Advertisment

কী এই ১৩১ নং অনুচ্ছেদ, যার বলে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে আদালতে গেছে কেরালা?

এই অনুচ্ছেদের আওতায় রাজ্য-রাজ্য অথবা রাজ্য-কেন্দ্র দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের মৌলিক এক্তিয়ার থাকবে।

author-image
IE Bangla Web Desk
New Update
kerala cm vijayan

কেরালার মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন

মঙ্গলবার, ১৪ জানুয়ারি, নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হলো কেরালা সরকার।

Advertisment

মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের নেতৃত্বাধীন কেরালা সরকারই এই নতুন আইনের বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ জানানো দেশের প্রথম সরকার। আদালতে সংবিধানের ১৩১ নং অনুচ্ছেদের অধীনে একটি আবেদন দাখিল করে কেরালা সরকার দাবি করেছে, এই আইন অসাংবিধানিক ঘোষিত হোক, কারণ এটি সংবিধানের ১৪ (আইনের চোখে সমতা), ২১ (জীবন এবং ব্যক্তিস্বাধীনতার সুরক্ষা) এবং ২৫ (বিবেকের স্বাধীনতা এবং ধর্মের অবাধ অনুসরণ ও প্রচার) নং অনুচ্ছেদের বিরোধী।

সংবিধানের ১৩১ নং অনুচ্ছেদ কী?

এই অনুচ্ছেদের আওতায় রাজ্য-রাজ্য অথবা রাজ্য-কেন্দ্র দ্বন্দ্বের ক্ষেত্রে সুপ্রিম কোর্টের মৌলিক এক্তিয়ার থাকবে। এর অর্থ হলো, মামলার প্রাথমিক শুনানিই সুপ্রিম কোর্টে হবে, কোনো নিম্নতর আদালতের হাত ঘুরে তা শীর্ষ আদালতে আসবে না।

মৌলিক এক্তিয়ারের কথা ৩২ নং অনুচ্ছেদেও বলা হয়েছে (যার অধীনে শীর্ষ আদালতের ক্ষমতা রয়েছে আদেশপত্র ইত্যাদি জারি করার), ১৩১ নং অনুচ্ছেদে বর্ণিত এক্তিয়ার হলো একচেটিয়া, অর্থাৎ একমাত্র সুপ্রিম কোর্টেরই এই অধিকার রয়েছে। অন্যদিকে ২২৬ নং অনুচ্ছেদের অধীনে যে কোনো হাইকোর্টেরও আদেশপত্র, নির্দেশিকা ইত্যাদি জারি করার অধিকার আছে।

কী ধরনের বিতর্ক পড়ে ১৩১ অনুচ্ছেদের আওতায়?

১৯৭৭ সালের 'রাজস্থান সরকার বনাম ভারত সরকার' মামলায় সুপ্রিম কোর্টের রায় ছিল যে ১৩১ নং অনুচ্ছেদের অধীনে কোনো আবেদন গৃহীত হওয়ার আগে আইনের অধিকার এবং ব্যাপ্তি নির্ধারণ করা প্রয়োজন, এবং "স্রেফ দুই সরকারের মধ্যে বচসা এই অনুচ্ছেদের আওতায় পড়ে না", যদিও এই মামলায় নিজের এক্তিয়ার বহাল রাখে সুপ্রিম কোর্ট।

একই রকম ভাবে ১৯৭৮ সালের 'কর্ণাটক সরকার বনাম ভারত সরকার' মামলা, যার বিষয় ছিল কোনো রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর আচরণ নিয়ে কেন্দ্রীয় সরকারের তদন্তের নির্দেশ দেওয়ার অধিকার, ১৩১ নং অনুচ্ছেদের এক্তিয়ার বহাল রাখা হয়।

বর্তমান মামলায় কেন্দ্রের প্রণীত আইনকে চ্যালেঞ্জ জানিয়েছে কেরালা সরকার। এই ধরনের মামলা যে সমর্থনীয় নয়, তা ২০১১ সালে ঘোষনা করে 'মধ্যপ্রদেশ বনাম ভারত সরকার' মামলায় গঠিত সুপ্রিম কোর্টের দুই বিচারকের একটি বেঞ্চ।

এর পর ২০১৪ সালে 'ঝাড়খণ্ড সরকার বনাম বিহার সরকার ও অন্যান্য' মামলায় আরেকটি দুই-সদস্যের বেঞ্চ পূর্বতন ঘোষণার সঙ্গে সহমত পোষণ না করে বিষয়টি আরও বড় বেঞ্চের কাছে পাঠিয়ে দেয়। এই রায়ের ভিত্তিতেই আবেদন দাখিল করেছে কেরালা।

Advertisment