কথা ছিল প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ১৩ জুলাই গোটাবায়া রাজাপক্ষ পদত্যাগ করবেন। কিন্তু, তিনি পদত্যাগ করার বদলে শ্রীলঙ্কার সেনাবাহিনীর বিমানে মালদ্বীপ পালিয়ে গেছেন। কথা ছিল প্রধানমন্ত্রী পদ থেকে রনিল বিক্রমসিংহেও পদত্যাগ করবেন। কিন্তু, তিনিও তা করেননি। গোটাবায়া পদত্যাগ করলে রনিল হতেন অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট।
বদলে, প্রেসিডেন্টের অবর্তমানে অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিয়েছেন রনিল বিক্রমসিংহে। শুধু নতুন দায়িত্ব গ্রহণই না। ' গো গোটা গো' আন্দোলনকারীদের বিরুদ্ধে দমন-পীড়ন চালাতে কার্ফু জারি করা হয়েছে। বিনা ওয়ারেন্টে গ্রেফতারের ক্ষমতা দেওয়া হয়েছে পুলিশ ও সেনাকে। দেশের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা শ্রীলঙ্কা রূপবাহিনী কর্পোরেশনের কার্যালয়েও মঙ্গলবার সন্ধ্যা থেকেই সেনা জওয়ানদের মোতায়েন করা হয়েছে।
সাংবিধানিকভাবে, এখন কী হতে চলেছে?
শ্রীলঙ্কার সংবিধানে নির্ধারিত উত্তরাধিকার আইন অনুসারে, যখন প্রেসিডেন্টের পদ খালি হয়ে যায়, তখন প্রধানমন্ত্রীকে অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নিতে হয়। যতক্ষণ না পার্লামেন্ট তার সদস্যদের মধ্যে থেকে একজন প্রার্থীকে প্রেসিডেন্ট নির্বাচন করে, ততক্ষণ প্রধানমন্ত্রীই অন্তর্বর্তী প্রেসিডেন্ট হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এবার পার্লামেন্টের স্পিকার জানিয়েছেন, নতুন প্রেসিডেন্ট ২০ জুলাই নির্বাচিত হবেন।
আরও পড়ুন- নতুন সংসদভবনের অশোক স্তম্ভেও বিতর্কের হাওয়া, ভবন-কথা জানেন?
এই নির্বাচন প্রেসিডেন্টের পদ শূন্য হওয়ার একমাসের মধ্যে হতে হবে। প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হতে প্রার্থীকে সংসদে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার প্রমাণ দিতে হবে। সম্প্রতি, রনিল বিক্রমসিংহে শ্রীলঙ্কাকে অর্থনৈতিক মন্দা থেকে বের করে আনতে চেষ্টা করছিলেন। সেই জন্য মে মাসের দ্বিতীয় সপ্তাহে প্রেসিডেন্ট গোটাবায়া রাজাপক্ষ তাঁকে প্রধানমন্ত্রী পদে নিযুক্ত করেন। কিন্তু, বিক্ষোভকারীরা রনিলকে রাজাপক্ষর 'বন্ধু' বলে অভিযোগ করেন। একইসঙ্গে রনিলের বিরুদ্ধে রাজাপক্ষকে বাঁচানোর চেষ্টার অভিযোগ তোলেন। বিক্ষোভকারীরা এ-ও অভিযোগ করেন যে রনিল বিক্রমসিংহে শ্রীলঙ্কার খাদ্য ও জ্বালানি সমস্যার সমাধানে ব্যর্থ হয়েছেন।
তাহলে কি বিক্রমসিংহেই গোটাবায়ার উত্তরসূরি হতে চলেছেন?
রনিল বিক্রমসিংহে ৯ জুলাই টুইট করেছিলেন যে তিনি সর্বদলীয় সরকার গঠনের জন্য ৯ জুলাই প্রেসিডেন্ট পদ থেকে ইস্তফা দেবেন। কিন্তু, তিনি মঙ্গলবার সন্ধ্যা পর্যন্ত কোনও ইস্তফা দেননি। শ্রীলঙ্কার সংবিধান অনুযায়ী, প্রধানমন্ত্রীর পদও যদিও ফাঁকা হয়ে যায়, তবে পার্লামেন্টের স্পিকার অস্থায়ী প্রেসিডেন্টের দায়িত্ব নেন। কিন্তু, বিক্রমসিংহে এখনও প্রধানমন্ত্রী। রাজাপক্ষ পদত্যাগ করলে তবে তিনি নতুন প্রেসিডেন্ট হবেন। আর, পার্লামেন্ট নতুন কাউকে প্রেসিডেন্ট না-করা পর্যন্ত তিনিই দায়িত্ব পালন করবেন। কিন্তু, রাজাপক্ষ এখনও পদত্যাগ করেননি।
Read full story in English