Advertisment

Explained: বিদেশে পাচার একের পর এক ভারতীয় পুরাকীর্তি! এই ব্যাপারে কী বলে আইন?

পুরাকীর্তি চুরির ঘটনায় উদ্বিগ্ন রাষ্ট্রসংঘও। কারণ, এটা যাদের পুরাকীর্তি, সেই দেশকে ঐতিহ্যগতভাবে দেউলিয়া করে দিচ্ছে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
Antiquities abroad

ইন্টারন্যাশনাল কনসোর্টিয়াম অফ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্টস অ্যান্ড ফাইন্যান্স আনকভারডের সঙ্গে যৌথভাবে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেস একটি তদন্ত চালিয়েছে। যাতে দেখা গেছে, মেট্রোপলিটান মিউজিয়াম অফ আর্ট, নিউইয়র্কের ক্যাটালগে অন্তত ৭৭টি পুরাকীর্তি আছে, যার সঙ্গে যুক্ত আছে সুভাষ কাপুরের নাম। এই সুভাষ কাপুর আসলে একজন আন্তর্জাতিক স্মাগলার। পুরাকীর্তি পাচারের দায়ে বর্তমানে তামিলনাড়ুর জেলে বন্দি এই স্মাগলার। আদালতের নির্দেশে ১০ বছরের জেল হয়েছে সুভাষ কাপুরের।

Advertisment

প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন কোনগুলো?

১৯৭৬ সালের ১ এপ্রিল প্রত্নবস্তু এবং শিল্প কোষাগার আইন লাগু হয়েছিল। এই আইন তৈরি হয়েছিল ১৯৭২ সালে। যে কোনও প্রাচীন মুদ্রা, ভাস্কর্য, চিত্রকলা, এপিগ্রাফ বা শিল্প কিংবা কারুশিল্প, নিবন্ধ, গুহা- এই সবই প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন। যা শতাধিক বছর পুরোনো এমন বিজ্ঞান, শিল্প, কারুশিল্প, সাহিত্য, ধর্ম, প্রথা, নৈতিকতা এবং রাজনৈতিক বস্তু ঐতিহাসিক নিদর্শনের তালিকায় রয়েছে। আর, পাণ্ডুলিপির ক্ষেত্রে কমপক্ষে তা ৭৫ বছরের পুরোনো হতে হবে।

আন্তর্জাতিক নিয়মাবলি কী বলে?

সাংস্কৃতিক সম্পত্তির অবৈধ আমদানি, রফতানি এবং মালিকানা হস্তান্তর নিষিদ্ধ করার উপায় সম্পর্কে ইউনেস্কো ১৯৭০ সালের সম্মেলনে 'প্রত্নতাত্ত্বিক, প্রাগৈতিহাসিক, ইতিহাস, সাহিত্য, শিল্প বা বিজ্ঞানের জন্য গুরুত্বপূর্ণ সাংস্কৃতিক সম্পত্তি'কে দেশগুলোর সম্পত্তি হিসেবে সংজ্ঞায়িত করেছে। ইউনেস্কোর ঘোষণায় আরও বলা হয়েছে যে, 'সাংস্কৃতিক সম্পত্তির অবৈধ আমদানি, রফতানি এবং মালিকানা হস্তান্তর এই জাতীয় সম্পত্তির উত্স দেশগুলোর সাংস্কৃতিক ঐতিহ্যগত দারিদ্র্যের প্রধান কারণ। যাকে রুখতে আন্তর্জাতিক সহযোগিতা প্রয়োজন। আর, এই আন্তর্জাতিক সহযোগিতার মাধ্যমে প্রতিটি দেশের সাংস্কৃতিক সম্পত্তি রক্ষা করা সম্ভব।

রাষ্ট্রসংঘের উদ্বেগ

এরপর ২,০০০ সালে রাষ্ট্রসংঘের সাধারণ পরিষদ এবং ২০১৫ এবং ২০১৬ সালে রাষ্ট্রসংঘের নিরাপত্তা পরিষদ বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে। ২০১৯ সালে ইন্টারপোলের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে যে ইউনেস্কো কনভেনশনের প্রায় ৫০ বছর পরে, 'সাংস্কৃতিক নিদর্শন এবং সম্পর্কিত জিনিসপত্রের বিশ্বজুড়ে পাচার দুঃখজনক হলেও ক্রমশ বাড়ছে।'

আরও পড়ুন- মূর্তিচোর সুভাষ কাপুর! যার পাচার করা ঐতিহাসিক নিদর্শন শোভা পাচ্ছে বিদেশের মিউজিয়ামে

ভারতীয় আইন কী বলে?

ভারতে, কেন্দ্রীয় সরকারি তালিকা অনুযায়ী ৬৭টি জিনিস পুরাতত্ত্বের আওতায় পড়ে। এর মধ্যে রাজ্যের হিসেবে ১২টি জিনিস আর, সংবিধানের সমকালীন বিচারে ৪০টি জিনিস ঐতিহ্যের তালিকায় রয়েছে। স্বাধীনতার আগে ঠিক হয়েছিল, 'লাইসেন্স ছাড়া কোনও পুরাকীর্তি রফতানি করা যাবে না।' আর, তা নিশ্চিত করার জন্য ১৯৪৭ সালের এপ্রিল মাসে একটি পুরাকীর্তি (রফতানি নিয়ন্ত্রণ) আইন পাস করানো হয়েছিল।

শেষে পাকাপাকি আইন

১৯৫৮ সালে, প্রাচীন স্মৃতিস্তম্ভ এবং প্রত্নতাত্ত্বিক স্থান সংক্রান্ত আইন রচিত হয়েছিল। তারপর ১৯৭১ সালে, পার্লামেন্টে চম্বা থেকে একটি ব্রোঞ্জের মূর্তি এবং অন্যান্য স্থান থেকে কিছু গুরুত্বপূর্ণ বেলেপাথরের মূর্তি চুরির ঘটনায় হইচই পড়ে। ইউনেস্কো কনভেনশনের সঙ্গেই সরকার ১৮৭২ সালে পুরাকীর্তি এবং শিল্প কোষাগার আইন (এএটিএ) তৈরি করে। যা ১৯৭৬ সালের ১ এপ্রিল কার্যকরী হয়।

Unesco heritage Museum
Advertisment