ভোটার নথিভুক্তিকরণ নির্দেশের বিরুদ্ধে সরব জম্মুবাসী। এই নির্দেশ ঘিরে চরম বিতর্ক দানা বেঁধেছে। এই বিতর্কের একদিকে বিজেপি। অন্যদিকে উপত্যকার অন্যান্য দলগুলো। ঘটনাটি হয়েছে যে গত ১২ অক্টোবর জম্মু প্রশাসন জেলায় একবছরেরও বেশি সময় ধরে বসবাসকারী লোকেদের বসবাসের শংসাপত্র দেবে না-বলে জানিয়েছে।
কেবলমাত্র ওই শংসাপত্র পেলেই জম্মুর ভোটার তালিকায় নাম তুলতে পারবেন বাসিন্দারা। প্রশাসনের এই নির্দেশ ঘিরে ব্যাপক হইচই শুরু হয়েছে। বিজেপি বাদে অন্যান্য দলগুলো প্রশাসনের এই নির্দেশের সমালোচনা শুরু করেছে। স্থানীয় মুসলিম বাসিন্দাদের অভিযোগ, বহিরাগতদের জম্মুবাসী হিসেবে দেখানোর জন্যই নতুন নির্দেশ জারি করেছে প্রশাসন।
মঙ্গলবার, জম্মুর জেলা প্রশাসক বা জেলা নির্বাচনী আধিকারিক আভিনি লাভাসা নির্দেশ জারি করেছেন যে জেলার সমস্ত মহকুমা শাসকদের আবাসিক শংসাপত্র দেওয়ার ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে। যাতে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে একটি এলাকায় বসবাস করছেন কিন্তু বসবাসের প্রমাণ নেই, এমন ব্যক্তিরা নাগরিক হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে পারে। জম্মু-কাশ্মীরের ভোটার তালিকা সংশোধনের জন্য এই নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন- চরমে কোন্দল! ‘সত্যিটা বলতে দেওয়া হয় না’, যোগীর বিরুদ্ধেই সরব বিজেপি সাংসদ
নির্বাচন কমিশনের নির্দেশিকা অনুযায়ী নথি যাচাইয়ের পরে শংসাপত্র দেওয়া যায়। নির্দেশিকা অনুযায়ী যে ভারতীয় নাগরিকদের কাছে একবছরের জন্য জল/বিদ্যুৎ/গ্যাস সংযোগ, আধার কার্ড, জাতীয়করণকৃত/তফসিলি ব্যাংর/পোস্ট অফিসের বর্তমান পাসবুক, ভারতীয় পাসপোর্ট, রাজস্ব বিভাগের জমির মালিকানা, কৃষকদের দলিল, নিবন্ধিত ভাড়া/ইজারা দলিল (ভাড়াটেদের ক্ষেত্রে), নিজের বাড়ির ক্ষেত্রে নিবন্ধিত বিক্রয় দলিল সহ রেকর্ড রয়েছে, তাদেরকেই যাচাইয়ের পরে এই শংসাপত্র দেওয়া যেতে পারে। এরপর নির্দেশ জারি করা হয় যে কিছু "যোগ্য" লোক ভোটার হিসেবে নাম নথিভুক্ত করতে পারছিলেন না। কারণ, তাঁদের নথির অভাব ছিল।
মঙ্গলবারের এই নতুন নির্দেশ কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলটিতে "বহিরাগতদের" ভোটার হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করার জন্যই দেওয়া হয়েছে বলে মনে করছেন জম্মু মুসলিম বাসিন্দারা। একই অভিযোগ, জম্মুর স্থানীয় রাজনৈতিক দলগুলোরও। তাদের অভিযোগ, কেন্দ্রীয় সরকার নতুন ভোটারদের অন্তর্ভুক্ত করে উপত্যকার জনবিন্যাস বদলে দিতে চায়। ২০১৯ সালে ৩৭০ ধারা বাতিলের সঙ্গেই জম্মু-কাশ্মীরে ভোটার তালিকায় নথিভুক্তকরণের নিয়ম বদলেছে। কেন্দ্রশাসিত এই অঞ্চলে জনপ্রতিনিধিত্ব আইন, ১৯৫০ লাগু হয়েছে।
৩৭০ ধারা বাতিলের পর ২০২১ সালের আগস্টে জম্মু-কাশ্মীরে ভোটার তালিকা সংশোধনের ঘোষণা করা হয়। সেই সময় জম্মু-কাশ্মীরের মুখ্য নির্বাচনী আধিকারিক হিরদেশ কুমার বলেছিলেন যে ২৫ লক্ষ নতুন ভোটার তালিকাভুক্ত হবে বলে প্রশাসন আশা করছে। সেই সময় কুমার জানিয়েছিলেন, যাঁরা জম্মু-কাশ্মীরে বসবাস করছে, প্রাপ্তবয়স্ক হয়ে গিয়েছে, এমন ব্যক্তিদের কথাই তিনি বলেছেন।
Read full story in English