What is an Exit Poll: দীর্ঘমেয়াদী সাত দফার ভোটপর্ব শেষ হতে চলেছে রবিবার। রবিবার সন্ধে থেকেই উঠে যাচ্ছে একজিট পোল সম্পর্কিত নিষেধাজ্ঞা। ভোটের ফল প্রকাশিত হবে ২৩ মে। একজিট পোল কী এবং তার কতটা যথার্থ হতে পারে সে সম্পর্কে এক নজরে দেখে নেওয়া যাক।
একজিট পোল কী এবং তা কীভাবে করা হয়ে থাকে?
ভোটাররা ভোট দিয়ে বেরোনোর সঙ্গে সঙ্গে তাঁদের নিয়ে একজিট পোল করা হয়। কোন দল সরকার গঠন করতে পারে তার একটা হাওয়া বোঝা যায় একজিট পোলের মাধ্যমে। ওপিনয়ন পোলের সময়ে যেমন ভোটারকে জিজ্ঞাসা করা হয় তিনি কাকে ভোট দেওয়ার কথা ভাবছেন, একজিট পোল তার থেকে আলাদা। এ ক্ষেত্রে তাঁকে জিজ্ঞাসা করা হয়, তিনি কাকে ভোট দিলেন। বেশ কিছু সংস্থা একজিট পোল পরিচালনা করে থাকে।
নির্বাচন কমিশন একজিট পোলে নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে কেন?
নির্ধারিত সময়সীমার মধ্যে ওপিনিয়ন পোল এবং একজিট পোলের উপর নিষেধাজ্ঞা চেয়ে ২০০৪ সালে জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের সংশোধনীর প্রস্তাব আনে নির্বাচন কমিশন। এ ব্যাপারে তারা আইন মন্ত্রকের দ্বারস্থ হয়। কমিশনের সঙ্গে একমত ছিল ৬টি জাতীয় দল এবং ১৮টি রাজ্যভিত্তিক দল। এই প্রস্তান আংশিকভাবে গৃহীত হয় ২০১০ সালের ফেব্রুয়ারি মাসে। জনপ্রতিনিধিত্ব আইনে ১২৬ (এ) ধারা সংযোজনের মাধ্যমে কেবলমাত্র একজিট পোলের উপর বিধিনিষেধ জারি করা হয়।
পরিচালনাকারী সংস্থা যদি পক্ষপাতদুষ্ট হয় সেক্ষেত্রে ওপিনিয়ন পোল বা একজিট পোল বিতর্কের মুখে পড়ে। সমালোচকদের মতে, এ ধরনের সার্ভে প্রশ্নের ধরন, প্রশ্নের ভাষা এবং ঠিক কোনসময়ে প্রশ্ন করা হচ্ছে, এসবের দ্বারা প্রভাবিত হতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলি প্রায়শই অভিযোগ করে অনেক ওপিনিয়ন পোল এবং একজিট পোলই উদ্দেশ্যমূলক এবং প্রতিপক্ষের দ্বারা স্পনসর্ড। তাঁদের বক্তব্য এর ফলে জনসাধারণের সাধারণ দৃষ্টিভঙ্গি প্রতিফলিত হওয়ার বদলে নির্দিষ্ট কোনও নির্বাচনে ভোটারদের পছন্দের উপর এ ধরনের পোল কুপ্রভাব ফেলতে পারে।
একজিট পোলের উপর বিধিনিষেধ কখন থেকে প্রত্যাহৃত হচ্ছে?
একজিট পোলের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা প্রত্যাহার করা হচ্ছে রবিবার সন্ধে সাড়ে ৬টায়, লোকসভা নির্বাচনের সপ্তম তথা শেষ দফা সম্পন্ন হওয়ার পর।
ফলাফল সম্পর্কিত পূর্বানুমানের নিয়ম সম্পর্কে কী বলছে নির্বাচন কমিশন?
নিষিদ্ধ সময়কালের মধ্যে ভোটের ফল সম্পর্কিত কোনও একজিট পোলের প্রোগ্রাম বা নিবন্ধ সম্প্রচার বা প্রকাশ করতে ইলেক্ট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াকে নিষেধ করেছে কমিশন।
বলা হয়েছে, ভোটের ফল নিয়ে কোনও ধরনের ভবিষ্যদ্বাণী নিষিদ্ধ সময়কালের মধ্যে করা যাবে না। জ্যোতিষ হোক কিংবা ট্যারট কার্ড রিডার অথবা রাজনৈতিক বিশ্লেষক বা অন্য় কেউই এ ধরনের পূর্বানুমান করতে পারবেন না। এ ধরনের কাজ জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ (এ) ধারানুসারে নিষিদ্ধ।
এর আগের নির্দেশে নির্বাচন কমিশন জানিয়েছিল ১৯ মে-র সন্ধে পর্যন্ত একজিট পোল নিষিদ্ধ। বলা হয়েছিল, ভারতের নির্বাচন কমিশন ১৯৫১ সালের জনপ্রতিনিধিত্ব আইনের ১২৬ ধারার ১ নং উপধারা বলে ১১ এপ্রিল, ২০১৯ বৃহস্পতিবার সকাল ৭টা থেকে ১৯ মে, ২০১৯ রবিবার সন্ধে সাড়ে ৬টা পর্যন্ত প্রিন্ট বা ইলেক্ট্রনিক কোনও ধরনের মাধ্যমে বা অন্য কোনও ভাবে একজিট পোলের প্রকাশ নিষিদ্ধ ঘোষণা করছে।
একজিট পোল কতটা বিশ্বাসযোগ্য?
ভারতে একজিট পোল অনেকক্ষেত্রেই নির্ভরযোগ্য নয় বলে প্রমাণিত হয়েছে। বেশ কিছু ক্ষেত্রে নির্বাচনের ফল সম্পর্কে ভুল ভবিষ্যদ্বাণীর উদাহরণ রয়েছে। ২০০৪ সালে বিজেপি নেতৃত্বাধীন এনডিএ কোয়ালিশন জিতবে বলে সম্পূর্ণ ভুল ভবিষ্যদ্বাণী করা হয়েছিল, আবার ২০০৯ সালে কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ-র আসন নিয়েও ভুল করা হয়েছিল একজিট পোলে।