙের সৌন্দর্য' তাক লাগানোর মতই। বড় বিড়ালের মধ্যে আফ্রিকা এবং এশিয়াজুড়ে সমস্ত উচ্চতায় বিভিন্ন জায়গায় চিতাবাঘ পাওয়া যায়। কালো জাগুয়ারের মতোই মেলানিস্টিক চিতাকে ব্ল্যাক প্যান্থার বলা হয়। আফ্রিকান সংস্কৃতিক একাংশ এই চিতাবাঘকে সিংহের চেয়েও ভালো শিকারী বলে মনে করে।

তুষার চিতা বা প্যানথেরা আনসিয়া

এর ওজন ২৫ থেকে ৫৫ কেজি। সংখ্যায় অত্যন্ত কম। ধূসর রঙের এই বিড়াল প্রজাতির প্রাণী পাহাড়ি অঞ্চলে, মধ্য ও দক্ষিণ এশিয়ায় তুষার অঞ্চলে বাস করে। এটি গর্জন করতে পারে না। বিড়ালদের মধ্যে এদের সবচেয়ে লম্বা লেজ রয়েছে। যা পাহাড়ের পাশে শিকার করার সময় ভারসাম্যের জন্য কাজে আসে। পাশাপাশি, শরীরের চারপাশে এই লেজ আবৃত করে রাখায় তা বিভিন্ন সময় উষ্ণতাও দেয়। তুষার চিতা লাদাখ এবং হিমাচল প্রদেশের রাষ্ট্রীয় প্রাণী।

Read full story in English

Cat animal forest
Advertisment