তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক ইউটিউবে বিবিসির তথ্যচিত্র, ‘ইন্ডিয়া: দ্য মোদি কোয়েশ্চেন’-এর প্রথম পর্বটি ব্লক করার নির্দেশ জারি করেছে। শনিবার (২১ জানুয়ারি) বিশেষ সূত্রে একথা জানা গিয়েছে। সূত্রের খবর সোশ্যাল মিডিয়া প্ল্যাটফর্ম টুইটারকে ইউটিউবে ভিডিওর লিংক-সহ ৫০টিরও বেশি টুইট ব্লক করতে বলা হয়েছে। তথ্য ও সম্প্রচার সচিব শুক্রবার আইটি আইন, ২০২১-এর অধীনে জরুরি ক্ষমতা ব্যবহার করে এই নির্দেশ জারি করেছেন।
জরুরি ক্ষমতা কি?
আইটি আইন, ২০২১-এর ১৬ বিধি তথ্য-প্রযুক্তি (মধ্যস্থ নির্দেশিকা এবং ডিজিটাল মিডিয়া এথিক্স কোড) বিধিমালা, ২০২১ নামে পরিচিত। ২০২১ সালের ২৫ ফেব্রুয়ারি সরকারের তরফে জানানো হয়েছে যে এই বিধিমালা, 'জরুরি পরিস্থিতিতে তথ্য প্রকাশের বিরুদ্ধে সরকারকে ক্ষমতা দিয়েছে।' এই আইনে বলা হয়েছে যে, 'জরুরি ক্ষেত্রে সচিব এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয় যদি সন্তুষ্ট হয়। যদি মনে করে যে কোনও তথ্য প্রয়োজনীয়, সমীচীন এবং যৌক্তিক। যদি মনে করে যে কোনও তথ্য কমপিউটার ব্যবহার করে জনসাধারণের জানার জন্য প্রচার করা যায়, তবে সম্মতি দেবে সরকার।'
সরকারের ক্ষমতা
একইসঙ্গে জানানো হয়েছে, 'উলটোটা হলে কোনও ব্যক্তি, প্রকাশক বা মধ্যস্থতাকারীর তথ্য বা তার হোস্টিং নিয়ন্ত্রণকারীকে শুনানির সুযোগ না-দিয়ে সেই তথ্য প্রকাশ করা উচিত হবে কি না, তা বিবেচনা করে অন্তর্বর্তী ব্যবস্থা নেবে সরকার।' জাতীয় নিরাপত্তা এবং সরকারি নির্দেশ ঠিকমতো সম্প্রচারিত হল কি না, সেকথা মাথায় রেখে এই ধরনের নির্দিষ্ট কিছু ক্ষেত্রে জরুরি ক্ষমতার প্রয়োগ ঘটাতে পারে সরকার। সেই অনুযায়ী নির্দেশও দিতে পারে।
তথ্যচিত্রটি সম্পর্কে সরকার কী বলেছে?
তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রক বিবিসির নির্মিত তথ্যচিত্রটিকে একটি 'প্রচারের অংশ' বলে দাবি করেছে। এই ব্যাপারে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রকের বক্তব্য, বিবিসির প্রকাশিত ওই তথ্যচিত্রে সঠিক তথ্যের অভাব রয়েছে। ঔপনিবেশিক মানসিকতার প্রতিফলন ঘটিয়েছে তথ্যচিত্রটি। তথ্যচিত্রটি বিবিসি ভারতে প্রকাশ করেনি। তবে এটি কিছু সময়ের জন্য ইউটিউবে প্রকাশিত হয়েছিল।
আরও পড়ুন- ‘পাঠান ঘিরে অগ্নিগর্ভ অসম’, শাহরুখ ফোন করেছিলেন, ফাঁস করলেন মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত
সরকারি আধিকারিকদের ধারণা
সূত্রের খবর, বিদেশ, স্বরাষ্ট্র এবং তথ্য-সম্প্রচার-সহ বিভিন্ন মন্ত্রকের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা তথ্যচিত্রটি পরীক্ষা করেছেন। পরীক্ষার পর তাঁদের মনে হয়েছে, এই তথ্যচিত্র ভারতের সুপ্রিম কোর্টের কর্তৃত্ব, তার বিশ্বাসযোগ্যতা নিয়ে বিভ্রান্তি ছড়িয়েছে। বিভিন্ন ভারতীয় সম্প্রদায়ের মধ্যে বিভাজনের বীজ বপন করার চেষ্টা করেছে। ভারতে বিদেশি সরকারের কার্যকলাপ সম্পর্কে অপ্রমাণিত অভিযোগ করেছে। তথ্যচিত্রটি সামগ্রিকভাবে ভারতের সার্বভৌমত্ব এবং অখণ্ডতাকে ক্ষুণ্ন করেছে। বিদেশি দেশগুলোর সঙ্গে ভারতের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্কের পাশাপাশি দেশের অভ্যন্তরে জনশৃঙ্খলাতেও বিরূপ প্রভাব ফেলার চেষ্টা করেছে।
Read full story in English