Advertisment

Explained: পঞ্চায়েত নির্বাচনে চলছে ধারাবাহিক রাজনৈতিক হিংসা, কারণটা কী?

মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট নজিরবিহীনভাবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে।

author-image
Chinmoy Bhattacharjee
New Update
Panchayat Polls

মঙ্গলবার (১৩ জুন) ভারতীয় সেকুলার ফ্রন্ট (আইএসএফ) এবং তৃণমূল কংগ্রেস (টিএমসি) কর্মীদের মধ্যে ভাঙড়ে সংঘর্ষ হয়েছে। সেই সংঘর্ষের পর পুলিশকে লক্ষ্য করে বোমা ও পাথর ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় নেতা-কর্মীদের বিরুদ্ধে। এই বোমা ও পাথর ছোড়ার জন্য অবশ্য আইএসএফ এবং টিএমসি, একে অপরের দিকে আঙুল তুলেছে। গত ৯ জুন রাজ্যে পঞ্চায়েত নির্বাচনের ঘোষণা হয়েছে। তারপরে এটাই রাজনৈতিক হিংসার সর্বশেষ সংযোজন। যে হিংসার জেরে মঙ্গলবার কলকাতা হাইকোর্ট নজিরবিহীনভাবে এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রীয় বাহিনী মোতায়েনের নির্দেশ দিয়েছে।

Advertisment

নির্বাচনের দিন ঘোষণা
আগামী ৮ জুলাই পশ্চিমবঙ্গে একদফায় পঞ্চায়েত নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনের জন্য মনোনয়ন দাখিলের সময়সীমা ধার্য হয়েছে পাঁচ দিন। এমনটাই জানিয়েছে রাজ্য নির্বাচন কমিশন। রাজ্যে বিভিন্ন পঞ্চায়েতে ৬০ হাজার প্রার্থীর মনোনয়ন জমা দেওয়ার জন্য মাত্র পাঁচ দিন সময়। এই সিদ্ধান্তের স্বভাবতই তীব্র সমালোচনা করেছেন বিরোধীরা। আর, তাঁদের আশঙ্কাই সত্যি হয়েছে। নির্বাচনের তারিখ ঘোষণার পর থেকে মনোনয়ন জমাকে ঘিরে বিভিন্ন স্থানে ব্যাপক সংঘর্ষ হয়েছে। যাতে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া।

কীসের নির্বাচন?
রাজ্যের পঞ্চায়েতিরাজ ব্যবস্থার তিনটি স্তর রয়েছে: গ্রাম পঞ্চায়েত (গ্রাম স্তর), মণ্ডল পরিষদ বা ব্লক সমিতি বা পঞ্চায়েত সমিতি (ব্লক স্তর) এবং জেলা পরিষদ (জেলা স্তর)। পশ্চিমবঙ্গে ৩,৩১৭টি গ্রাম পঞ্চায়েত এবং মোট ৬৩,২৮৩টি পঞ্চায়েত রয়েছে। গ্রাম পঞ্চায়েত নির্বাচনে কেন্দ্রের সংখ্যা ৫৮,৫৯৪টি। এই সব আসনেই নির্বাচন হবে।

দলগত অবস্থান
দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়, বজবজ এবং উত্তর ২৪ পরগনার মিনাখাঁ থেকে বিক্ষিপ্ত হিংসার খবর পাওয়া গিয়েছে। বিরোধী বিজেপি, বাম এবং কংগ্রেস অভিযোগ করেছে, তাঁদের প্রার্থীদের তৃণমূল কংগ্রেস মনোনয়ন জমা দিতে বাধা দিয়েছে। টিএমসি অবশ্য দাবি করেছে, তারা নির্দোষ। দলের শীর্ষ নেতৃত্ব পঞ্চায়েতস্তরের নেতা-কর্মীদের হিংসামুক্ত নির্বাচন নিশ্চিত করার নির্দেশ দিয়েছেন।

কোথায় হিংসা?
তারপরও মুর্শিদাবাদ, বীরভূম, পূর্ব মেদিনীপুর, পূর্ব বর্ধমান, কোচবিহার, উত্তর ও দক্ষিণ ২৪ পরগনা থেকে হিংসার খবর এসেছে। কয়েকদিন আগে, দক্ষিণ ২৪ পরগনার ভাঙড়ে এক ব্লক উন্নয়ন অফিসে (বিডিও অফিস) বিরোধী প্রার্থীদেরকে মনোনয়নপত্রের ফর্ম দেওয়ার অভিযোগে বিদ্যুৎ ঘোষ নামে বিডিও অফিসের এক কর্মীকে লাঞ্ছিত করার অভিযোগ উঠেছে জনাকয়েক ব্যক্তির বিরুদ্ধে। মুর্শিদাবাদ জেলায় আবার তৃণমূল কংগ্রেসের এক স্থানীয় নেতা বন্দুক-সহ ধরা পড়েছেন।

আরও পড়ুন- পঞ্চায়েত ভোটে কেন্দ্রীয় বাহিনী? যুগান্তকারী অবস্থান হাইকোর্টের!

কেন এত হিংসা?
রাজ্যের বেশিরভাগ অঞ্চল গ্রাম। পশ্চিমবঙ্গের অর্থনীতি কৃষিভিত্তিক। ফলে রাজ্যের কর্মসংস্থানের মূল উৎস হল কৃষিকাজ ও তার সঙ্গে যুক্ত জীবন এবং জীবিকা। এ যেমন গেল আর্থিক পরিস্থিতির কথা। তেমনই পশ্চিমবঙ্গের রাজনীতিকে নিয়ন্ত্রণ করতে গেলেও গ্রামাঞ্চলের ওপর আধিপত্য জরুরি। সেকথা মাথায় রেখে পঞ্চায়েত দখলে রাখতে ঝাঁপিয়ে পড়ে সব দলই। মুখে যাই বলুক, দখলের প্রয়োজনে হিংসার আশ্রয় নিতেও রাজনৈতিক দলগুলো দ্বিধা করে না।

tmc bjp panchayat election
Advertisment